যোগী আদিত্যনাথ ও অখিলেশ যাদব ফাইল চিত্র
উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েতের জেলা সভাপতি নির্বাচন হবে ৩ জুলাই। ২০২২-এর বিধানসভা ভোটের আগে এটাই শেষ শক্তি পরীক্ষার সুযোগ যোগী আদিত্যনাথের সামনে।
সম্প্রতি রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে এর জন্য রীতিমতো জবাবদিহি করতে হয়েছে যোগীকে। কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কা সামলানোর ক্ষেত্রে যোগী প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়েও দলের অন্দরের ক্ষোভ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এ দিকে একটু একটু করে তৎপরতা বাড়াচ্ছে প্রধান বিরোধী দল, অখিলেশ সিংহ যাদবের এসপি। এই পরিস্থিতিতে আর বিলম্ব না-করে ঘুরে দাঁড়াতে চান যোগী। ফরমান জারি করেছেন, প্রত্যেক মন্ত্রীকে ব্লক স্তরে গিয়ে মানুষের কছে পৌঁছতে হবে। রাজ্যের একটি ব্লকও যেন বাদ না থাকে। যিনি যে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেখানে গিয়ে মানুষের ক্ষোভ, সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনতে হবে।
গত দেড় বছরে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়েছে যোগীর নেতৃত্ব। তবু নরেন্দ্র মোদী তাঁকে সরাতে পারেননি। বরং আগামী বিধানসভা ভোটে দল যোগীর নেতৃত্বেই লড়বে বলে জানিয়ে দিতে হয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। এর কারণ, উত্তরপ্রদেশে এখনও যোগীর জনপ্রিয়তা এবং প্রভাব যথেষ্ট। মোদী তাঁর ঘনিষ্ঠ, গুজরাতের প্রাক্তন আমলা এ কে শর্মাকে উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী করতে চাইছেন। তা নিয়ে যথেষ্ট চাপও দিল্লির বৈঠকে দেওয়া হয়েছে যোগীকে। কিন্তু সেই চাপ কাটিয়ে এখনও শর্মার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তি আটকে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আপাতত নিজের টিমকে যোগী নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে জনসংযোগ বাড়াতে হবে। খাদ্যের গণবণ্টন ব্যবস্থা, কোভিড মোকাবিলা সংক্রান্ত সরঞ্জামের জোগান, প্রাথমিক এবং গোষ্ঠী স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সরকারের অন্যান্য উন্নয়ন কর্মসূচির কী হাল, প্রতি ব্লকে তা খতিয়ে দেখতে হবে সরেজমিনে। বিশেষ করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী ২৭ জুন সব বিজেপি কর্মীকে জেলা বুথগুলিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রেডিয়ো অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’ শুনতে হবে। সূত্রের খবর, সে দিন উত্তরপ্রদেশের গ্রামবাসীদের জন্য বিশেষ বার্তা দিতে পারেন মোদী।
অন্য দিকে গ্রাম পঞ্চায়েতে আশাতীত ভাল ফল করার পর কিছুটা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে অখিলেশের শিবিরে। কংগ্রেস এবং বিএসপি দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে। আজই বিএসপি থেকে সাসপেন্ড হওয়া পাঁচ জন-সহ মায়াবতী শিবিরের মোট ন’জন বিধায়ক অখিলেশের সঙ্গে দেখা করে বৈঠক করেছেন বলে খবর। শীঘ্রই তাঁরা এসপি-তে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে। এতে অখিলেশের দলিত ভোটব্যাঙ্ক কিছুটা হলেও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
মাত্র ১৮ জন বিধায়ক নিয়ে ৪০৩ আসনের বিধানসভায় আগে থেকেই টিমটিম করছিল মায়াবতীর বিএসপি। গত অক্টোবরে তাঁদের পাঁচ জনকে মায়াবতী সাসপেন্ড করেন ‘প্রকৃত কোনও কারণ ছাড়াই’। দলের অন্দরের সূত্র বলছে, দলনেত্রীর কৌশল মেনে ভোটে বিজেপিকে সুবিধা করে দেননি বলেই ওই পাঁচ জনের উপরে খাঁড়ার ঘা নেমে এসেছে। তাঁদেরই এক জন, সুষমা পটেল সাউ আজ অখিলেশের সঙ্গে দেখা করার পরে জানিয়েছেন, তাঁরা পরিবর্ত রাজনীতির খোঁজ করছেন। অখিলেশের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁদের এসপি-তে যোগদান এখন সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy