ছবি: সামসুল হুদা।
ঘোষণা হয়েছিল আগেই। তবু আজও মডেল হাসপাতালের স্বীকৃতি পেল না ক্যানিং হাসপাতাল।
২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি ক্যানিং স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠে এক অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালেকে মডেল হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তোলা হবে। ১০০ থেকে বাড়িয়ে শয্যাসংখ্যা ১৫০ করা হবে। হাসপাতালে ব্লাড ব্যঙ্ক-সহ অন্যান্য পরিষেবা চালু করার কথাও বলা হয়েছিল ওই অনুষ্ঠানে। কিন্তু প্রায় এক বছর কাটতে চললেও হাসপাতালের কোনওরকম উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে রোগীদের। অন্যান্য পরিষেবা তো দূরের কথা, যা অবস্থা তাতে শয্যার অভাবে রোগীদের এই ঠান্ডায় শুতে হচ্ছে মেঝেতে।
ক্যানিং ও বাসন্তী সেতু তৈরির পর থেকে মহকুমার বিভিন্ন এলাকা তথা সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের ভিড় বেড়েছে এই হাসপাতালে। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের শয্যা বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন। ব্লাড ব্যাঙ্ক না থাকায় রোগীদের রক্তের প্রয়োজন হলে তাঁদের রেফার করে দেওয়া হচ্ছে কলকাতার হাসপাতালে। অথবা রোগীর বাড়ির লোকজনকে কলকাতায় ছুটতে হচ্ছে রক্তের খোঁজে। নেই সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা। ফলে সমস্যার শেষ নেই রোগীদের। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, আর কতদিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে রোগীদের।
এ দিকে শীত পড়তেই মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ জন শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু শয্যার অভাবে অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও তাদের পরিবারের ঠাঁই হয়েছে মেঝেয়। বাসন্তীর মিনু মণ্ডল এবং ক্যানিংয়ের জয়ন্তী সাহা বলেন, “কয়েকদিন ধরে আমাদের বাচ্চারা ডায়েরিয়াতে ভুগছে। হাসপাতালে চিকিত্সা করাতে এসেছিলাম। হাসপাতাল থেকে বলা হল বেড নেই মেঝেতে শুতে হবে। আর কোথায় যাব? তাই ঠান্ডায় কষ্ট হলেও বাধ্য হয়ে এখানে মেঝেতেই থাকতে হচ্ছে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নতুন ঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। এমনকী নতুন বেডও এসে গিয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্ক ও সিটি স্ক্যানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সমস্ত যন্ত্রাংশ এসে গিয়েছে। শুধু হাসপাতালের কর্মী ও পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যার কারণে কোনওটাই শুরু করা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে পরিদর্শনে এসেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত এই সমস্ত পরিষেবাগুলি চালুর কথা বলেছিলেন।
হাসপাতালে অতিরিক্ত শয্যা চালু করার জন্য প্রয়োজন আরও ৪ জন নার্সের। এখনও পর্যন্ত ৩ জন নার্স নিয়োগ করা হয়েছে। ৩ জন নার্স দিয়ে ৫০টি শয্যা চালু করা সম্ভব নয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার বলেন, “হাসপাতালের ভাটিক্যান এক্সটেনশন, ব্লাড ব্যঙ্ক, সিটি স্ক্যান চালু হওয়ার পথে। সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy