Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
National news

পুলিশের গুলিতে হত অভিযুক্ত, জনতার পাথরে স্ত্রী, ১০ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে উদ্ধার ২০ পণবন্দি শিশু

উত্তেজিত জনতার হাত থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। শুক্রবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

তখনও মুক্তি পায়নি শিশুরা। সুভাষ বাথামের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

তখনও মুক্তি পায়নি শিশুরা। সুভাষ বাথামের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:২৫
Share: Save:

দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে গ্রামবাসী-পুলিশ আর এ পারে বন্দি আতঙ্কিত শিশুরা। মাঝে বন্দুক উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে যেন সাক্ষাৎ ‘যম’। কখনও কানফাটা গুলির শব্দ, কখনও বোমার আঘাতে কেঁপে উঠছে এলাকা। টানা ১০ ঘণ্টা ধরে চলল রুদ্ধশ্বাস লড়াই। শেষে রাত দেড়টা নাগাদ পুলিশের গুলিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর আতঙ্কিত পণবন্দি শিশুদের উদ্ধার করল পুলিশ। মাঝে সময়টা ছিল দমবন্ধ করা পরিস্থিতি।

বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদ জেলার মহম্মদাবাদে নিজের সন্তানের জন্মদিন পালনের অছিলায় এ ভাবেই গ্রামের ২০ জন শিশুকে পণবন্দি করে রাখেন সুভাষ বাথাম নামে ওই ব্যক্তি। পুলিশের হাজার বোঝানোর সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিতে বাগে আনা যায়নি। তাঁকে বাগে আনতে রীতিমতো হিমশিম খেল পুলিশ। মাঠে নামাতে হল কানপুর পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনী এবং এনএসজি কম্যান্ডোদেরও। শেষে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপরই শুক্রবার ভোর রাতে পণবন্দি শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুদের উদ্ধারের পর ওই ব্যক্তির স্ত্রীর উপর জনতার রোষ আছড়ে পড়ে। পুলিশের সামনেই ইট-পাথর ছুড়ে তাঁকেও পিটিয়ে মারেন উত্তেজিত জনতা।

পুলিশ জানিয়েছে, উত্তেজিত জনতার হাত থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। শুক্রবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: চিনে মৃত বেড়ে ২১৩, জরুরি অবস্থা ঘোষণা করল হু

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, শিশুদের পণবন্দি করার যে ছক তাঁর স্বামী কষেছিলেন, ওই মহিলাও তাতে যুক্ত থাকতে পারেন। সে কারণেই পুলিশের গুলিতে তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ছুটে পালানোর চেষ্টা করে থাকতে পারেন। তাঁকে ছুটে পালাতে দেখেই গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং তাঁকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। ক্রমাগত ছোড়া পাথরের ঘায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি।

আরও পড়ুন: নিয়ম ভাঙায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বিমানবন্দরে, রিপোর্ট দিল্লিতে

সুভাষ বাথাম নামে ওই ব্যক্তি প্যারোলে মুক্ত এক খুনের আসামি। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টের সময় সন্তানের জন্মদিন উপলক্রে গ্রামের কয়েকটি শিশুকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অনেকটা সময় পরেও তাঁর বাড়ি থেকে কোনও শিশু নিজের বাড়িতে না ফিরলে গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। বিকেল ৫টা নাগাদ তাঁরা যখনই শিশুদের নিতে সুভাষের বাড়ির সামনে হাজির হন। গ্রামবাসীদের দেখে গুলি ছুড়তে শুরু করেন তিনি। বেগতিক বুঝে পুলিশে খবর দেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: নির্ভয়া কাণ্ডে দণ্ডিত পবন ফের সুপ্রিম কোর্টে

কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়। পুলিশের ভ্যান দেখেই গুলি চালাতে শুরু করেন সুভাষ। জানা যায় যে, ২০টি শিশুকে নিজের বাড়িরই একটা ঘরে পণবন্দি করে রেখেছেন তিনি। সেই ঘরে তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানকেও বন্দি করে রেখেছেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ক্রমাগত গুলি এবং বোমা ছুড়তে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। আর বারবারই বলতে থাকেন যে, তিনি কোনও অপরাধ করেননি। তাঁর ছোড়া গুলিতে এক পুলিশ কর্মী এবং স্থানীয় ব্যক্তি জখম হন।

আরও পড়ুন: আগামী অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ, জানাল আর্থিক সমীক্ষা

পুলিশ প্রথমে তাঁকে বুঝিয়ে শিশুদের মুক্ত করার চেষ্টা করে, তাতে রাত ১০টা নাগাদ এক বছরের এক শিশুকে মুক্তি দেন। কিন্তু আর কাউকে ছাড়তে রাজি হননি। প্রায় ১০ ঘণ্টা পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয় তাঁর। রাত দেড়টা নাগাদ পুলিশের গুলিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হলে, বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন উত্তেজিত জনতা। বন্দি সমস্ত শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, সে সময়েই ওই ব্যক্তির স্ত্রী সকলের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করেন। তখনই গ্রামবাসীরা তাঁর উপরে চড়াও হন। ওই ব্যক্তির মানসিক সমস্যা থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। পুরো সময়টায় তিনি মদ্যপ ছিলেন।

এমন কাণ্ড ঘটানোর পিছনে তাঁর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে তা এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। শিশুদের মুক্তির বিনিময়ে সরকারের কাছে তাঁর কোনও দাবি রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। কিন্তু বাথাম কারও সঙ্গেই কথা বলতে রাজি হননি। জানা গিয়েছে, এর আগে বাথামা নিজের বাড়ির কিছু সমস্যার কথা জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি লিখেছিলেন। তাতে তিনি শৌচালয়ের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। ঘটনার সময় তিনি একবার স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে কথা বলতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু বিধায়ক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তিনি আর তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনায় বসতে চাননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Hostage Uttar Pradesh Crime Lynching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy