বহরমপুরে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ উঠল। গুজরাতের বরোদা পুরসভার অন্তর্গত একটি জমি তিনি বেআইনি ভাবে দেওয়াল তুলে ঘিরে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বরোদা পুরসভা এ বিষয়ে পাঠানকে একটি নোটিসও পাঠিয়েছে। দ্রুত দেওয়াল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে তাঁকে।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন ইউসুফ। পাঁচ বারের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে হারিয়ে নজির গড়েছেন তিনি। পিটিআই জানিয়েছে, গত ৬ জুন বরোদা পুরসভা পাঠানকে একটি নোটিস পাঠিয়েছে। ঘটনাচক্রে, ভোটের ফল প্রকাশিত হয়েছে ৪ জুন। অর্থাৎ, বহরমপুরে জেতার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ইউসুফের কাছে গিয়েছে বিজেপি পরিচালিত পুরসভার নোটিস।
যে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে ইউসুফের বিরুদ্ধে, সেটি পুরসভার মালিকানাধীন। বরোদার এক বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় পওয়ার জানিয়েছেন, ২০১২ সালে এই জমি কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ইউসুফ। সে সময়ে পুরসভার অনুমতি পেয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু গুজরাতের তৎকালীন সরকার পুরসভার প্রস্তাবে ‘না’ করে দেয়। ওই জমি ইউসুফের বাড়ির লাগোয়া বলেও জানিয়েছেন পওয়ার। তাঁর মন্তব্যের পর বরোদা পুরসভার তরফেও ইউসুফকে নোটিস দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে।
বরোদা পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপার্সন শীতল মিস্ত্রি জানিয়েছেন, ৯৭৮ বর্গমিটারের একটি জমি ইউসুফের কাছে বিক্রির প্রস্তাব ২০১২ সালে নাকচ করে দিয়েছিল গুজরাত সরকার। তার পর সেই জমি বর্তমানে দখল করার অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে। তাই তাঁর কাছে পুরসভার তরফে নোটিস গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমরা খবর পেয়েছি, ওই জমিতে দেওয়াল তুলছেন ইউসুফ। তাই ৬ তারিখে আমরা ওঁকে একটি নোটিস পাঠাই। দেওয়াল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। আমরা দু’সপ্তাহ অপেক্ষা করব। তার পর পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাবব। এই জমি পুরসভার, আমরা এটা ফেরত নেব।’’
এর আগে বিজেপি কাউন্সিলর জানান, ২০১২ সালে ইউসুফের বাড়ি যখন নির্মীয়মাণ অবস্থায় ছিল, সেই সময়েই সংলগ্ন এই জমিটি চড়া দামে কিনে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। প্রতি বর্গমিটারে ৫৭ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন তিনি। পুরসভার বোর্ডের বৈঠকে সেই প্রস্তাব পাশ হয়। কিন্তু সরকার শেষ পর্যন্ত জমি বিক্রির অনুমতি দেয়নি। জমি দখল হয়ে যাওয়ার খবর পুরসভাকে তিনিই দিয়েছেন বলে জানান কাউন্সিলর। এ বিষয়ে তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এ বারের নির্বাচনে তৃণমূলের অন্যতম চমক ছিলেন ইউসুফ। গুজরাত থেকে তাঁকে বাংলায় নিয়ে এসে ভোটের টিকিট দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অধীরের ‘গড়’ বহরমপুরে তিনি হয়ে উঠেছেন দলের তুরুপের তাস। ৫২ হাজারের বেশি ভোটে তিনি অধীরকে হারিয়ে দিয়েছেন। এই জয়ের জন্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরোয়া বৈঠকে তাঁকে ‘জায়েন্ট কিলার’ আখ্যাও দেন। তবে দেখা গেল, ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই গুজরাতের পুরসভা থেকে নোটিস গেল সেই ইউসুফের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy