ফাঁসির আগে শেষ ইচ্ছা কী, শাহজাদির কাছে জানতে চেয়েছিলেন আবু ধাবির ওয়াথবা জেল কর্তৃপক্ষ। জানিয়েছিলেন শাহজাদি। তার পরেই রবিবার উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলার বাড়িতে ফোনটা এসেছিল। ফোনের ও পারে কান্নায় ভেঙে পড়েন ৩৩ বছরের মহিলা। বাবা শাবির খানকে বার বার বলতে থাকেন, ‘‘আর কখনও কথা হবে না তোমাদের সঙ্গে!’’ শাবিরের তখন দিশাহারা অবস্থা। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েকে বাঁচাতে সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। যদিও শাহজাদির হাতে সময় কম। সোমবার আবু ধাবির জেলে ফাঁসি হওয়ার কথা তাঁর।
উত্তরপ্রদেশের বান্দায় গয়রা মুলগি গ্রামে থাকতেন শাহজাদি। ছোটবেলায় রান্নাঘরে কাজ করতে গিয়ে মুখ, শরীরের অংশ পুড়ে গিয়েছিল। ২০২০ সালে সমাজমাধ্যমে আগরার যুবক উজ়েরের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল শাহজাদির। অভিযোগ, তাঁকে বিয়ে করে চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ভাল করে রাখবেন বলেও দাবি করেছিলেন। ২০২১ সালে শাহজাদি উজ়েরের সঙ্গে আগরা পালিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগরায় এক দম্পতির কাছে শাহজাদিকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন উজ়ের। ২০২১ সালে ওই দম্পতি শাহজাদিকে আবু ধাবি নিয়ে গিয়েছিলেন। বান্দার আদালতের নির্দেশে উজ়ের এবং ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মানবপাচারের মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই দম্পতি ফৈজ এবং নাদিয়া এখন দুবাইয়ে থাকেন।

শাহজাদি। ছবি: সংগৃহীত।
আবু ধাবিতে গিয়ে ওই দম্পতির চার মাসের সন্তানকে দেখভালের দায়িত্ব ছিল শাহজাদির। শিশুটির হঠাৎই মৃত্যু হয়। ওই দম্পতি শাহজাদির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেন। এর পরে তদন্ত করে আবু ধাবি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। আদালত তাঁকে ফাঁসির সাজা দেয়। শাহজাদির বাবা শাবির জেলাশাসকের কাছে মেয়েকে বাঁচানোর আবেদন করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেন। তিনি এবং শাহজাদি বার বার আবু ধাবির আদালতে দাবি করেন, চিকিৎসায় গাফিলতির কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল। যদিও আদালত মানেনি।
আরও পড়ুন:
মৃত্যুর আগে শাহজাদির কাছে শেষ ইচ্ছা জানতে চেয়েছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ। তিনি জানান, বাড়িতে এক বার ফোন করে কথা বলতে চান। সেই ইচ্ছাই পূরণ করেন কর্তৃপক্ষ। রবিবার শেষ ফোনটি তিনি করেন বান্দার বাড়িতে। বাবা শাবিরের সঙ্গে কথা বলার সময় হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন। সূত্রের খবর, ফোনটা পেয়েই আবার কেন্দ্রীয় সরকার, রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন আবেদন জানিয়েছেন শাহজাদির বাবা। যদিও পরিবারের একটি সূত্র বলছে, সময় খুব কম। তাই আশা দেখছে না তারা।