মায়ানমারে ভারতীয় সেনার অভিযান নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল খাপলাং জঙ্গিরা। দাবি করেছিল, তাদের শিবিরে নাকি আদৌ আঁচ়ড়ও কাটতে পারেনি সেনা। এখন শুধু ‘গল্প’ ছড়ানো হচ্ছে।
এ বার প্রশ্ন উঠল অভিযানের ছবি নিয়ে। অর্থাৎ চপারের সামনে দাঁড়ানো-বসা কম্যান্ডোদের যে ছবিটি ‘সেনা-সূত্রে পাওয়া’ বলে গত কাল দাবি করেছিল একটি সংবাদ সংস্থা। দেশজুড়ে হুহু করে ছড়িয়েও পড়েছিল সেই ছবি। আজ সেনা থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক— সব পক্ষই ওই ছবি প্রকাশের কথা অস্বীকার করেছে। ফলে গোটা বিষয়টি নিয়েই দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। ছবিটিতে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের সামনে বসা কম্যান্ডোদের মুখগুলো অবশ্য কম্পিউটারের কারিকুরিতে ঢেকে দেওয়া হয়। টুইটারে ওই ছবি দেওয়ার সময়ে সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থা ক্যাপশনে লিখেছিল, ‘মায়ানমারের জঙ্গি ঘাঁটিতে সফল অভিযান চালিয়ে আসা ভারতীয় সেনারা। পরিচয় গোপন রাখতে মুখগুলো ঢেকে দেওয়া হল।’
কিন্তু আজ সকালেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র সীতাংশু কর টুইটারে লেখেন, ‘পরিষ্কার করে দিতে চাই, উত্তর-পূর্বে মায়ানমার সীমান্ত বরাবর সেনা অভিযান নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এখনও পর্যন্ত কোনও ছবি প্রকাশ করেনি।’ বাঙালি আমলার এই টুইটের আগেই অবশ্য বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছিল। জঙ্গিদের কোনও কোনও গোষ্ঠী ছবিটি ভুয়ো বলে তো দাবি করেই, সেই সঙ্গে সোশ্যাল সাইটেও অনেকে লেখেন, এটি অন্য কোনও অভিযানের পুরনো ছবি। তাঁরা বলেন, ছবিটি একটি খবরের কাগজের অনলাইন সংস্করণ থেকে নেওয়া। গুগ্লে সার্চ করলে এমনিতেও সেটি পাওয়া যাবে। এর পর ছবির দায় ঝেড়ে ফেলে সেনাও। গত কাল যে সংবাদ সংস্থা ছবিটি প্রকাশ করেছিল, তাদের দাবি, সেনাবাহিনীর ডিজি (পাবলিক ইনফরমেশন)-এর কাছ থেকেই ছবিটি ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছিল তারা। সেনার অনুরোধেই ওই কম্যান্ডোদের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছিল বলে তাদের দাবি। কিন্তু ডিজি (পাবলিক ইনফরমেশন) দফতরেরই এক কর্তাকে উদ্ধৃত করে অন্য একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এমন কোনও ছবি প্রকাশের অনুমতি তারা আদৌ দেয়নি। এমনকী ওই কর্তা নাকি বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও ছবি প্রকাশের ইচ্ছেও আমাদের নেই।’’
নাগাল্যান্ডে মোতায়েন এক সেনা কর্তা অবশ্য বলেছেন, ‘‘জঙ্গলে ঝটিকা অভিযান চালানো হয়েছিল। রাতের অন্ধকারে বেশি ছবি তোলা যায়নি।’’ কিন্তু এর পরেই ওই সেনা কর্তা জুড়ে দিয়েছেন, ‘‘মায়ানমারের জমিতে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানের ছবি কূটনৈতিক কারণে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’’ তা হলে কি সেনা কম্যান্ডোরা অভিযান সেরে ভারতীয় ভূখণ্ডে ফিরে আসার পরেই ছবি তোলা হয়েছিল? নাকি চূড়ান্ত গোপনীয়তায় সেনাবাহিনীর হাতেই রয়েছে
সেই ছবি? সঠিক উত্তর কে জানে, সেটাই প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy