(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বৈঠকে যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার কোনওটাই রাজ্যপাল রূপায়ণ করেননি বলে আজ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলল রাজ্য সরকার।
সুপ্রিম কোর্টই উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জট কাটাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যকে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছিল। প্রথমে রাজ্যপাল ‘সুপ্রিম কোর্টের লিখিত নির্দেশ নেই’ বলে অবস্থান নিয়েছিলেন। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যপালের আইনজীবীকে। এর পরে গত ডিসেম্বরে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হয়।
আজ রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি অভিযোগ তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের বৈঠকে রাজ্যপাল তথা আচার্য আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য পদে নিয়োগের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া একটি তালিকা বিবেচনা করবেন। সেই তালিকা থেকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করবেন। কিন্তু এর কোনওটাই রূপায়ণ হয়নি। উল্টে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের আইনি লড়াইয়ের খরচ রাজ্য সরকারের উপরেই চাপানো হচ্ছে।
আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ এ নিয়ে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমানিকে খোঁজ নিতে বলেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের হয়ে তিনিই সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রাজ্যপালের যে কোনও পদক্ষেপকেই রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। মনু সিঙ্ঘভি পাল্টা যুক্তিতে বলেন, রাজ্যপালের আশ্বাস ও তা পূরণ না হওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন।
বিচারপতি সূর্য কান্ত আজ ফের বলেছেন, তাঁরা এখনও চাইছেন যে, আলোচনার মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিবাদের সমাধান হোক। দুই সাংবিধানিক পদে আসীন ব্যক্তিত্ব বৈঠক করেছেন। এক জন রাজ্য সরকারের প্রধান। অন্য জন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তাঁদের বৈঠকে নিশ্চিত ভাবে মত বিনিময় হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট চাইলে উপাচার্য নিয়োগে বাছাই কমিটি তৈরি করতে পারে।
কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে বিবাদের মীমাংসা হওয়া উচিত। অ্যাটর্নি জেনারেলও তাতে সায় দেন। বিচারপতিরা জানান, তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসার জন্য আরও কিছুটা সময় দিচ্ছেন। ২০ ফেব্রুয়ারি ফের মামলার শুনানি হবে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে নতুন বিল এনে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্যপালের থেকে কেড়ে নিতে চাইছে, সেই প্রসঙ্গও উঠেছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যের আইনজীবী মনু সিঙ্ঘভি বলেন, রাজ্যপাল বিলে সম্মতি দিতে পারেন, তা ফেরত পাঠাতে পারেন, অথবা তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল কিছুই করছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy