ছবি: পিটিআই।
কু-কথায় ছেদ নেই ভোটের দিনেও!
গত কাল পুজো দিতে কনট প্লেসের কাছে হনুমান মন্দিরে গিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। আজ দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারি বললেন, কেজরীবাল যাওয়ায় ওই মন্দির অশুদ্ধ হয়ে গিয়েছে! আপ শিবির এই ঘটনাকে তুলে ধরে মনোজের বিরদ্ধে অস্পৃশ্যতাকে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ আনল।
গত কাল কেজরীবালের মন্দিরে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আজ মনোজ বলেন, মন্দিরে ঢোকার আগে হাত দিয়ে জুতো খুলেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তার পর সেই হাত না ধুয়েই পুজো দেন তিনি। মনোজের প্রশ্ন, ‘‘কেজরীবাল পুজো করতে গিয়েছিলেন, না কি মন্দির অশুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন? যে হাতে পুজো, সেই হাতেই মালা অর্পণ— এটা কী করে করলেন তিনি? পূজারীকে বলেছি, হনুমানের বিগ্রহকে ধুইয়ে শুদ্ধ করতে।’’
আরও পড়ুন: জেকেএলএফের খবর করায় জেরার মুখে দুই
ভোটের দিন সকালে বিজেপি নেতার এমন বক্তব্যের জবাব দেওয়ার সুযোগ ছাড়েননি আপ নেতৃত্ব। তারা উল্টে বিজেপির বিরুদ্ধে অস্পৃশ্যতার অভিযোগ আনে। দলের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘বিজেপির মতে কেজরীবাল অস্পৃশ্য। আসলে বিজেপি এখনও সেই সময়ে পড়ে রয়েছে, যে সময়ে দলিতেরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারতেন না।’’ দিল্লির জনসংখ্যার প্রায় কুড়ি শতাংশ দলিত। যাঁদের একটি বড় অংশ মূলত বিজেপির সমর্থক। অনেকেই বলছেন, সেই দলিত ভোটকে নিজেদের দিকে টানতে এ দিন মনোজের বক্তব্যকে সামনে রেখে অস্পৃশ্যতার তাস খেলার কৌশল নেয় আপ। তারা বোঝাতে চায়, বিজেপি এখনও দলিতদের অস্পৃশ্য ও মন্দিরে প্রবেশাধিকার নেই বলেই মনে করে। পরে এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন কেজরীবাল। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি নেতারা বলছেন, আমি যাওয়ায় মন্দির অশুদ্ধ হয়ে গিয়েছে! এ কেমন রাজনীতি? ভগবান তো সকলের। ভগবান সবাইকে আশীর্বাদ করুন।’’
দুই শিবিরের তরজা অবশ্য এখানেই থামেনি। মনোজের পরে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সঙ্গেও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কেজরীবাল। বিদ্যুতের বিলে ছাড়, মহিলাদের জন্য সরকারি বাসে নিখরচায় যাতায়াত করার মতো একাধিক জনমোহিনী সিদ্ধান্ত গত পাঁচ বছরে নিয়েছে আপ সরকার। যার ফলে কিছুটা হলেও আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে আমজনতার। কৌশলে সেই বিষয়টি উস্কে দিয়ে দিল্লির সমস্ত মহিলাদের উদ্দেশে কেজরীবাল আলাদা করে বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘যে ভাবে আপনারা ঘরের দায়িত্ব নেন, ঠিক সে ভাবেই দেশ এবং দিল্লির দায়িত্বও আপনাদের কাঁধে। ভোট দিতে অবশ্যই যাবেন এবং ঘরের পুরষদেরও সঙ্গে নেবেন। কাকে ভোট দেওয়া ঠিক হবে, তা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাও বলবেন।’’ আপাত নির্দোষ ওই টুইটের মধ্যে যে রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে, তা বুঝেই পাল্টা আক্রমণ শানাতে নামেন স্মৃতি। তিনি বলেন, ‘‘আপনি কি মহিলাদের এতটাই অক্ষম ভাবেন যে, তাঁরা কাকে ভোট দেবেন, তা তাঁরা জানেন না?’’ পাল্টা টুইটে কেজরীবাল লেখেন, ‘‘দিল্লির মহিলারা ঠিক করে নিয়েছেন, তাঁদের এবং পরিবারের ভোট কার পক্ষে যাবে। কারণ সংসার তো তাঁদেরই চালাতে হবে।’’ শেষ পর্যন্ত দিল্লির মহিলারা কার পাশে দাঁড়ালেন, তা জানতে এখন মঙ্গলবারের অপেক্ষা।
ভোটের দিন আপ-কংগ্রেসের মধ্যেও বিরোধ বেধেছে। কংগ্রেস প্রার্থী অলকা লম্বা মজনু কা টিলা এলাকায় একটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে তাঁর সঙ্গে বচসা শুরু হয় আপ সমর্থকদের। সে সময় আপ সমর্থক এক যুবক অলকাকে উদ্দেশ করে কুকথা বলেন বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ অলকা তাঁকে চড় মারতে যান। পুলিশ এসে ওই যুবককে সরিয়ে নিয়ে যায়। আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ জানিয়েছেন, তাঁরা অলকার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy