Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
জলাতঙ্কের ভয়

আতঙ্কে অভয়-বার্তা চিকিত্‌সকদের

নতুন করে কাউকে আর জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়া যাবে না বলে বুধবার জানিয়েছেন বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু সেনগুপ্ত। পাশাপাশি তিনি জানান, যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রতিষেধকের একটি বা দু’টি ডোজ নিয়েছেন, তাঁরা যেন ওষুধের চারটি ডোজের পুরো কোর্স শেষ করেন।

প্রতিষেধক নিতে ভিড় হাসপাতালে।—নিজস্ব চিত্র।

প্রতিষেধক নিতে ভিড় হাসপাতালে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৬
Share: Save:

নতুন করে কাউকে আর জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়া যাবে না বলে বুধবার জানিয়েছেন বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু সেনগুপ্ত। পাশাপাশি তিনি জানান, যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রতিষেধকের একটি বা দু’টি ডোজ নিয়েছেন, তাঁরা যেন ওষুধের চারটি ডোজের পুরো কোর্স শেষ করেন। কিন্তু জলাতঙ্ক হয়ে না থাকলেও এই প্রতিষেধক নেওয়ার ফলে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে কিনা, তা নিয়েও সংশয় আছে অনেকের মনে।

বিভ্রান্তি এবং তার জেরে আতঙ্কে ব্যতিব্যস্ত সন্দেশখালির শীতলিয়া গ্রাম। সচেতনতা বাড়াতে বদ্ধপরিকর প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। গ্রামবাসীকে বোঝানোর কাজ জোরকদমে চলছে।

জলাতঙ্কে গ্রামের একটি গরু মারা গিয়েছিল বলে রটিয়ে দেন স্থানীয় এক হাতুড়ে। গরুর ময়না-তদন্ত ছাড়া কী ভাবে তিনি এমন কথা জানালেন, তার সমালোচনা করেছেন চিকিত্‌সকেরা। কিন্তু রটনার জেরেই যে কুকুরটি ওই গরুকে কামড়েছিল, তাকে পিটিয়ে মারে জনতা। গ্রামে মাস তিনেক আগে পুজোর যে প্রসাদ হয়েছিল দুধ থেকে, সেই দুধ খেয়েও জলাতঙ্ক ছড়াবে না তো, প্রশ্ন উঠতে থাকে গ্রামের মানুষের মনে। খুলনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নিতে ভিড় করতে থাকেন সকলে। গত ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে প্রতিষেধক নেওয়া। কিন্তু এত দিন সে কথা জেলায় জানানোর দরকার মনে করেননি বিএমওএইচ পীযূষ মণ্ডল। পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে দেখে ১৭ জানুয়ারি জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের জানান তিনি। ওই দিন থেকেই পুলিশি নিরাপত্তা বসানো হয় হাসপাতালে। কিন্তু প্রতিদিনই শ’য়ে শ’য়ে মানুষ এসে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে দু’মাসের শিশু, অন্তঃসত্ত্বা, বৃদ্ধ কেউই বাদ নেই। তাঁদের বোঝানো যাচ্ছে না, জলাতঙ্কে আক্রান্ত গরুর দুধ থেকে পায়েস, সিন্নি হয়ে থাকলেও তা খেয়ে রোগ ছড়ায় না। তা ছাড়া, গরুটির জলাতঙ্ক আদৌ হয়েছিল কিনা, তা-ও নিশ্চিত নয়।

বুধবার হাসপাতালে আসেন সাংসদ ইদ্রিস আলি, জেলা উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, বিডিও, স্থানীয় ওসি। চিকিত্‌সকদের একটি দলও ঘুরে গিয়েছেন। তাঁরা মানুষকে বোঝান, এ ভাবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। সুদীপ্তবাবু বলেন, “বিড়াল-কুকুর কামড়ালে তাদের দাঁতে লেগে থাকা লালা যদি মানুষের রক্তের সঙ্গে মেশে, একমাত্র তখনই জলাতঙ্কের আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে প্রতিষেধক নেওয়া জরুরি। কিন্তু গ্রামের মানুষ যে ভাবে গরুর দুধ থেকে তৈরি খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা করছেন, তা অমূলক।”

গ্রামের মানুষের দাবি, পীযূষবাবু শুরুতে এ সব তাঁদের বলেননি। যে কারণেই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বিষয়টি জেলায় আগে জানালে হয় তো কর্তারা এসে প্রকৃত তথ্য বোঝাতে পারতেন মানুষকে। তা হলে এত জন এক সঙ্গে বিভ্রান্ত হতেন না। পীযূষবাবু অবশ্য এ দিন দাবি করেছেন, শুরু দিকে তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা করেছেন মানুষ। কিন্তু তিনি কেন ৯ জানুয়ারি থেকে প্রতিষেধক নেওয়া শুরু হতেই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তাদের জানালেন না, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। সে দিকটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

অন্য বিষয়গুলি:

sandeshkhali rabies hydrophobia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy