আদানি ঘুষ-মামলা নিয়ে কি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে? হোয়াইট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি মোদীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। প্রশ্ন শুনে প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দেন, রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনায় কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিষয় উত্থাপিত হয় না।
মোদী বলেন, “ভারতে বসুধৈব কুটুম্বকম আদর্শে তৈরি গণতন্ত্র রয়েছে। প্রতিটি ভারতীয় এই পরিবারের সদস্য। আমরা ব্যক্তিগত বিষয়কে দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার মধ্যে আনি না।” আদানি ঘুষ-মামলা সংক্রান্ত প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মোদীর এই জবাব নিয়ে কটাক্ষ করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, “যদি আপনি ভারতে প্রশ্ন করেন (আদানি ঘুষ-মামলা নিয়ে), তা হলে নীরব থাকা হয়। আর বিদেশে প্রশ্ন করলে বলা হয় ব্যক্তিগত বিষয়। আমেরিকাতেও মোদীজি আদানিজির দুর্নীতিকে ঢাকা দিচ্ছেন।”
অভিযোগ, বাজারের চেয়ে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পেতে অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের (যার মধ্যে মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিরাও রয়েছেন) ঘুষ দিয়েছিল গৌতমের মালিকানাধীন ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড’ (এজিএল)। ঘুষের অঙ্ক ২৬.৫ কোটি ডলার (২০২৯ কোটি টাকা)। তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকার ন্যায়বিচার দফতর এবং বাজার নিয়ন্ত্রক এসইসি সংস্থা এসইসি (সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) যথাক্রমে ফৌজদারি ও দেওয়ানি আইনে অভিযোগপত্র পেশ করেছিল।
ফৌজদারি অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালে চালু হওয়া আমেরিকার ঘুষ বিরোধী আইন ‘ফরেন কোরাপ্ট প্র্যাক্টিসেস আ্যাক্ট’ (এফসিপিএ) লঙ্ঘনের পাশাপাশি সিকিয়োরিটিজ় (শেয়ার এবং ঋণপত্র) সংক্রান্ত এবং ওয়্যার (টেলিফোন-সহ বৈদ্যুতিন যোগাযোগ মাধ্যম) ব্যবহার করে প্রতারণার ষড়যন্ত্র। দেওয়ানি আইনেও অভিযোগ আনা হয়েছে শেয়ার এবং ঋণপত্রের বাজারের নিয়ম লঙ্ঘন সংক্রান্ত প্রতারণার।
গত ২১ নভেম্বর নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিসট্রিক্ট কোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘প্রমাণ-সহ অভিযোগপত্র’ (ইনডিক্টমেন্ট) পেশ করেছিল সংস্থা এসইসি এবং ন্যায়বিচার দফতর। গৌতম, তাঁর ভাইপো সাগর, সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর বিনীত জৈন এবং তাঁদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, ঘুষ দিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাজারের চেয়ে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বেচার বরাত আদায় করেছিলেন। ঘুষের কথা গোপন করে আমেরিকা ব্যাঙ্ক এবং আমেরিকার লগ্নিকারীদের থেকে প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা তোলে এজিএল। যা প্রতারণা।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি আমেরিকায় ঘুষের তদন্ত সংক্রান্ত মামলা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণার ফলে সে দেশে তদন্তের আওতামুক্ত হয়েছে আদানি গোষ্ঠী।