ভারতে আসার পর বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন বিদেশ দফতরের উপ-সচিব স্টিফেন বিগান (বাঁ দিকে)।
চিন প্রসঙ্গে স্বরের তারতম্য দেখা যাচ্ছে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে। ওয়াশিংটন যতটা আক্রমণাত্মক, নয়াদিল্লি প্রকাশ্যে ততটা নয়। এই পরিস্থিতিতে আজ থেকে ভারত সফর শুরু করলেন মার্কিন বিদেশ দফতরের উপসচিব স্টিফেন বিগান। আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার সংঘাতময় পরিস্থিতি।
সম্প্রতি ভারত, আমেরিকা জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার চতুর্দেশীয় অক্ষের (কোয়াড) বৈঠকের পরে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে চিন প্রশ্নে দু’দেশের কৌশলের ফারাক। কোয়াডের বৈঠকের পরে দেওয়া বিবৃতিতে, কোভিড থেকে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে আমেরিকার মতো চিনের নাম করে আক্রমণ করতে দেখা যায়নি ভারতকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ বিগানের সফরের ঠিক আগে, আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তারানজিৎ সিংহ সাধু একটি টুইট করে বলেছেন, “আমরা আমেরিকাকে অনুরোধ করছি স্বল্পমেয়াদী কোনও লাভ নয়, বরং দূরে তাকিয়ে স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটতে। “কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিজস্ব চিন-বিরোধিতার কর্মসূচিতে নাম লেখাতে নারাজ সাউথ ব্লক।
সামনেই আমেরিকায় ভোট। তার পর সে দেশের চিন-নীতি কী হতে চলেছে তার কোনও আন্দাজ এখন করা সম্ভব নয়। এক বিশেষজ্ঞের মতে, ‘‘ভারত চিনকে চাপে রাখতে আমেরিকার সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সখ্যকে কাজে লাগাতে পারে। কিন্তু আমেরিকার চিন-বিরোধিতাতে নিজেদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে চায় না।’’ কূটনৈতিক শিবির অবশ্য এটাও বলছে, তাত্ত্বিক ভাবে বিষয়টি শুনতে নিখুঁত লাগলেও বাস্তবে তা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
দু’দিন আগেই ভারত সীমান্তে চিনা ফৌজের তৎপরতা নিয়ে প্রবল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) ৬০ হাজার চিনা সেনার উপস্থিতির কথা জানিয়ে বেজিংয়ের ‘আগ্রাসন’ নিয়ে সরব হয়েছেন। অন্য দিকে, আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও ব্রায়েনের অভিযোগ, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে শান্তি স্থাপনের সদিচ্ছা চিনের নেই। তাদের উদ্দেশ্য, গায়ের জোরে এলএসি সংলগ্ন এলাকা দখল করা।’’ এই দু’ক্ষেত্রেই নীরব থেকেছে বিদেশ মন্ত্রক। সীমান্তের ওপারে চিনের শীতকালীন প্রস্তুতি এবং সেনা বাড়ানো নিয়ে অভ্যন্তরীণ স্তরে প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কিন্তু আমেরিকা যাতে ভারতের কাঁধে বন্দুক না রাখতে পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকা হচ্ছে বলে সূত্রের দাবি। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করতে আজ থেকে বিগানের দু’দিনের নয়াদিল্লি সফর শুরু হল। এক দিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন তাঁরা। পাশাপাশি চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে ‘টু প্লাস টু’ (দু’দেশের বিদেশ এবং প্রতিক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের) প্রস্তুতি নিয়েও কথা হবে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy