উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভা। পিটিআই
উপরাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচনে বিজেপি তথা এনডিএ-র প্রার্থী জগদীপ ধনখড়ের বিপক্ষে মার্গারেট আলভাকে বেছে নিয়েছে বিরোধী শিবির। কিন্তু দুই শিবিরের প্রার্থী বাছাই হয়ে গেলেও এখনও অবস্থান স্পষ্ট করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য বিরোদীদের বৈঠকে বা দিল্লিতে মঙ্গলবার আলভার মনোনয়ন পেশের সময়ে উপস্থিত ছিলেন না তৃণমূলের তরফে কেউ। তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশের পরে কালীঘাটে দলের সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য নতুন আলোচনার পরিসর তৈরি করল।
কুণাল বলেছেন, ‘‘উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের কোনও প্রার্থী নেই। এক জনকে এনডিএ বেছে নিয়েছে, আর এক জন এসেছেন কংগ্রেস থেকে। দু’জন প্রার্থী আছেন, এর মধ্যে অনেক রকম উপকরণ রয়েছে ভাবার মতো। মার্গারেট আলভা বিরোধীদের বেছে নেওয়া প্রার্থী। আবার জগদীপ ধনখড়ও সেই অর্থে আদি বিজেপির লোক নন। তিনি কংগ্রেস, জনতা দল, যুক্ত ফ্রন্ট, পরে রাজ্যপাল, যখন যে চাকরি ভাল মনে করেছেন, সেটা করেছেন। গোটা বিষয়টিই ভেবে দেখতে হবে।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, প্রশাসনিক স্তরে রাজ্যপাল ধনখড়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরোধ হলেও আলোচনা করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ‘ব্যক্তিগত ভাবে ধনখড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্যান’! তবে কুণালও উল্লেখ করেছেন, ‘‘তৃণমূল নেত্রী বৈঠক ডেকেছেন। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন ধনখড়কে ‘বিজেপির দালাল’ বলে আক্রমণ চালিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। আবার ধনখড়ও তৃণমূলের সরকারকে ‘অগণতান্ত্রিক, দুর্নীতিগ্রস্ত’-সহ নানা অভিযোগে বিঁধতে কসুর করেননি। কিন্তু এখন কুণালের মন্তব্যে ইঙ্গিত রয়েছে, ধনখড়কে ‘আদি বিজেপির লোক’ হিসেবে তাঁরা দেখছেন না।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে তিনটি পথই এখনও খোলা রয়েছে তৃণমূলের সামনে। বিরোধীদের প্রার্থী আলভাকে সমর্থন করা তুলনায় ‘সহজ’ সিদ্ধান্ত। সরাসরি ধনখড়কে সমর্থন করলে বিজেপি তথা এনডিএ-র পাশে দাঁড়ানোর রাজনৈতিক অভিঘাত মোকাবিলা করতে হবে তৃণমূলকে। আবার এই দুইয়ের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে ভোটদানে বিরত থাকার কৌশল নেওয়া যেতে পারে, সেই সম্ভাবনার কথাও আসছে তৃণমূলের অন্দরের আলোচনায়। তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতারও মত, ‘‘সিদ্ধান্ত হবে ২১ তারিখ। সময় নেওয়া হচ্ছে মানেই এই ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তার ব্যাপার আছে। সে ক্ষেত্রে ভোটদানে বিরত থাকার একটা সম্ভাবনাও থাকছে। মনে রাখতে হবে, উল্টো দিকের প্রার্থীর নাম ধনখড়! তবে সিদ্ধান্ত নেবেন মমতাই।’’
স্বভাবতই তৃণমূলের এই সময় নেওয়া ও ভাবনা-চিন্তাকে কটাক্ষ করেছেন লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। প্রার্থী আলভা এসেছেন কংগ্রেসের শিবির থেকেই। অধীরবাবুর মন্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রপতি পদে সব বিরোধী মিলে যশবন্ত সিন্হাকে প্রার্থী করার পরে তৃণমূল নেত্রী বললেন, আগে জানলে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থনের কথা ভেবে দেখতেন। এখন বিরোধীরা আলভাকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার সময়ে বৈঠকে ওঁরা ছিলেন না, সমর্থনও ঘোষণা করেননি। এখন ভাবনা-চিন্তার কথা বলছেন। বোঝা যাচ্ছে, মোদী সরকার এবং বিজেপির সঙ্গে ওঁরা তলে তলে বোঝাপড়া রেখে চলতে চান!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy