Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Suchana Seth

কেন চার বছরের পুত্রকে খুন করলেন বেঙ্গালুরুর স্টার্টআপের সিইও সূচনা? নেপথ্যে কোন কারণ, কী বলছে পুলিশ

সোমবার গোয়ার হোটেল থেকে চেকআউট করেন সূচনা। একটি ট্যাক্সিতে তিনি বেঙ্গালুরু রওনা দেন। হোটেলের কর্মীরা ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে রক্তের দাগ দেখতে পান। তখনই সন্দেহ হয় তাঁদের।

সূচনা শেঠ। গোয়ার এই হোটেলেই সন্তানকে খুন করেন বলে অভিযোগ।

সূচনা শেঠ। গোয়ার এই হোটেলেই সন্তানকে খুন করেন বলে অভিযোগ। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:২৬
Share: Save:

কেন নিজের চার বছরের সন্তানকে খুন করলেন সূচনা শেঠ? বেঙ্গালুরুর এক স্টার্টআপ সংস্থার কর্ণধার তথা এক মাকে নিয়েই হইচই পড়ে গিয়েছে। সোমবার নিজের শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগ উঠেছে সূচনার বিরুদ্ধে। কিন্তু কী এমন ঘটনা ঘটল, যে কারণে শিশুপুত্রকে খুন করতে একবারও হাত কাঁপল না স্টার্টআপ সংস্থার কর্ণধারের? এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ।

শিশুপুত্রের দেহ ব্যাগে ভরে ট্যাক্সিতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় সোমবার কর্নাটকের চিত্রদুর্গে গ্রেফতার হন সূচনা। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১০ সালে বেঙ্কট রমন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সূচনার। বর্তমানে বেঙ্কট কর্মসূত্রে ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছেন। ২০১৯ সালে সূচনা-বেঙ্কটের এক পুত্রসন্তান হয়। সন্তান জন্মানোর এক বছরের মধ্যেই ২০২০ সালে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। সম্পর্কের ফাটল তার পর থেকে ক্রমশ চওড়া হয়েছে। শেষমেশ, স্বামী-স্ত্রীর এই অশান্তি পৌঁছয় আদালতের দোরগোড়ায়।

গোয়া পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল যশপাল সিংহ ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে সূচনা এবং বেঙ্কট আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদও হয়। কিন্তু সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখারই নির্দেশ দেয় আদালত। তবে শুধুমাত্র রবিবারগুলিতে সন্তানের সঙ্গে বাবার দেখা করার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। পুলিশের এক সূত্রের দাবি, সূচনা সেটা নাকি চাইতেন না। ফলে তাঁর মধ্যে সব সময় একটা উদ্বেগ কাজ করছিল। পুত্রকে দেখা করতে দিলেই যদি স্বামীর তার হেফাজতের দাবি করেন, এই ভয় তাঁকে ক্রমশ ঘিরে ধরেছিল।

পুলিশ সূত্রে খবর, পুত্রকে সূচনা নিজের হেফাজতে রাখাই নিরাপদ বলে মনে করতেন। তবে সমস্যাটা শুরু হয়েছিল রবিবারগুলিতে সন্তানকে তার বাবার সঙ্গে দেখার বিষয়টি নিয়ে। সন্তানকে বাবার থেকে দূরে রাখতেই সূচনা তাই তাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তাই পরের রবিবার আসার আগেই সন্তানকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন সূচনা। সেই পরিকল্পনামাফিক সন্তানকে নিয়ে গোয়ায় যান সূচনা। সেখানে ক্যান্ডোলিমে একটি হোটেলে ওঠেন। তার পর সেখানেই খুন করেন সন্তানকে।

সোমবার ক্যান্ডোলিমের ওই হোটেল থেকে চেকআউট করেন সূচনা। হোটেল থেকেই ঠিক করে দেওয়া স্থানীয় একটি ট্যাক্সি চড়ে তিনি বেঙ্গালুরু রওনা দেন। হোটেলের কর্মীরা পরে যখন তাঁর ফ্ল্যাটটি পরিষ্কার করতে যান, তাঁরা দেখতে পান ফ্ল্যাটের মেঝেতে ইতস্তত রক্তের দাগ। তাঁদের সন্দেহ হওয়ায় হোটেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। তার পরই তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সূচনাকে ফোন করে জানতে চায়, ছেলে কোথায়? সূচনা অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবে জানান, ফতোরদায় তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে ছেলেকে রেখে তিনি জরুরি কাজে বেঙ্গালুরু ফিরছেন। বন্ধুর নাম, ঠিকানাও পুলিশকে দেন সূচনা। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরোটাই ভুয়ো। ওখানে ওই নামে কেউ থাকেনই না। তার পরই ট্যাক্সিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে জানতে পারেন তাঁরা কর্নাটকের চিত্রদুর্গে রয়েছেন। গোয়া পুলিশ তখন স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করে। আইমঙ্গলায় ট্যাক্সিটিকে আটকানো হয়। তল্লাশি চালিয়ে একটি ব্যাগের ভিতর থেকে শিশুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Goa Startup CEO bengaluru
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy