Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বাণিজ্যের পথ আরও মসৃণ করে তুলতে চান মোদী ও ওবামা

বাণিজ্যে বসতে বারাক। সেঞ্চুরিতে থামতে চান না মোদীও। ভারত ও আমেরিকার মোট বাণিজ্যের পরিমাণ এখন ১০ হাজার কোটি বা ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কিন্তু সেখানেই যে তাঁরা থামতে চান না, আজ স্পষ্ট করে দিলেন বারাক ওবামা ও নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্পষ্ট ঘোষণা, “আমার গত ভারত সফরের পর থেকে দু’দেশের বাণিজ্য ৬০ শতাংশ বেড়েছে। মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার। আমরা আরও বেশি বাণিজ্য করতে চাই।”

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২১
Share: Save:

বাণিজ্যে বসতে বারাক। সেঞ্চুরিতে থামতে চান না মোদীও।

ভারত ও আমেরিকার মোট বাণিজ্যের পরিমাণ এখন ১০ হাজার কোটি বা ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কিন্তু সেখানেই যে তাঁরা থামতে চান না, আজ স্পষ্ট করে দিলেন বারাক ওবামা ও নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্পষ্ট ঘোষণা, “আমার গত ভারত সফরের পর থেকে দু’দেশের বাণিজ্য ৬০ শতাংশ বেড়েছে। মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার। আমরা আরও বেশি বাণিজ্য করতে চাই।”

দু’দেশের বাণিজ্যিক লেনদেন আরও মসৃণ করতে আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে, দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি এবং সামাজিক সুরক্ষা চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হবে। তার কারণ ভারতের কর আইন, জমির ব্যবহার, প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, মেধা-স্বত্ব আইন, ২৪ ঘন্টা বিদ্যুতের জোগান নিয়ে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি হলে সেই উদ্বেগ অনেকটাই কাটানো যাবে। উল্টোদিকে ভারত থেকে যে-সব পেশাদার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করতে যাচ্ছেন, তাঁদের উপর সামাজিক সুরক্ষা কর চাপানো ও ভিসার জটিলতা কাটাতে চায় নয়াদিল্লি। সামাজিক সুরক্ষা চুক্তি বা ‘টোটালাইজেশন এগ্রিমেন্ট’ হলে এক দেশের পেশাদারদের অন্য দেশে কাজ করতে গেলে সামাজিক সুরক্ষার জন্য দু’বার কর দিতে হবে না।

আজ দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এ বিষয়ে আলোচনার পরে মোদী নিজে ওবামার সঙ্গে একান্তে চায়ের আড্ডায় এবং হায়দরাবাদ হাউসের উঠোনে হাঁটতে হাঁটতে এই প্রসঙ্গ তুলেছেন। তারপরেই এ বিষয়ে নতুন করে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে মোদী ঘোষণা করেন, “আমাদের সম্পর্ক মজবুত করতে চাই জোরালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক। দু’দেশেরই আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়ছে। ব্যবসার পরিবেশ উন্নত হচ্ছে। আমরা দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে আলোচনা নতুন করে শুরু করব। সামাজিক সুরক্ষা চুক্তি নিয়েও কথা হবে। আমেরিকায় কর্মরত হাজার হাজার ভারতীয় পেশাদারের জন্য এটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।”

সোমবার ভারত-মার্কিন সিইও ফোরামে বক্তৃতা দেবেন ওবামা ও মোদী। ওবামার সফরের ঠিক আগে নতুন করে এই ফোরাম তৈরি হয়েছে। ভারতের দিক থেকে এখন থেকে রতন টাটার বদলে নেতৃত্ব দেবেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি। আমেরিকার তরফে নেতৃত্ব দেবেন ডেভিড এম কোট। ভারতের ১৭ জন প্রথম সারির শিল্পপতি ও কর্পোরেট কর্তা এই ফোরামে রয়েছেন। এই ফোরামেই দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির কাঠামো তৈরির কাজটি হবে।

কিন্তু কতখানি সহজ হবে এই কাজটি?

শিল্পমহল মনে করছে, যথেষ্ট কঠিন। ২০০৯ থেকে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। মোদী চাইছেন, মার্কিন সংস্থাগুলি এ দেশে এসে কারখানা তৈরি করুক। তাঁর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পেরও মূল সুর সেটাই। কিন্তু ভোডাফোনের মতো পুরনো ব্যবসায়িক লেনদেনে কর চাপানোর বিষয়ে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। মনমোহন সরকারের আমলে এই আইন তৈরি হয়েছিল। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বারবার বলেছেন, ওই আইন প্রয়োগ করা হবে না। কিন্তু খাতায়-কলমে আইন রয়েছে বলে মুখের কথায় সকলে বিশ্বাস করতে চাইছেন না। জমির ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিনিষেধ, শ্রম আইন সম্পর্কেও মার্কিনদের আপত্তি রয়েছে। ভারতীয় শিল্পপতিদের মতো একইধরনের সুযোগ-সুবিধা চাইছেন তাঁরা।

মোদীর আমলে লাল ফিতের ফাঁস কাটানোর নানা রকমের চেষ্টা শুরু হয়েছে। মোদীর এই প্রচেষ্টাকে আজ ওবামা স্বাগত জানিয়েছেন। বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির জন্য দরজা খুলে দেওয়ার মতো বেশ কিছু আর্থিক সংস্কার কার্যকর করতে অর্ডিন্যান্স এনেছে মোদী সরকার। মার্কিন বাণিজ্য মহল চাইছে পাকাপাকি আইন। মার্কিন-ভারত বাণিজ্য পরিষদের কার্যনির্বাহী সভানেত্রী ডায়ান ফ্যারেল জানিয়েছেন, “মার্কিন সংস্থাগুলি অবশ্যই চাইছে এই সব অর্ডিন্যান্স খুব শীঘ্রই আইনে পরিণত হবে।” ফ্যারেলের বক্তব্য, সবাই চাইছে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে দ্রুত সমঝোতা হোক।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy