Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

নেই রোগীকল্যাণ সমিতি, বাড়ছে ক্ষোভ

সুপার বলছেন হাসপাতালের বেডে বিছানার চাদর দেওয়া হয়। আর বিজেপির সমর্থকদের দাবি, তাঁদের কাছে খবর আছে রামপুরহাট জেলা হাসপাতালে শয্যায় রোগীরা বিছানায় চাদর পায় না। মঙ্গলবার সকালে রামপুরহাট জেলা হাসপাতালে বিজেপির দখলবাটি অঞ্চল কমিটি হাসপাতাল সুপারের কাছে বিভিন্ন অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে ১৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেয়।

লিফ্ট বিকল। সিঁড়ি দিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে রোগীকে। ছবি: অনির্বাণ সেন

লিফ্ট বিকল। সিঁড়ি দিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে রোগীকে। ছবি: অনির্বাণ সেন

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৪ ০৩:০৫
Share: Save:

সুপার বলছেন হাসপাতালের বেডে বিছানার চাদর দেওয়া হয়। আর বিজেপির সমর্থকদের দাবি, তাঁদের কাছে খবর আছে রামপুরহাট জেলা হাসপাতালে শয্যায় রোগীরা বিছানায় চাদর পায় না। মঙ্গলবার সকালে রামপুরহাট জেলা হাসপাতালে বিজেপির দখলবাটি অঞ্চল কমিটি হাসপাতাল সুপারের কাছে বিভিন্ন অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে ১৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেয়।

বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা এই হাসপাতালের পরিষেবার মান নিয়ে যে অভাব-অভিযোগ তুলেছেন তা অনেকাংশে সত্যি। সকালে গিয়ে দেখা গেল, আজিমা খাতুন নামে মাড়গ্রাম থানার মোতায়েন গ্রাম থেকে কোল্ড অপারেশনের জন্য ভর্তি করানো হয়। পরিবারের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ে এসেছিলেন। কিন্তু এসে শোনেন এখানে কোল্ড অপারেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে চিকিৎসেকার অভাবে। তাঁরা এখন কোথায় যাবেন, তা সুপারের কাছে জানতে চান। সুপার উত্তর দেন, “অ্যানাস্থেটিস্ট না থাকলে কী করব।” পুরুষ ও মহিলা বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, অনেক শয্যাতে চাদর নেই। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের লিফ্ট খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা জমে রয়েছে। নিকাশি নালাও বেহাল।

হাসপাতালের এমন অব্যবস্থা দেখে এ দিন বিক্ষোভকারী এক বিজেপি সমর্থক হাসপাতাল সুপারকে লক্ষ করে বলে উঠলেন, ‘আমার সঙ্গে চলুন ওয়ার্ডে। অনেক জায়গায় বিছানার চাদর তো নেয়ই, উপরন্তু সোমবার রাতে ভর্তি করার পর থেকেও মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক ওই রোগীকে দেখতে যায়নি।” স্মারকলিপি দিতে আসা বিজেপির জেলা সহসভাপতি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “এটাই যদি মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত জেলা হাসপাতালের চিত্র হয়, এর পরেও এখানে হবে মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল হবে? এটাই আবার স্বাস্থ্য জেলা? আবার এখানেই গড়ে উঠবে মেডিক্যাল কলেজ?”

নষ্ট হয়ে গিয়েছে শয্যা।

জেলা হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, স্বাস্থ্য জেলা থেকে যে ন্যূনতম পরিষবা পাওয়ার কথা, তা এই হাসপাতাল থেকে মিলছে না বলে এলাকার বাসিন্দা থেকে একানে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে রোগী দেখার সময় জরুরি বিভাগ থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বেশিরভাগ চিকিৎসকের সঙ্গে হয় কোনও ওষুধের দোকানের দালাল, কিংবা বেসরকারি প্যাথলজি সেন্টারের দালাল বা কর্মচারী থাকছে। ওদেরই নির্দেশ মতো চিকিৎসকেরা ওষুধ দোকান বা কোনও কিছু পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। হাসপাতালের বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করতে বাধ্য করছেন। এ দিন রোগীদের এই সব অভিযোগের কথা হাসপাতাল সুপার সুবোধকুমার মণ্ডলের কাছে তুলে ধরেন বিজেপি নেতারা। সঙ্গে সঙ্গে সুপার হাসপাতালের এক কর্মীকে নির্দেশ দিলেন, ভর্তি থাকা প্রত্যেক রোগীকে বিছানার চাদর যেন অবশ্যই দেওয়া হয়। স্টোর কিপারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অবিলম্বে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন হাসপাতাল সুপার।

হাসপাতাল সুপার সুবোধবাবু নিজেই বলেন, “মাস খানেক আগে হাসপাতালের দায়িত্ব নেওয়ার সময় নানান অব্যবস্থা লক্ষ্য করেছি। ধীরে ধীরে সব কিছু ঠিক করার ইচ্ছে। হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য আমরা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে পরিকল্পনা পাঠিয়েছি। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে চিঠি পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটি হওয়ায় টাকা পেতে অসুবিধা হচ্ছে।” তবে কবে থেকে অ্যানাস্থেটিস্ট আসবে তার সদুত্তর মেলেনি হাসপাতাল সুপারের কাছ থেকে। তিনি শুধু বলেন, “হাসপাতালে এই মুহূর্তে কোনও রোগীকল্যাণ সমিতি নেই। নতুন রোগী কল্যাণ সমিতি গঠন করে হাসপাতালে যে সব সমস্যা আছে ওই কমিটিতে সেগুলি আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি হাসপাতালের নার্স, চিকিৎসক, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের যে অভাব আছে তা পূরণ করারও চেষ্টা করব।”

অন্য বিষয়গুলি:

growing anger Patient Welfare Association rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy