Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

রাজ্যপাট কার? গৃহযুদ্ধে চাপে লালু

স্মার্ট, নাগরিক জীবনের পালিশ মাখা ঝকঝকে তেজস্বীর থেকে লালুর এই একটু ‘আনপড়’, গ্রাম্য বড় ছেলেকেই তাঁরা নিজেদের বেশি কাছের মানুষ বলে মনে করছেন।

লালুপ্রসাদ যাদব।

লালুপ্রসাদ যাদব।

দিবাকর রায়
পটনা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪০
Share: Save:

এমনটা তিনি চাননি। ছোট ছেলে তেজস্বীকেই রাজপাট বুঝিয়ে দিয়ে শান্তিতে বাকি জীবনটা কাটাতে চেয়েছিলেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ। ভেবেছিলেন, বড় ছেলে তেজপ্রতাপ ধর্মকর্ম নিয়েই সারাজীবন থাকবেন। কিন্তু তার ইচ্ছায় সম্মত নন তেজপ্রতাপ। জ্যেষ্ঠ পুত্রের অধিকার ছাড়তে নারাজ তেজপ্রতাপ। পাশাপাশি, দলের নিচু তলার ও মাঝারি কর্মী-সমর্থকেরাও লালুর জ্যেষ্ঠ পুত্রকেই আরজেডি প্রধানের উত্তরাধিকারী হিসাবে বেছে নিতে চান। স্মার্ট, নাগরিক জীবনের পালিশ মাখা ঝকঝকে তেজস্বীর থেকে লালুর এই একটু ‘আনপড়’, গ্রাম্য বড় ছেলেকেই তাঁরা নিজেদের বেশি কাছের মানুষ বলে মনে করছেন।

আর সেই কারণেই ইদানীং কালে বিহারের বিভিন্ন জেলা থেকে সভা-সমাবেশের জন্য তেজস্বী নয়, তেজপ্রতাপকেই চাইছেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। লালু সেই সব সমাবেশে তেজস্বীকে এগিয়ে দিতে চান, কিন্তু সমর্থকরা গ্রামীণ সভাগুলিতে চান তেজপ্রতাপকে। গত ২৭ অগস্ট পটনার গাঁধী ময়দানে লালুর বিরোধী-সমাবেশের পর দলের মধ্যে তেজপ্রতাপের জনপ্রিয়তা সাংঘাতিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। লালুপ্রসাদের স্টাইলে ভাষণ দিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। গাঁধী ময়দানের সভার বক্তা তালিকায় তেজপ্রতাপের নাম রাখেননি লালুপ্রসাদ। কিন্তু বাবাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাইক হাতে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন তেজপ্রতাপ। মাথায় সবুজ পাগড়ি বেঁধে শঙ্খ বাজিয়ে নেতা-কর্মীদের আকর্ষণ করেন তিনি। সেই ভাষণ শোনার পরে গোপালগঞ্জের এক আরজেডি বিধায়কের বক্তব্য, “তেজপ্রতাপ আমাদের মন জিতে নিয়েছেন। লালুপ্রসাদের ছায়া ওঁর মধ্যেই রয়েছে।”

সিবিআই-আয়কর-ইডি-পশুখাদ্য মামলায় জেরবার লালুপ্রসাদের সামনে এখন এটাই নতুন সমস্যা। সম্প্রতি ভাগলপুরের এক সভায় লালুপ্রসাদ রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তেজস্বীকে দেখতে চাওয়ায় বেজায় চটেছেন তেজপ্রতাপ। বাবাকে জানিয়ে দিয়েছেন, দলের বিধায়কেরা জেতার পরে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করবেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘরোয়া কথাবার্তায় দুই ভাই পরস্পরের বিরুদ্ধে এমন সব শব্দের প্রয়োগ করছেন যে তা সামলানো দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাবার পক্ষেও সম্ভব নয়। বোঝা যায়, দুই ভাইয়ের শত্রুতা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত বছর এক সরকারি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তেজপ্রতাপকে ‘কৃষ্ণ কানাহইয়া’ বলে ডেকেছিলেন। ঘনিষ্ঠ মহলে তেজপ্রতাপের প্রশ্ন ছিল, “বতাও, কভি পিএম নে হামারে ছোটকা কো অ্যায়সা ভাও দিয়া হ্যায়!” সাংবাদিকদের সামনেই তেজপ্রতাপ তো প্রায়শই বলছেন, “আরে রাজতিলক তো মেরা হি হোগা।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy