সাংবাদিকদের মুখোমুখি আপ নেতা যোগেন্দ্র যাদব। শনিবার। পিটিআই-য়ের ছবি।
এ যেন প্রাক্ হোলি রং মাখানো। ঠিকঠাক বলতে গেলে রং নয়, কালি মাখানো। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন আম আদমি পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা যোগেন্দ্র যাদব। হঠাৎই পিছন থেকে এসে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে চেঁচিয়ে তাঁর মুখে কালি মাখিয়ে দিলেন এক ব্যক্তি। অনেকটা যেন হোলিতে রং মাখানোর মতো করেই। আর তার সঙ্গেই আরও এক বার প্রকাশ্যে এল আপের অসহিষ্ণুতার রাজনীতি।
শনিবার যন্তর মন্তরের সামনে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বছর আঠাশের সাগর ভাণ্ডারী আপেরই সক্রিয় কর্মী। ঘটনার সময় আপের টুপি ও ব্যাজ পরা অবস্থাতেই দেখা যায় তাঁকে। তিনি ওই কাণ্ড ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গেই দলের বাকি কর্মী-সমর্থকেরা খেপে গিয়ে হামলা করেন তাঁর উপর। মারধরে আহত হন সাগর। ভিড় থেকে বার করে এনে তাঁকে নিকটবর্তী থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লির উত্তরে শালিমার বাগের বাসিন্দা সাগর ভাণ্ডারী নিজেও আপের কর্মী। দিল্লিতে আপের অফিসে নিয়মিতই দেখা যায় তাঁকে। ধরা পড়ার পর পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর আসল উদ্দেশ্য ছিল আপ-প্রধান অরবিন্দ কেজরীবালের মুখে কালি মাখানো। কেজরীবাল দিল্লিতে না থাকায় যোগেন্দ্র যাদবকেই লক্ষ্য করেন তিনি। তবে তিনি কেন যে হঠাৎ এই কাণ্ড করলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর যোগেন্দ্র যাদব বলেন, “আমি জানি না লোকটা কে। তবে কোনও বড় কাজের জন্য পা বাড়ালে এ ধরনের ঘটনার জন্যও তৈরি থাকতে হবে। এ বার তো না হয় পিছন থেকে হামলা হল আমার ওপর, এর পর সামনাসামনিই হামলা সামলাতে হতে পারে।” সাগর ভাণ্ডারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতেও রাজি হননি যোগেন্দ্র। তিনি বলেন, “এই কালি নিয়ে আমি একটুও লজ্জিত নই। এটাই আশা করব, যিনিই এই কাজটা করে থাকুন, তাঁর সুবুদ্ধি হোক। আমি দেখতে পাইনি ওই ব্যক্তিকে। জানিও না কী ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। সব না জেনেশুনে কাউকেই দোষারোপ করব না আমি।”
ঘটনার পরে স্বাভাবিক ভাবেই জলঘোলা শুরু হয়েছে আপের অন্দরে। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক নেতা। অরবিন্দ কেজরীবাল বলেন, “সততার পথে হাঁটলে এ রকম অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়।” আপ নেতা শাজিয়া লিমি অবশ্য এই ঘটনার পিছনে বিজেপি-কে দায়ী করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “এ সব জঘন্য বিষয়
চলতেই থাকছে। বিজেপি কর্মীদের কাছে আমি অনুরোধ করছি, তাঁরা যাতে এ ধরনের আচরণ না করেন।” দিল্লির বিজেপি প্রধান হর্ষ বর্ধন অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আসল তদন্ত পুলিশই করবে। কিন্তু আজকের ঘটনা আপের মিথ্যার রাজনীতিরই প্রতিফলন।”
পরে যোগেন্দ্র যাদব টুইট করেন, “কয়েক দশকের দুর্নীতি আর ক্ষয়ের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে ছোট্ট একটা দল। এ সব তো হবেই। আর এই ঘটনা হামলাকারীর ভীরুতার পরিচয়। আপের সমর্থকদের এ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy