গত ছ’মাসে একেবারেই ফুরসত মেলেনি লিলি বেগম মজুমদারের। হবেই বা কী ভাবে? ছ’মাসে ৮৫টি শিশু প্রসব করা কি মুখের কথা! অবিশ্বাস্য হলেও রেকর্ড বলছে সে কথাই। আর এমনই অবাস্তব তথ্য উঠে এসেছে অসমের করিমগঞ্জের হাইলাকান্দি জেলায় এক সরকারি হাসপাতালের রেকর্ড বইয়ে। লিলি বেগম ওই সরকারি হাসপাতালে নার্সের কাজ করেন। সম্প্রতি তাঁর এই ‘কীর্তি’র কথা সামনে আসতেই চোখ কপালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। আসলে সরকারি এক প্রকল্পের বজ্রআটুনির মধ্যে থেকে ফস্কা গেরো যে খুঁজে পেয়েছেন লিলি! ওই প্রকল্প অনুযায়ী যে সমস্ত অন্তঃসত্ত্বা গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু প্রসব করাবেন তাঁদের প্রত্যেকেই পাঁচশো টাকা করে সরকারি সাহায্য পাবেন। নিরাপদ মাতৃত্বে উৎসাহ দিতেই এই প্রকল্প চালু করেছে অসম সরকার। আর প্রকল্পে সদ্যোজাতের মায়েদের টাকা দেওয়ার দায়িত্বে থাকা লিলি সেই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছেন। গত কয়েক মাসে এ ভাবেই তাঁর নিজের পকেটে এসেছে হাজার চল্লিশেক টাকাও। হাসপাতালের এক আধিকারিক জানিয়েছেন নয় নয় করে ১৬০টি শিশু প্রসবের রেকর্ড দেখিয়েছেন লিলি। যার মধ্যে ৮৫টি তাঁর নিজের নামে নথিভুক্ত করা। তা কী ভাবে ধরা পড়লেন লিলি? পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালের এক কর্মীই এ কথা ফাঁস করে দিয়েছেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শেষমেশ পুলিশের জালে লিলি। ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরই গত ১৭ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রের খবর, হাইলাকান্দিতে গর্ভবতী মহিলাদের ‘মামনি’ প্রকল্পের অধীনে আর্থিক সাহায্য প্রধানের নামে ব্যাপক দুর্নীতি চলার অভিযোগ অনেক দিনের।
আর এই জালিয়াতির কেন্দ্রে থাকা লিলি কী বক্তব্য? তাঁর সহজ স্বীকারোক্তি, “আসলে কী বলুন তো, আমাদের খুব চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়। তা ছাড়া, আমরা সে ভাবে টাকাপয়সাও পাই না। আমি শুধুমাত্র ৮০টি মাতৃত্বের বিষয়েই ভুল তথ্য দিয়েছি। হ্যাঁ, ভুল হয়ে গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy