এবছর জুন মাস থেকেই বিয়ের গন্তব্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে খাজুরাহো। ছবি সংগৃহীত
খাজুরাহোকে বলা হয় ‘টেম্পল অফ লাভ’। যৌনতা, শারীরিক মিলন নিয়ে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করা সমাজকে তুড়িতে ওড়ানো এক প্রেমের তীর্থ। গত কয়েক মাস যাবৎ অবশ্য ভালবাসার সেই মন্দিরই ভালবাসাকে পূর্ণতাকে দেওয়ার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। খাজুরাহো এখন বিয়ের গন্তব্য। আট থেকে ১০ লক্ষ টাকা খরচ করলেই অতিমারীর নিয়ম মেনে অতিথি আপ্যায়ন করা যাবে সেখানে। কবে থেকে চালু হয়েছে এই ব্যবস্থা? স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘গত এক বছরে অতিমারীর প্রভাবে পর্যটকের আসা যাওয়া বন্ধই হয়ে গিয়েছে খাজুরাহোতে। বিদেশি পর্যটক তো আসছেনই না। দেশের পর্যটকদেরও আসা বন্ধ হয়েছে বহুদিন। তাই বিয়ের আয়োজন করেই কোনওমতে টিকে থাকতে হচ্ছে খাজুরাহোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হোটেলগুলিকে।’’
গত ১৬ মাস ধরে চলছে পর্যটকদের এই আকাল। তবে ইতিমধ্যেই ৫০টিরও বেশ বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে খাজুরাহোতে। মূলত মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশে, তামিলনাড়ু, কর্নাটক থেকেই বুকিং হয়েছে। তবে চাইলে দেশ কিংবা বিদেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে আসা অতিথিদের আপ্যায়ন করতে প্রস্তুত খাজুরাহোর বিলাসবহুল হোটেলগুলি। ৫০ জন অতিথি নিয়ে সমস্ত ধর্মীয় আচার আচরণ মেনে বিয়ে, দু’ রাত থাকা খাওয়ার সমস্ত আয়োজন করছে হোটেলগুলিই। গোটা প্যাকেজের খরচ ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা।
এ বছর জুন মাস থেকেই বিয়ের গন্তব্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে খাজুরাহো। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই আয়োজন তাঁদের বিশাল লাভের মুখ না দেখালেও টিকে থাকতে সাহায্য করছে। গত ১৬ মাসে প্রবল অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়েছিল হোটেলগুলি। বহু মানুষের চাকরি গিয়েছে। খাজুরাহোকে বিয়ের গন্তব্য হিসেবে ব্যবহার করে সেই পরিস্থিতি কিছুটা সামলানো গিয়েছে।
তবে পর্যটক না এলে শুধু বিয়ে দিয়ে যে বেশিদিন সামলানো যাবে না, সে কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন খাজুরাহোর হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অশোক গৌতম। তাঁর কথায়, ‘‘এখানেও প্রতিযোগিতা আছে। প্রতিযোগিতার কথা মাথায় রেখেই প্রথম সারির বিলাসবহুল হোটেলগুলিতেও ৩০০০-৪০০০ টাকায় ঘর ভাড়া দিতে হচ্ছে অতিথিদের জন্য। কিন্তু তাতে ঘরের অন্যান্য খরচ উঠছে না। অতিরিক্তি সেই খরচের ভার বইতে হচ্ছে হোটেলগুলিকেই।’’
তবে খাজুরাহে এসে যাঁরা বিয়ে করছেন, তাঁরা খুশি। জুনের শেষ সপ্তাহে এমনই একটি বিয়েতে যোগ দিতে বান্দ্রা থেকে আসা এক অতিথি জানাচ্ছেন, বিলাসবহুল হোটেলে খাজুরাহোর মতো জায়গায় বিয়ের অনুষ্ঠানের মেজাজই আলাদা। টাকা একটু বেশি খরচ হলেও পরিষেবায় গোটাটাই পুষিয়ে যায়।
মহারাষ্ট্র থেকে আসা এক আলোকচিত্রী জানাচ্ছেন, এই নতুন ব্যবসার ধারণাটি প্রশংসনীয়। স্থানীয় পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, এতে যদি তাঁদের কিছুটা অর্থনৈতিক সুবিধা হয়, তবে ক্ষতি কি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy