বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই হঠাৎ বাঁ দিকে মোড় নিল অটোটা। বাড়ি তো ডান দিকে, তা হলে বাঁ দিকে নিচ্ছেন কেন চালক? রাস্তার দিকে তাকিয়েই প্রশ্নটা ছুড়ে দিয়েছিলেন মহিলা। অটোতে তখন ভক্তিমূলক গান চলছিল। ফের চালককে তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘দাদা আমার বাড়ি তো ডান দিকে, আপনি কেন বাঁ দিকে নিচ্ছেন?’ এ বার কোনও উত্তর এল না। বরং এক দেবতার নাম জোরে জোরে উচ্চারণ করতে লাগলেন অটোচালক।
অটোটা তত ক্ষণে বাঁ দিকে মোড় নিয়ে অনেকটাই চলে এসেছে। গতি তখন ৩৫-৪০ কিলোমিটার। রাস্তাও মোটামুটি ফাঁকা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সটান চলন্ত অটো থেকে ঝাঁপ দিলেন মহিলা। মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমনই ভয়ানক অভিজ্ঞতা টুইটে শেয়ার করেছেন গুরুগ্রামের ওই মহিলা।
ঘটনাটি মঙ্গলবারের। তখন দুপুর সাড়ে ১২টা। নিষ্ঠা নামে ওই মহিলা টুইটে জানিয়েছেন, গুরুগ্রামের সেক্টর ২২ থেকে তিনি অটো ধরেছিলেন বাড়িতে ফেরার জন্য। যেখান থেকে অটো ধরেছিলেন সেখান থেকে তাঁর বাড়ি মাত্র সাত মিনিটের। তাঁর কথায়, “অটোচালককে বলেছিলাম পেটিএম করব। কারণ আমার কাছে টাকা ছিল না। চালক তাতে রাজিও হয়েছিলেন। যথারীতি আর দেরি না করে উঠে পড়লাম অটোতে। অটোতে ভক্তিগীতি চলছিল মৃদুস্বরে।”
speed was 35-40 & before he speeds up, jumping out was the only option. I thought broken bones are better than getting lost. And I jumped out of the moving auto! I don’t know how I got that courage. (5/8)
— Nishtha (@nishtha_paliwal) December 20, 2021
আরও পড়ুন:
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। অটোও চলা শুরু করে। নিষ্ঠা জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ির গলিতে ঢোকার ঠিক আগেই একটা টি পয়েন্ট আছে। সেখান থেকে ডান দিকে মোড় নিলেই তাঁর বাড়ি। কিন্তু হঠাৎই ওই টি পয়েন্টের কাছে এসে ডান দিকে না নিয়ে চালক অটোকে বাঁ দিকে ঘোরান। এবং পুরো অচেনা একটা রাস্তা দিয়ে চলা শুরু করতেই নিষ্ঠা তাঁকে প্রশ্ন করেন কেন ডান দিকে না ঘুরিয়ে বাঁ দিকে অটো ঘোরালেন। অভিযোগ, এতে কোনও উত্তর দিতে চাননি চালক। এর পরই নিষ্ঠা জোরে জোরে চিৎকার করে চালককে বলেন, “আপনি কেন বাঁ দিকে অটো নিলেন?” তাতেও কোও উত্তর না দেওয়া চালকের কাঁধে ৮-১০ বার ঝাঁকুনি দিয়েছিলেন নিষ্ঠা।
তাঁর কথায়, “তখন আমার মাথায় এসেছিল বাঁচতে হলে অটো থেকে ঝাঁপ মারতে হবে। তাতে হাত-পা ভাঙে ভাঙুক। কিন্তু প্রাণে তো বাঁচব!” এর পরই সাহসে ভর করে চলন্ত অটো থেকে ঝাঁপ মারেন নিষ্ঠা। সামান্য আহত হয়েছেন তিনি। এই ঘটনার বিবরণ জানিয়ে এবং অপহরণের অভিযোগ তুলে গুরগাঁও পালম বিহারে মামলা দায়ের করেন তিনি। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অটোচালকের খোঁজ চালাচ্ছে। নিষ্ঠা বলেন, “মঙ্গলবারের সেই মুহূর্তের কথা মনে পড়লেই শিউরে উঠছি। শিরদাঁড়া বেয়ে যেন শীতল স্রোত নেমে আসছে।”