লোকসভা ভোটের পর কেন্দ্রে সরকার গঠনের চাবিকাঠি তাঁর হাতে থাকবে কি না, তা সময়ই বলবে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডে সরকারের প্রাণভোমরা এখনই নিজের কব্জায় এনেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিল্লির ক্ষমতা-দখলের লড়াই শেষ হওয়ার পর, এ রাজ্যে সরকারের অস্তিত্ব অনেকটা নির্ভর করবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উপরই।
সম্প্রতি, সরকার পক্ষের তিন বিধায়ককে তৃণমূল নেত্রী নিজের দলে টেনে নেওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) এবং কংগ্রেস জোট সরকারের নেতারা। হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন দিলেও, মুখ্যমন্ত্রীর উপর অসন্তুষ্ট সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বন্ধু তিরকি, চামরা লিণ্ডারা। মন্ত্রিত্ব বা সরকারি কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ না-পাওয়ায়, বিভিন্ন সময়ে দু’জনেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ফলাফল ভালো হলে, ভবিষ্যতে হেমন্তের সরকারের প্রতি বন্ধুদের সমর্থন বজায় থাকবে কি না, তা নিয়ে তা-ই জল্পনা তুঙ্গে।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী চন্দ্রশেখর (দদাই) দুবেও গত কাল কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, জগন্নাথপুরের নির্দল বিধায়ক গীতা কোড়া, জারমুণ্ডির নির্দল বিধায়ক হরিনারায়ণ রাই, খুঁটির তোরপার বিক্ষুব্ধ জেএমএম বিধায়ক পলুস সুরিনকেও দলে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। সিংভূম আসনে লোকসভা সাংসদ তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোড়ার স্ত্রী গীতা। তবে আজ তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলে যোগ দেবেন না।
চন্দ্রশেখরকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তই। কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রীর ওই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিল। তার জেরে দু’টি দলকে নিয়েই ক্ষোভ রয়েছে দদাইয়ের। আজ তিনি বলেন, “অনেক আগেই তৃণমূলে যোগ দেওয়া উচিত ছিল। ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের দু’টি দলই দুর্নীতিগ্রস্ত।” এই পরিস্থিতিতে হেমন্ত সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করতে তিনি এক পা এগিয়েই রয়েছেন।
গত বছর জুলাইয়ে রাজ্যের ৪৩ জন বিধায়কের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে জেএমএম-কংগ্রেস। ৮২ সদস্যের বিধানসভায় সরকার গড়তে প্রয়োজন ৪২ জন বিধায়কের সমর্থন। সরকার পক্ষের তিন বিধায়ক এখন তৃণমূলের সদস্য।
ঝাড়খণ্ডে সরকার পক্ষের আরও একজন বিধায়ক যদি তৃণমূলে যোগ দেন, সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন মমতাই। কারণ, বর্তমানে বিধানসভায় বিরোধী বিধায়ক রয়েছেন ৩৯ জন। সরকারের দিক থেকে চার জন বিধায়ক সরে গেলে, সে দিকেও বিধায়ক শক্তি হবে ৩৯। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ গড়তে পারে তৃণমূলই।
তবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বার বারই জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা ঝাড়খণ্ডে লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়েই গুরুত্ব দিচ্ছেন।
ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে আজ কলকাতায় ‘নবান্ন’তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেন বন্ধু তিরকি, চামরা লিণ্ডা, দদাই দুবে। দলীয় সূত্রের খবর, সেখানে ঠিক হয়েছে অন্না হাজারে, মিঠুন চক্রবর্তী, জামা মসজিদের ইমামকে সঙ্গে নিয়ে মমতা ঝাড়খণ্ডে সভা করবেন।
এ রাজ্যে তৃণমূলের আহ্বায়ক দিলীপ চট্টোপাধ্যায় জানান, দু’-তিন দিনের মধ্যেই রাজ্যের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy