তিন বছরের এই শিশুকে নিয়েই হয়রান পরিবার।— নিজস্ব চিত্র।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই জানিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলেছিল আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল। কিছুই হয়নি দাবি করে ফেরত পাঠায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। শনিবার আরামবাগে ফিরে সেই মহকুমা হাসপাতালেই অস্ত্রোপচারে শিশুর পেট থেকে বেরোল মরচে ধরা লোহার টুকরো।
ঘটনার সূত্রপাত ন’দিন আগে। খানাকুলের ঘোষপুর গ্রামের অপর্ণা দাস নামে বছর তিনেকের ওই শিশুটির পেটে পেরেক ঢুকে যায়। তা টেনে বের করে ফেলেছিলেন পরিবারের লোকজনই। কিন্তু তার পরেও ব্যাথা না কমায় আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুর আলট্রাসোনোগ্রাফি ও এক্স রে করে জানান, পেটে লোহার টুকরো রয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু সেখানে অপর্ণার পরিবারকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, কিছুই হয়নি ওই শিশুর। বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু পেটের ব্যাথা কমেনি। ক্ষতও শুকোয়নি। শনিবার ফের আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। ওই দিন সেখানকার চিকিৎসকেরাই অস্ত্রোপচার করে শিশুটির পেট থেকে একাধিক মরচে ধরা লোহার টুকরো বার করেন। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় বলেন, “আমরা মহকুমা হাসপাতালে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি এবং এক্সরে করে ওই শিশুর পেটের ভিতর লোহার টুকরো রয়েছে, বুঝতে পারি। আমাদের বিশেষজ্ঞ শল্যচিকিৎসক না থাকায় কোনও ঝুঁকি না নিয়ে শিশুটিকে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠাই। ওরা পরিষ্কারভাবে কিছু নেই লিখে রোগীকে ফেরত পাঠিয়েছে। আমরা ওই হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে সন্দিহান। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।” অপর্ণার বাবা সুকুমার দাসের বক্তব্য, “বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েকে নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যালে যাই। সেখানে কোনও পরীক্ষা করা হয়নি। মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। কিন্তু পেটের যন্ত্রনায় সে কুঁকড়ে যাচ্ছিল। শনিবার সকালেই ফের আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করি। ডাক্তারবাবুরা অস্ত্রোপচার করে লোহার কুচো বের করছেন।” তাঁর ক্ষোভ, আরামবাগ হাসপাতালেই এই চিকিৎসা করা যেত প্রথমে। অযথা হয়রানির শিকার হতে হল তাঁদের।
বর্ধমান মেডিক্যালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “আমাদের যা পরিকাঠামো, তাতে ওই অবস্থায় কেউ এলে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। পেটে লোহার টুকরো থাকলে এক্স-রে করলেই তা ধরে পড়ে যায়। তবুও ওই দিন কী হয়েছিল, কেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy