সিপিমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। হায়দারাবাদে। —নিজস্ব চিত্র।
আগামী লোকসভা নির্বাচনে সর্বাত্মক লড়াই হবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে হঠানোর লক্ষ্যে। তার জন্য গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যবদ্ধ লড়াই জরুরি। এখানে কংগ্রেস-প্রশ্নে বাছ-বিচারের অবকাশ ক্ষীণ। পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রিপোর্টকে সামনে রেখে এই মর্মেই আলোচনা শুরু করল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। ভোটের সময়ে রাজ্যের পরিস্থিতি বুঝে নির্বাচনী সমঝোতার রাস্তা খুলে রাখার পক্ষেই মত কেন্দ্রীয় কমিটির বড় অংশের।
কংগ্রেস-সহ গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্য গড়ে তুলে বিজেপির অর্থনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন মোকাবিলার লাইন ঠিক হয়েছিল চার বছর আগে হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসেই। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে গিয়ে নির্বাচনে বামেদের বিশেষ কোনও লাভ হচ্ছে কি না, বাংলায় ধারাবাহিক বিপর্যয়ের পরে সেই বিতর্ক আবার মাথা তুলেছিল সিপিএমে। যদিও আসন্ন পার্টি কংগ্রেসের জন্য দলের যে রাজনৈতিক-কৌশলগত লাইনের খসড়া রিপোর্ট সম্প্রতি পলিটবুরোয় পাশ হয়েছে, সেখানে পথ বা কৌশলের কোনও পরিবর্তনের কথা নেই। সেই রিপোর্ট নিয়েই শুক্রবার থেকে হায়দরাবাদে তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে যে খসড়া চূড়ান্ত হবে, তার ভিত্তিতেই আলোচনা হবে পার্টি কংগ্রেসে। সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন চূড়ান্ত হয় পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চেই।
উদার অর্থনীতির দরজা খুলে দিয়ে সাধারণ মানুষের উপরে বোঝা চাপানোর প্রশ্নে কংগ্রেসকে নিয়ে আপত্তি অবশ্য বহাল রয়েছে সিপিএমের একাংশের। তাদের মতে, বিজেপি যে রাস্তায় আগ্রাসী ভাবে এগিয়েছে, সেই পথ খুলে দিয়েছিল কংগ্রেসই। কেরল, ত্রিপুরা, তেলঙ্গানা-সহ কিছু রাজ্যের সিপিএম নেতারা যে কারণে নির্বাচনে শুধু বাম ঐক্যেই থাকতে চান, কংগ্রেসের হাত ধরতে চান না। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের মতে, ‘‘পলিটবুরোয় পাশ হওয়া রাজনৈতিক লাইন মানলে তাতে কোনও অসুবিধা নেই।’’ জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী বৃহত্তর সমন্বয়ে দলে অবশ্য আপত্তির সুর নেই।
ঘটনাচক্রে, হায়দরাবাদেই এ দিন থেকে শুরু হয়েছে সিপিআইয়ের যুব সংগঠন এআইওয়াইএফ-এর ১৬তম সর্বভারতীয় সম্মেলন। সেখানে উপস্থিত আছেন সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা-সহ দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই। সিপিআই নেতৃত্বের মত, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জাতীয় স্তরে শুধু বামেদের পক্ষে বিজেপির কোনও বিকল্প দেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। তাই সব প্রশ্নে অভিন্ন মত না হলেও কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই চলা উচিত বামেদের।
সিপিএম সূত্রের খবর, কান্নুরে আগামী ৬-১০ এপ্রিল দলের ২৩তম পার্টি কংগ্রেস করতে চায় কেরল। তবে এই দিনক্ষণের চূড়ান্ত আলোচনা এখনও কেন্দ্রীয় কমিটিতে হয়নি। হায়দরাবাদে দলীয় বৈঠকের অবসরে এ দিন সন্ধ্যায় এক ঝাঁক বিনিয়োগকারী ও শিল্পপতির সঙ্গে তাঁর রাজ্যে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা সেরেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, শিল্পসচিব-সহ সংশ্লিষ্ট কিছু দফতরের সরকারি আধিকারিকেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy