কন্যা প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে ভোট দিতে এলেন সনিয়া গান্ধী । সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি পিটিআই।
চব্বিশ নম্বর আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দফতরের বাইরে বিশাল হোর্ডিংয়ে সনিয়া গান্ধীর হাসি মুখের ছবি। সোমবার সকালে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগে এক কর্মী ‘প্রাক্তন সভানেত্রী’ হতে চলা সনিয়ার সেই ছবির উপরে জমা ধুলো সাফ করছিলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই কন্যা প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে সনিয়া এআইসিসি-র সদর দফতরে পৌঁছলেন। ভোট দিতে যাওয়ার আগেই জানালেন, “দীর্ঘদিন এই দিনের জন্য আমি অপেক্ষা করছি।”
সনিয়া-প্রিয়ঙ্কা যখন এআইসিসি-র সদর দফতরে ভোট দিচ্ছেন, রাহুল গান্ধী তখন কর্নাটকের বল্লারিতে। কংগ্রেস নেতারা যে সব কন্টেনারে রাত কাটাচ্ছেন, তার একটি কন্টেনারকেই পোলিং বুথ বানানো হয়েছে। রাহুল দুপুরে সেখানেই যাত্রার অন্য সদস্যদের সঙ্গে ভোটের লাইনে দাঁড়ালেন। ভোট দিয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘দেশের সব কংগ্রেসি, নারী-পুরুষ আমাদের দলের নতুন সভাপতির জন্য ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন দেখে গর্ব বোধ করছি।’’
সনিয়া আগেই বলেছিলেন, সভাপতি নির্বাচনে মল্লিকার্জুন খড়্গে ও শশী তারুরের মধ্যে লড়াইয়ে গান্ধী পরিবার নিরপেক্ষ ভূমিকা নেবে। গান্ধী পরিবার যতই প্রমাণ করার চেষ্টা করুক, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনেই হচ্ছে, কংগ্রেস নেতারা উল্টে বারে বারেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন, সভাপতি যে-ই হোন, কংগ্রেসে গান্ধী পরিবারের নিয়ন্ত্রণ মুছে যাবে না। সভাপতি নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের আশীর্বাদধন্য প্রার্থী মল্লিকার্জুন খড়্গে আগেই বলেছিলেন, সভাপতি হলে তিনি গান্ধী পরিবারের পরামর্শ মেনে চলবেন। তাতে তিনি মোটেই লজ্জিত বোধ করবেন না। আজ এআইসিসি সদর দফতরে যিনি সকলের আগে ভোট দিয়েছেন, সেই পি চিদম্বরমও বলেছেন, গান্ধী পরিবারের বাইরে নতুন সভাপতি হলেও তাঁকে পরিবারের কথা শুনতে হবে। কেউ বলছে না যে গান্ধী পরিবারের মতামত গুরুত্বহীন হয়ে যাবে। ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত কংগ্রেস সভাপতি নেবেন। কিন্তু কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে গান্ধীরা থাকবেন। কংগ্রেস সভাপতিকে তাঁদের মতামত বিবেচনা করতেই হবে।
৯৯১৫ জন কংগ্রেস প্রতিনিধির মধ্যে প্রাথমিক হিসেবে ৯৪৯৭ জন ভোট দিয়েছেন। বুধবার ভোটগণনা হবে। ভোট পড়েছে প্রায় ৯৬ শতাংশ। নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত নেতা মধুসূদন মিস্ত্রির বক্তব্য, ‘‘কোথাও কোনও গন্ডগোল হয়নি। দলীয় গণতন্ত্রের এ এক বিরাট উদাহরণ। যাঁরা বলেন আমাদের দলে গণতন্ত্র নেই, তাঁরা এই নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিতে পারেন।’’
মিস্ত্রি দলীয় গণতন্ত্রের কথা বললেও কংগ্রেস নেতারা বলছেন, গান্ধী পরিবারের বাছাই করা প্রার্থী হিসেবে খড়্গের জয় নিশ্চিত। শুধু দেখার, তারুর কত ভোট পান। শেষ বার সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল ২০০০ সালে। সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হন জিতেন্দ্র প্রসাদ। সনিয়া পেয়েছিলেন ৭,৪৪৮টি, প্রসাদ মাত্র ৯৪টি ভোট। আজ ভোটগ্রহণের আগে খড়্গে ও তারুর ফোনে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান। খড়্গে বলেন, “আমরা দু’জনেই কংগ্রেসকে মজবুত করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।” তারুর কর্মী ও ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “ফল যা-ই হোক, এটা আপনাদের জয়।”
কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গান্ধীরা যতই নিরপেক্ষ থাকার কথা বলুন, তাঁদের বাছাই করা প্রার্থী খড়্গের পাশেই রাজ্যের নেতা ও পদাধিকারীরা দাঁড়িয়েছেন। উল্টো দিকে তারুরকে বার বার অভিযোগ জানাতে হয়েছে। কারণ নিয়ম ভেঙে দলের নেতারা খোলাখুলি খড়্গেকে সমর্থন জানিয়েছেন। আজ মিস্ত্রি মুচকি হেসে বলেছেন, “আমি তারুরকে বলেছি, উনি বার বার চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়ে সময় নষ্ট না করে প্রচারে সময় দিলে ভাল করতেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy