অখিলেশ যাদব এবং যোগী আদিত্যনাথ। —ফাইল চিত্র।
হাতে রইল ধর্মীয় মেরুকরণ!
উত্তরপ্রদেশের মুল দুই যুযুধান দল, বিজেপি এবং সমাজবাদী পার্টির প্রচারের গতিপ্রকৃতি দেখে এমনই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, গত পাঁচ বছরে প্রশাসন, উন্নয়ন এবং প্রগতি নিয়ে বলার মতো হাতে বিশেষ কিছু নেই যোগী আদিত্যনাথের। অন্য দিকে, মাস তিনেক আগে পর্যন্ত রণাঙ্গন থেকে কার্যত অদৃশ্যই ছিলেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব। তাঁর পূর্ব মেয়াদকালেও (২০১২-১৭) এমন কিছু কৃতকর্ম নেই যা বুক বাজিয়ে বলে এ বারের ভোট বৈতরণী পার হওয়া যাবে। অতএব দু’পক্ষেরই চেষ্টা, ধর্মের ভিত্তিতে মেরুকরণ করে ভোটব্যাঙ্ক করায়ত্ত করা।
যোগী আদিত্যনাথ রবিবার বলেছেন, “অযোধ্যায় গৌরবোজ্জ্বল রাম মন্দির নির্মাণ করা হচ্ছে। কাশী বিশ্বনাথ করিডরের কাজ শেষ। গাজ়িয়াবাদে কৈলাস মানস সরোবর ভবন তৈরির কাজ চলছে। আগে নিয়ম অমান্য করে এখানে হজ হাউস তৈরির প্রয়াস হয়েছিল। আজ হজ হাউস নয়, এখানে কৈলাস মানস সরোবর ভবন হয়েছে। এ কারণেই বলছি ফারাকটা (দুই দলের মধ্যে) যথেষ্ট স্পষ্ট।” জানা গিয়েছে, ইন্দিরাপুরমে ভবনটি তৈরি হয়েছে মানস সরোবরের তীর্থযাত্রীদের বিশ্রামের জন্য। এখানেই না থেমে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “২০১২ সালে সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় আসার পর তাদের প্রথম সিদ্ধান্তই ছিল, রামজন্মভূমির উপর হামলা চালানো সমস্ত সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা। মাফিয়াকে প্রতিরক্ষা দেওয়া। রাজ্যে ধারাবাহিকভাবে সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরি করা। বিজেপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে, তা মানুষ বুঝতে পারার পরই অশান্তি বন্ধ হয়।”
অন্য দিকে, সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অখিলেশের বক্তব্য, দেশের আসল শত্রু চিন। পাকিস্তান ভারতের ‘রাজনৈতিক শত্রু’। ভোট রাজনীতির জন্য পাকিস্তানকে নিশানা করছে বিজেপি। তাঁর এ হেন মন্তব্যের পরেই পাল্টা প্রতিক্রিয়া এসেছে। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের বক্তব্য, এসপির যাত্রা শুরু হয়েছিল জিন্না থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই তারা এখন পাকিস্তানে এসে পৌঁছেছে।
অখিলেশকে প্রশ্ন করা হয়, দেশে চিনা বিনিয়োগ নিয়ে তাঁর কী মতামত? জবাবে পাকিস্তানকে টেনে এনেছেন এসপি নেতা। বলেছেন, “এ ব্যাপারে রাম মনোহর লোহিয়া এবং মুলায়ম সিংহ যাদবের স্পষ্ট মতাদর্শ রয়েছে। আসল শত্রু হল চিন। পাকিস্তান আমাদের রাজনৈতিক শত্রু। বিজেপি কেবল পাকিস্তানকে নিশানা করে ভোটে ফায়দা তোলার জন্য।” সম্বিত পাল্টা বলেছেন, “যাঁর জিন্নার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক, তিনি কী ভাবেই বা পাকিস্তানকে অস্বীকার করতে পারেন! অখিলেশের যদি কোনও নীতিবোধ এখনও থাকে, এই মন্তব্যের জন্য তাঁর অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
মেরুকরণের এই লড়াই শুরু হয়েছিল তিন মাস আগেই। নভেম্বরে জওহরলাল নেহরু এবং সর্দার বল্লভভাই পটেলের সঙ্গে মহম্মদ আলি জিন্নাকে একাসনে বসিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন অখিলেশ। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সংখ্যালঘু মনকে কাছে টানতে তাঁর এই মরিয়া প্রয়াস। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মেরুকরণ করে হিন্দু ভোটকে সংহত করতে নামেন যোগী আদিত্যনাথ। জানান, তাঁর লক্ষ্য অতীতের অবিভক্ত ভারতকে নতুন করে গড়ে তোলা। কেবল পাকিস্তান নয়, আফগানিস্তানের মাটিতেও ভারতের তেরঙা পতাকা ওড়ানোর সংকল্প রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের। গোড়াতেই ভোট প্রচারে বেরিয়ে যোগী বলেছিলেন, তালিবান ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের উপরে বোমা ফেলার জন্য তৈরি রয়েছে বায়ুসেনার বিমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy