প্রতীকী ছবি।
নববধূকে সাদা চাদরে সতীত্বের পরীক্ষা দিতে দেননি স্বামী বিবেক তমাইচিকর। নিজের জনজাতির বিপক্ষে গিয়েই বিয়েতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন তিনি। তবে লড়াইটা বিয়ের দিনই থেমে যায়নি। বিয়ের পরও মহারাষ্ট্রের কঞ্জরভাট জনজাতির সতীত্বের পরীক্ষা প্রথার বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের প্রাক্তনী বিবেক এবং তাঁর পরিচিত আরও ৭৪ জন। এত দিনে সেই লড়াইয়ের জয় হল। সতীত্বের এই পরীক্ষা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, ঘোষণা করল মহারাষ্ট্র সরকার।
বুধবার এই প্রথার বিরুদ্ধে আলোচনায় বসেন মাহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রনজিৎ পাটিল, শিবসেনার মুখপাত্র নীলম গরহেরা। সেই বৈঠকেই এই প্রথাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আলোচনা শেষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যৌন নির্যাতন হিসাবে গণ্য করা হবে ভার্জিনিটি টেস্ট... আইন এবং বিচারবিভাগীয় বিভাগের সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত। খুব তাড়াতাড়ি এটাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে ঘোষণা করে একটা সার্কুলার জারি করা হবে।’’
আরও পড়ুন: লটারিতে দেড় কোটি টাকা জিতেও এখন ফকির আজিজ
কী এই ভার্জিনিটি টেস্ট বা সতীত্বের পরীক্ষা?
মহারাষ্ট্রের কঞ্জরভাট জনজাতির মধ্যে গত ৪০০ বছর ধরে এটা প্রচলিত প্রথা। বিয়ের রাতে বধূকে প্রমাণ দিতে হবে যে তাঁর যোনি অক্ষত। কী ভাবে দিতে হবে প্রমাণ? সাদা চাদরের উপরে স্বামীর সঙ্গে যৌন সঙ্গম করে। সঙ্গমের আগে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় মুখোমুখি হতে হবে সম্প্রদায়ের কোনও মহিলার। আর সঙ্গমের পরের সকালে দাগ লাগা সাদা চাদর দেখাতে হবে রাতভর দরজার বাইরে অপেক্ষায় থাকা মোড়ল-মাতব্বরদের।
আরও পড়ুন: দুটো সেবাই তো করতে চাই, দেশের আর মেয়ের: মহম্মদ শামি
সাদা চাদরে দাগ দেখেই নববধুর কুমারীত্ব নিশ্চিত করবেন মোড়ল-মাতব্বরা। তার পরই সেই বিয়ে বৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে। আর পরীক্ষায় পাশ না করলেই বিয়ে অবৈধ। সর্বসমক্ষে নববধূকে চরম লাঞ্ছনার মুখোমুখিও হতে হবে সে ক্ষেত্রে।
বাউন্সারদের নিয়ে এ ভাবেই বিয়ে সারলেন বিবেক-ঐশ্বর্য।
গত বছর মে মাসে কঞ্জরভাট জনজাতির এই প্রাচীন প্রথার বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বিবেক। সকলের বিরুদ্ধে গিয়ে পুণের মহিলা কমিশন এবং পুলিশের সাহায্য নিয়ে স্ত্রী ঐশ্বর্যাকে বিয়ে করেন তিনি। সতীত্বের পরীক্ষা ছাড়াই। তার পর আরও অনেক প্রতিবাদীকে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে ফেলেন। তার মাধ্যমেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন এতদিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy