আমদাবাদ ছেড়ে যাচ্ছেন ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকরা। ছবি: রয়টার্স।
গুজরাতের বিধানসভা ভোটের সময়ই অভিযোগ উঠেছিল, যতই নরেন্দ্র মোদীর ‘গুজরাত মডেল’-এর ঢাক পেটানো হোক, রাজ্যে চাকরি নেই। অল্পেশ ঠাকুর তখনই দাবি তুলেছিলেন, গুজরাতের ভূমিপুত্রদের জন্য ৮৫ শতাংশ পদ ছেড়ে দিতে হবে।
এ বার গুজরাতের সবরকণ্ঠায় শিশুধর্ষণের অপরাধে এক বিহারি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে বিহার-উত্তরপ্রদেশের শ্রমিকদের উপর হামলায় প্রশ্ন উঠেছে, এর পিছনে কি অন্য বিদ্বেষ রয়েছে? উত্তর ও পূর্ব ভারতের শ্রমিকরা গুজরাতিদের চাকরিতে ভাগ বসাচ্ছেন— এমন ধারণা থেকেই কি তাদের উপরে হামলা? বিতর্কটা উস্কে দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। তাঁর দাবি, জিএসটি, নোট বাতিল, ভুল শিল্পনীতির জেরে কল-কারখানা বন্ধ হচ্ছে বলেই শ্রমিকদের তাড়ানো হচ্ছে। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ বিজয় রূপাণীর সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘গুজরাতে বেকারির হার সব থেকে কম। মাত্র ০.৯ শতাংশ। যেখানে জাতীয় গড় ৫ শতাংশ।’’
কিন্তু রাজ্যের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০১৪-১৬ থেকে গুজরাতে ২৩,৮০৬ কারখানা বন্ধ হয়েছে। ফলে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১২.৫৭ লক্ষ কর্মী। গত বছরের হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যের এমপ্লয়মেন্ট ব্যুরোতে ৭ লক্ষ শিক্ষিত বেকার নাম লিখিয়েছেন। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত আমদাবাদের একটি এনজিও-র আধিকারিক বলেন, ‘‘গুজরাতের সমস্যাটা বেকারির নয়। যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের অভাবের। স্নাতক, স্নাতকোত্তর ছেলেরাও ইলেকট্রিসিয়ান, রাজমিস্ত্রি, ছুতোরের কাজ খুঁজছে।’’
কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, বিজেপি আমলে চাষিদের দূরবস্থাও এই পরিস্থিতির অন্যতম কারণ। গুজরাত সরকার গরিব চাষিদের জমিতে সেচের জল পৌঁছে দিতে পারেনি। ফলে ফসল উৎপাদন, চাষ থেকে আয়— দুইই কমেছে। ফলে চাষিদের গ্রাম ছেড়ে শহরে আসতে হচ্ছে। আর কাজের হাহাকার বাড়ছে। সেই ক্ষোভের মুখে, অল্পেশের দাবি মেনে গুজরাত সরকারও বেসরকারি ক্ষেত্রে ৮৫ শতাংশ চাকরি ভূমিপুত্রদের জন্য বেঁধে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু বাস্তব হল, বেসরকারি ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশের বেশি চাকরিই গুজরাতিদের দখলে। ফলে ভূমিপুত্রেরা ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের জন্য কাজ হারাচ্ছেন, এই ধারণাটাই ভুল।
ধর্ষণের ঘটনার পর গত ১০ দিনে আমদাবাদ, গাঁধীনগর, মেহসানা, সবরকণ্ঠার ৪২টি হামলা হয়েছে। সেই আতঙ্কে ৫০ হাজার শ্রমিক গুজরাত ছেড়ে নিজের রাজ্যে রওনা দিয়েছেন বলে বেসরকারি হিসেব। কংগ্রেস এর পিছনে রুটি-রোজগারের সংঘাত দেখলেও, বিজয় রূপাণীর সরকার তা মানতে নারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy