কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। ফাইল চিত্র।
দলিত মল্লিকার্জুন খড়্গে, ভোক্কালিগা সমাজের নেতা ডি কে শিবকুমার ও ওবিসি নেতা সিদ্দারামাইয়া। দক্ষিণের রাজ্য কর্নাটকে এখন এই ত্রয়ী-র মাধ্যমে বিজেপির অস্তিত্ব মুছে দিতে মরিয়া কংগ্রেস। আর বিজেপি নেতৃত্বের একটা বড় অংশের মতে, কংগ্রেসের এই জাতপাতের সমীকরণকে নস্যাৎ করে দলকে যদি কেউ ক্ষমতায় টিঁকিয়ে রাখতে পারেন, তিনি হলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। কিন্তু উনআশি বছরের ইয়েদুরাপ্পাকে বয়সের নিয়ম অগ্রাহ্য করে কর্নাটকের সব দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে কি না, এখন সেই দোটানায় বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
কর্নাটকের রাজনীতিতে ক্ষমতা দখলের প্রশ্নে বরাবরই পরস্পর বিরোধী শিবিরকে সমর্থন করতে দেখা গিয়েছে ভোক্কালিগা ও লিঙ্গায়েত সমাজকে। ইয়েদুরাপ্পা লিঙ্গায়েত সমাজের নেতা। গোড়া থেকেই তাঁকে এবং বিজেপিকে সমর্থন করে এসেছে লিঙ্গায়েত সমাজ।
অন্য দিকে, যোগ্য নেতার অভাবে একজোট হতে পারছিলেন না ভোক্কালিগারা। কংগ্রেস নেতা, ভোক্কালিগা সমাজের ডি কে শিবকুমারের উত্থানে সেই সমস্যা আপাতত অনেকটাই দূর হয়েছে। ভোক্কালিগাদের একটি বড় অংশ শিবকুমারের সমর্থনে এসে দাঁড়িয়েছে। যা এই মুহূর্তে ভরসা জোগাচ্ছে কংগ্রেসকে।
পাশাপাশি, ওবিসি নেতা সিদ্দারামাইয়া দীর্ঘ দিন ধরেই কর্নাটকের রাজনীতিতে সক্রিয়। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। আর সম্প্রতি খড়্গেকে দলের জাতীয় সভাপতি করায় কর্নাটকের দলিত সমাজের কাছে ইতিবাচক বার্তা গিয়েছে বলেই মনে করছে কংগ্রেস। তাই চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্কের পাশপাশি দলিত, ওবিসি ও ভোক্কালিগা সমাজকে পাশে পাওয়া যাবে বলেই আশাবাদী কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, যা পরিস্থিতি তাতে কর্নাটকে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারবে দল।
কর্নাটকে দলের পরিস্থিতি যে আদৌ ঠিক নেই— তা বুঝতে পারছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ঠেকাতে ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, দল ও প্রশাসনের সমন্বয়ের অভাব সামনে আসছে। রাজ্যে আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বর একটা বড় অংশ মনে করছে, শেষ মুহূর্তে যদি কেউ ব্যক্তিগত দক্ষতার জোরে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেন, তিনি বি এস ইয়েদুরাপ্পা। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সেই বার্তা দিয়েছে রাজ্য ও সঙ্ঘের নেতৃত্ব। ফলে সদ্য সমাপ্ত বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে প্রায় পনেরো মিনিট আলাদা করে ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সূত্রের দাবি, ইয়েদুরাপ্পা ওই বৈঠকে মোদীকে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে বা তাঁর বড় ছেলেকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হলে তিনি কর্নাটকে দলের হাল ধরতে প্রস্তুত। মোদীও খুব ভাল ভাবেই বুঝছেন, গোটা রাজ্যকে হাতের তালুর মতো চেনা, চারবারের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা মাঠে না নামলে কর্নাটকের মসনদ ধরে রাখা কঠিন।
কিন্তু সমস্যা হল, ইয়েদুরাপ্পার বয়স এখন ৭৯। বিজেপির নিয়ম অনুসারে, ৭৫ পেরিয়ে গেলেই দলীয় নেতাদের মার্গদর্শক মণ্ডলীর সদস্য করে কার্যত বসিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ৭৯ বছর বয়সি ইয়েদুরাপ্পাকে দলের সংসদীয় বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরপরেও কর্নাটক ধরে রাখার স্বার্থে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হলে দলের নিয়ম ভাঙা হবে। তেমন ঝুঁকি মোদী নেবেন কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy