ছবি: রয়টার্স।
প্রবল বিতর্কের মুখে মায়ানমারের শরণার্থীদের নিয়ে সুর নরম করল মণিপুর সরকার। সরকারি নির্দেশিকার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার সরকারের তরফে দাবি করা হয়। পাশাপাশি এটাও জানানো হয়েছে, মায়ানমার থেকে আগত শরণার্থীদের যথেষ্ট খেয়াল রাখা হচ্ছে। সরকার তাঁদের সব রকম ভাবে সহযোগিতা করছে।
মায়ানমারের শরণার্থীদর নিয়ে গত ২৬ মার্চ একটি কড়া নির্দেশিকা জারি করেছিল মণিপুর সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল, মায়ানমার থেকে আগত শরণার্থীদের আশ্রয়, খাবার দেওয়া যাবে না। তবে মানবিকতার খাতিরে শরণার্থীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যেতে পারে বলে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল। তার পরই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বীরেন সিংহের সরকারকে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে শরণার্থীদের প্রতি সরকারের অনমনীয় মনোভাব নিয়ে। কার্যত চাপের মুখে পড়েই সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠল মণিপুর সরকার।
মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া মণিপুরের জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে চান্দেল, তেংনোপল, কামজোঙ, উখরুল এবং চুড়াচাঁদপুর। মায়ানমার থেকে যাতে শরণার্থীরা মণিপুরে অবৈধ উপায়ে ঢুকতে না পারেন তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। সোমবার এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ওই সব জেলা প্রশাসনগুলোকে। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জে মায়ামারের রাষ্ট্রদূত ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তাঁদের দেশ থেকে আগত শরণার্থীদের মানবিকতার খাতিরে আশ্রয় এবং খাবার দেওয়া হোক। তাঁর মতে, দু’দেশের মধ্যে যে দীর্ঘ দিনের এক সম্পর্ক এবং ইতিহাস জড়িয়ে আছে, সেটা ভুলে না যাওয়াই ভাল। কিন্তু মণিপুর সরকার জেলা প্রশাসনগুলোকে শরণার্থী শিবির না খোলার নির্দেশ দেয়। আরও বলা হয়, যাঁরা এ দেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবেন তাঁদের আর্জি যেন বিনম্রতার সঙ্গেই খারিজ করে দেওয়া হয়। শরণার্থীদর প্রতি এ হেন দৃষ্টিভঙ্গি এবং পদক্ষেপের কারণে মণিপুর সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। শুক্রবার দেশের নানা প্রান্তে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। দেশের ৯টি প্রদেশে বিক্ষোভকারী জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে সেনার বিরুদ্ধে। যার জেরে বহু শিশু-সহ ৯০ জন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠতেই কাতারে কাতারে মানুষ সে দেশ থেকে আতঙ্কে মণিপুর, মিজোরামে আশ্রয় নেওয়ার জন্য ছুটে আসছেন। মণিপুর মুখ ফেরালেও মিজোরাম সরকার কিন্তু শরণার্থীদের প্রতি নরম মনোভাবই পোষণ করেছে। গত এক মাসের মধ্যে মায়ানমার থেকে মিজোরামে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। সরকারি হিসেব বলছে সোমবার পর্যন্ত এই সংখ্যাটা ছিল ১ হাজার ৪২। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা জানিয়েছেন মায়ামারের চিন সম্প্রদায়ের সঙ্গে যে হেতু তাঁর রাজ্যের মানুষদের এক নিবিড় যোগ রয়েছে, তাই সে দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের শোচনীয় অবস্থা দেখে মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy