ক্ষোভ প্রকাশ কেরল হাইকোর্টের। ফাইল চিত্র।
‘যেন ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দিলেই হল’— একটি বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় ক্ষোভপ্রকাশ করে এ কথাই বলল কেরালা হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিয়ের উপর থেকে আস্থা উঠে যাচ্ছে নতুন প্রজন্মের। লিভ-ইনের দিকে ঝুঁকছেন সকলে। এতে অচিরেই সমাজের ভুল-ঠিক নৈতিক বোধ ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা কোর্টের।
এক ব্যক্তির বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে আদালত জানায়, কোনও কিছু ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার এই সংস্কৃতি নিন্দনীয়। বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাক এবং বিচারপতি সোফি টমাসের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘এখনকার দিনে, তরুণ প্রজন্ম মনে করে বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি খারাপ। বিয়ে না করে স্বাধীন জীবনযাপন করা যায়। তাতে কোনও বাধাবিপত্তির মুখে পড়তে হয় না, কোনও দায়িত্বও নিতে হয় না। আগে মনে করা হত, স্ত্রী বা ওয়াইফ হল ‘ওয়াইস ইনভেস্টমেন্ট ফর এভার’। এখন বলা হয় ‘ওরি ইনভাইটেড ফর এভার’।’’
৫১ বছর বয়সি যে ব্যক্তির বিবাহবিচ্ছেদের মামলার প্রেক্ষিতে আদালত এই কথা জানিয়েছে, সেটি এ রকম— কেরলের আলাপুঝার পরিবারটি দীর্ঘদিন হল সৌদি আরবে থাকত। ২০০৯ সালে বিয়ে হয়। মামলার আবেদনকারী ব্যক্তির ২০১৭ সাল থেকে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি হয়। ২০১৮ সালে তিনি বিয়ে ভাঙতে চেয়ে পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু সন্তানদের মুখ চেয়ে স্ত্রী ওই ব্যক্তির সঙ্গে থাকতে চান বলে জানান। তাঁদের তিনটি মেয়ে রয়েছে। পরিবার আদালত মামলা খারিজ করে দেয়। এর পর স্ত্রী অত্যাচার করেন অভিযোগ জানিয়ে ওই ব্যক্তি কেরালা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কেরালা হাই কোর্ট জানিয়েছে, খ্রিস্টান বিয়ের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ আইন ১৮৬৯ অনুযায়ী স্ত্রীর কোনও অপরাধ প্রমাণ করতে পারেননি ওই ব্যক্তি। এমনকি ওই ব্যক্তির মা-ও পুত্রবধূর সমর্থনে কথা বলেছেন। তিনিও চান ছেলে-বৌ একসঙ্গে থাকুক। মামলা খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।
পাশাপাশি, আদালত জানিয়েছে, এক কালে কেরলে পারিবারিক বন্ধন, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক সুষ্ঠু ভাবে বজায় রাখাকে অবশ্যকর্তব্য বলে মনে করা হত। সেই সব ভুলে গিয়ে বর্তমানে তুচ্ছ কারণসমূহ, ধৈর্যহীনতা ও স্বার্থপরতার জন্য মানুষ নিজের সংসার ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছেন। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে পরকীয়ার প্রবণতাও।সংসারের সাধারণ কথা কাটাকাটি বা হঠাৎ করে অনুভূতির রূঢ় বহিঃপ্রকাশকে বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হিসাবে দেখানো খুব একটা সঠিক পদক্ষেপ নয়, জানিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy