ছবি: বরুণের আপলোড করা সেই ভিডিয়ো থেকে।
‘‘তানা-শাহ আকে জায়েঙ্গে, হম কাগজ নহি দিখায়েঙ্গে...’’
২২ ডিসেম্বর নিজের লেখা এই কবিতা আবৃত্তির ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন প্রতিবাদী-শিল্পী ও গীতিকার বরুণ গ্রোভার। মাস গড়াতে না গড়াতেই দেশজুড়ে সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ‘অ্যান্থেম’ হয়ে উঠেছে বরুণের কবিতার লাইনগুলি। তার বাংলা অনুবাদ করেও প্রতিবাদে সরব হয়েছেন একাধিক বাঙালি শিল্পী। সেই ভিডিয়োও দেখেছেন বরুণ। মঙ্গলবার তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার দেখে খুব ভাল লাগছে এতজন নামী, শ্রদ্ধেয় শিল্পী এ নিয়ে সরব হয়েছেন। আমি কৃতজ্ঞ।’’
সোমবারই বরুণের কবিতার বাংলা অনুবাদের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়ায়। তাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, কঙ্কণা সেনশর্মা, রূপম ইসলাম, তিলোত্তমা সোম, চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তী, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সুমন মুখোপাধ্যায়, নন্দনা সেন, মনোরঞ্জন ব্যাপারি প্রমুখ। বরুণ বলছেন, ‘‘আমার বাংলার জ্ঞান খুবই সীমিত। তবে দেখেশুনে যেটুকু বুঝছি তা থেকে মনে হচ্ছে, ওঁরা কবিতাটিকে আরও প্রাসঙ্গিক, আরও শক্তিশালী করে তুলেছেন।’’
আরও পড়ুন: ‘বন্ধু শিল্পপতি’কে ফায়দা দিতে ডুবোজাহাজ বরাতে অনিয়ম মোদীর, দাবি কংগ্রেসের
বরুণের লেখা লাইনগুলিও শক্তি জুগিয়েছে দেশজুড়ে অসংখ্য প্রতিবাদীকে। দেশের নানা প্রান্তে মিছিলে-স্লোগানে দেখা গিয়েছে বরুণের কবিতার লাইন। সেই ‘কাগজ নহি দিখায়েঙ্গে’-র পিছনে ভাবনা কী ছিল? বরুণ জানাচ্ছেন, সরকারের নীতির প্রতিবাদ করতেই লাইনগুলি লেখা দরকার বলে মনে হয়েছিল তাঁর। বরুণের কথায়, ‘‘একটা সরকার কখনও তার নাগরিকদের অস্তিত্বকে কেবল নথির মধ্যে বেঁধে রাখতে, সীমাবদ্ধ করে রাখতে পারে না। আমার মনে হয়েছিল এটা তুলে ধরা দরকার। তাই কবিতাটা লিখি।’’
প্রকাশের পরেই সমাজমাধ্যমের সিঁড়ি বেয়ে কবিতা ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ছাত্রী দেবস্মিতা চৌধুরী ডিগ্রি ও পদক নিতে উঠে সিএএ-র প্রতিলিপি ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মঞ্চ থেকে তিনি স্লোগান দিয়েছেন বরুণেরই লেখা লাইন, ‘‘হম কাগজ নহি দিখায়েঙ্গে!’’ পরেও ভিডিয়ো-বার্তায় দেবস্মিতা বলেছেন, বরুণের কবিতা তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছে। সেই ভিডিয়োগুলি পাঠানো হলে তা দেখে বরুণের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যা প্রতিক্রিয়া আমি পেয়েছি, তাতে আমি খুবই ভাল লাগছে। আশা করি আরও বহু মানুষ, বহু শিল্পী তাঁদের ভাষায় এই স্বরে স্বর মেলাবেন।’’
বরুণ তাঁর ভিডিয়ো দেখেছেন জেনে খুশি দেবস্মিতাও। তিনি বলছেন, ‘‘আমি কৃতজ্ঞ উনি এমন একটা কবিতা লিখেছেন বলে। আমার কাছে এগুলোই দেশপ্রেমের প্রকাশ। এখন যেভাবে একবগ্গা ধারণার ভিত্তিতে ‘দেশপ্রেমী’, ‘দেশবিরোধী’ তকমা দেওয়া হয়, এই লাইনগুলো সেই বিভাজনের থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।’’
দেশের নাগরিকদের বিভাজনের বিরুদ্ধেই তাঁর এই কবিতা বলে জানিয়েছেন বরুণও। তাঁর বার্তা, ‘‘আমরা নাগরিক। আমরা ভারতীয়। আমার কোনও বিভাজক নীতির মাধ্যমে আমাদের অধিকার কেড়ে নিতে দেব না।’’ বরুণের এই স্বরই দেশের যুবসমাজের অনেকের স্বর। তাঁদেরই একজন, দেবস্মিতার কথায়, ‘‘বরুণ যা লিখেছেন, তাই আমাদের মন কি বাত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy