মধ্যপ্রদেশের এক সাংবাদিকের তোলা ছবি। ছবিটি সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি’ থেকে নেওয়া হয়েছে। চিত্রগ্রাহকের নাম জানা যায়নি বলে দেওয়া গেল না।
সাদা মলিন কাপড় দিয়ে মোড়া একটি ছোট্ট দেহ। হাতটি অবশ্য বাইরে বেরিয়ে রয়েছে। কিন্তু শরীরের বাকি অংশ ওই কাপড় দিয়ে ঢাকা। ওই ছোট্ট দেহটি কোলে রেখে নোংরা রাস্তার উপর দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসে রয়েছে বছর সাত-আটেকের এক শিশু। মাছি তাড়াচ্ছে আর ইতিউতি চাইছে সে। হয়তো কারও অপেক্ষায়...
মধ্যপ্রদেশের মোরেনা শহরে এক স্থানীয় সাংবাদিকের ক্যামেরায় এক শিশুর এমনই অসহায়তার ছবি ধরা পড়েছে। এই দৃশ্য দেখে স্থানীয়েরা পরিচয় জানতে চাইলে ওই শিশু জানায়, তার নাম গুলশন। বয়স আট। আর তার কোলে যে দেহটি শায়িত রয়েছে, সেটি তার দু’বছরের ভাই রাজার। কিছু ক্ষণ আগেই হাসপাতালে যার মৃত্যু হয়েছে।
দু’বছরের সন্তানের চিকিৎসা করাতে অম্বার বদফ্রা গ্রাম থেকে মোরেনা জেলা হাসপাতালে এসেছিলেন বাবা পুজরাম জাটভ। সঙ্গে এনেছিলেন বড় ছেলে গুলশনকেও। গ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসা করানো যায়নি। তাই শহরের জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল ছোট ছেলেকে। তার পরেও বাঁচানো যায়নি তাকে। ছোট ছেলের মৃত্যুর পর তার দেহ নিয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ করতে গিয়ে পুজরাম দেখেন, যে অ্যাম্বুল্যান্সটি তাদের নিয়ে এসেছিল, সেটি ফিরে গিয়েছে। প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে গ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, অ্যাম্বুল্যান্স নেই। ফলত, ছেলের দেহকে কাপড়ে মুড়ে হাতে নিয়েই হাসপাতাল ছাড়তে হয় পুজরামকে।
পুজরাম বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঠিক বাইরে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে ছিল। চালককে নিয়ে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু ও দেড় হাজার টাকা চাইছিল। অত টাকা দেওয়া আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই, রাস্তায় বেরিয়ে গাড়ি খুঁজছিলাম।’’ রাস্তার এক পাশে গুনশনকে বসিয়ে তার কোলে ছোট ছেলের দেহ রেখে নিজে গাড়ি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন পুজরাম। তার পরেই গোটা বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এক স্থানীয় থানায় খবর দেন। এর পরেই তৎপর হয়ে পুজরামদের গ্রামের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। জেলা হাসপাতালে পাঠানো হলে শেষমেশ সেখান থেকেই অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয় তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy