এসপি নেতা অখিলেশ যাদব। —ফাইল চিত্র।
জাতীয় স্তরে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে ‘ইন্ডিয়া’কে ঐক্যবদ্ধ রাখতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সমন্বয়ের পথেই যেতে চান এসপি নেতা অখিলেশ যাদব। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের রাজ্য রাজনীতিতে রাহুল তথা কংগ্রেসকে বাড়তি জায়গা ছাড়া হবে না। এসপি সূত্রের খবর, দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে এই বার্তাই দিয়েছেন অখিলেশ। রাজ্যে আসন্ন ১০টি বিধানসভা উপনির্বাচনেও একলা চলার কথাই আপাততভাবা হচ্ছে।
সূত্রের মতে, অখিলেশের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশের সবক’টি আসনই কংগ্রেস জিতেছে এসপি-র সৌজন্যে। যে ছ'টি আসন কংগ্রেস পেয়েছে, তার কোনও লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কোনও বিধানসভাতেই কংগ্রেসের বিধায়ক নেই। এসপি শীর্ষ নেতৃত্ব দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, মিলকিপুর, মীরাপুর, কুনদারকি, গাজিয়াবাদ সদর, ফুলপুর, কাটোরি-সহ যে দশটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে, সেগুলিতে একাই লড়ার প্রস্তুতি শুরু করতে। পরবর্তী সময়ে কংগ্রেস আসনের জন্য দরবার করলে একটি আসন তাদের ছাড়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি অনুযায়ী নেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশনের কাছে দ্রুত উপনির্বাচনগুলি করানোর জন্য চিঠি লিখছেন এসপি নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে ন'জন বিধায়ক লোকসভায় জেতার ফলে আসন ফাঁকা হয়েছে। পাশাপাশি একটি আসনে এসপি প্রার্থী ইরফান সোলাঙ্কির নাম বাতিল হয়েছে। ওই দশটি বিধানসভা আসনে পাঁচটি ছিল এসপি-র, পাঁচটি বিজেপি-র। এসপি-র সহ সভাপতি কিরণময় নন্দের কথায়, “এই ভোট বিধানসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল। এখানে জোর বিজেপি-বিরোধী হাওয়া বইছে। আমরা দশটিতেই লড়ব।”
সম্প্রতি তৃণমূল নেতৃত্ব ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে একটি ‘জিঞ্জার’ গোষ্ঠী তৈরিতে উদ্যত। অখিলেশের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিরণময়ের কথায়, “তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক আগেও ভাল ছিল। আগামী দিনে আরও ভাল হবে। আমরা যে আসন ওদের ছেড়েছিলাম, সেটাতে খুবই কম ব্যবধানে হেরেছি। আর একটু পরিশ্রম করলেই জেতা যেত। তৃণমূলকে বাদ দিয়ে যে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে না, এটা কংগ্রেসকে বুঝতে হবে।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “কংগ্রেস যে ছ'টি আসন পেয়েছে, তার মধ্যে ৩টিকে আমরা সমাজবাদী পার্টির আসন বলেই মনে করি, প্রার্থী ছিলেন শুধু কংগ্রেসের। রাহুল নিজেও সে কথা জানেন। তাঁদের কোনও লোকসভা আসনে এক জনও কংগ্রেসি বিধায়ক নেই। বরং আমাদের কোথাও তিন, কোথাও চার জন করে বিধায়ক। এই বার্তা স্পষ্ট করে দিতে হবে যে, শুধুমাত্র এসপি-র জন্যই উত্তরপ্রদেশে দাঁত ফোটাতে পারল না বিজেপি।"
পরবর্তী বিধানসভা ভোটে ‘ইন্ডিয়া’র (অর্থাৎ এসপি ও কংগ্রেসের) আসন সমঝোতা কতটা সম্ভব? এসপি নেতার কথায়, ‘‘এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে ক্ষমতায় আসব, এটাই অখিলেশজি চাইছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে লোকসভা ভোটে জোট করেছিলাম সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি-কে হটাতে। কিন্তু রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বলে কিছু নেই। বরং মোদীকে হারাতে গেলে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ বারের ভোটে এসপি এবং তৃণমূল যে ভাবে বিজেপি-র আসন কমিয়েছে, তাতে সেই মডেলই প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।” এসপি শীর্ষ সূত্রের দাবি, যে রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস আছে বা সম্প্রতি তাদের সরকার ছিল, সে সব রাজ্যগুলিতে ভাল ফল করেছে বিজেপি। অথচ যোগী-রাজ্যে ৫ থেকে ৩৭-এ পৌঁছেছে অখিলেশের দল।
প্রসঙ্গত, এই ১০টি আসনের লড়াইয়ে কংগ্রেসও যোগ দিতে চায় কি না তা স্পষ্ট না করলেও দলীয় নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, ‘ইন্ডিয়া’ এই ভোটে লড়বে।
লোকসভার অধিবেশনে মোদী উত্তরপ্রদেশের ফলাফলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, কংগ্রেস যাদের সঙ্গে জোট করে, তাদের ভোটব্যাঙ্ককেই করায়ত্ত করে বেঁচে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে অখিলেশের একলা চলার প্রবণতা কি মোদীর বিভাজনের কৌশলকেই শক্তিশালী করবে না? এসপি-র বক্তব্য, কেন্দ্রে 'ইন্ডিয়া'র সমন্বয় থাকবে। কিন্তু রাজ্যের নির্বাচনে নিজেদের সাফল্যের ভাগ কংগ্রেসকে দিতে রাজি নয় এসপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy