বিসমিল্লার প্রয়াণের পর কয়েক বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর বাড়ি অধিগ্রহণ করে মেরামত করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু পরিবারের সদস্যেরা একমত হতে পারেননি এখনও। বিসমিল্লার এক প্রপৌত্রের কথায়, ‘‘অনেকে বলছে সরকারের হাতে তুলে দিতে। আবার অনেকে বলছে, আমরা নিজেই মেরামত করে নিই। এবার পরিবারের সকলে বসে কথা বলে একটা কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
ভোটের বারাণসীতে ঈশ্বরের সঙ্গে সুরের সুতোয় বাঁধা পড়ল হিন্দু-মুসলিম। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ঠিক দেখছি তো? এত মলিন, এত শতচ্ছিন্ন, এত আটপৌরে বাড়ি? বারাণসী শহরের গলির গলি তস্য গলির ভিতরে। ইতস্তত ছড়িয়ে জঞ্জাল। কোথাও কোথাও জঞ্জালের বিশাল স্তূপ। এত জনমানবহীন যে, দিনের বেলাতেও চলতে-ফিরতে খানিকটা অস্বস্তি হয়।
উপরে তাকালে আকাশ দেখা যায় না। মাথা তুললে শুধু তারের জঙ্গল। সেই গলির একপ্রান্তে বাড়িটা। বারাণসীর এক হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত যে বাড়িতে জীবন কাটিয়ে গিয়েছেন বিসমিল্লা খান। ভারতরত্ন বিসমিল্লা খান।
কিংবদন্তি সানাইবাদক দুনিয়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন ২০০৬ সালের অগস্টে। ২০০১ সালে তাঁকে ‘ভারতরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করেছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। ১৯৫৬ সালে তিনি পেয়েছিলেন সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি সম্মান। ১৯৬১ সালে ‘পদ্মশ্রী’। ১৯৬৮ সালে ‘পদ্মভূষণ’। ১৯৮০ সালে ‘পদ্মবিভূষণ’। ১৯৯৪ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির ‘ফেলোশিপ’।
ব্রিটিশ ভারতে গোঁড়া মুসলিম পরিবারে জন্ম বিসমিল্লার। জন্মদত্ত নাম ছিল ‘কামরুদ্দিন’। কিন্তু পুত্রসন্তান হওয়ায় সানাইবাদক ঠাকুর্দা বলে ফেলেন, ‘‘বিসমিল্লা!’’ অর্থাৎ, আল্লাহর নামে। সেই থেকেই তিনি ‘বিসমিল্লা’। মাত্র ৬ বছর বয়সে বারাণসীতে চলে এসেছিলেন। মামা আলি বক্স ‘বিলায়েতু’ খান ছিলেন কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের সানাইবাদক। তাঁর কাছেই সানাই শেখা শুরু বিসমিল্লার। তাঁর সঙ্গে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ‘ইলাহাবাদ মিউজিক কনফারেন্স’-এ যান কিশোর সানাইবাদক বিসমিল্লা।
৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হন বিসমিল্লা। তাঁর প্রয়াণে একদিন জাতীয় শোক ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁর নশ্বর দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল বারাণসীর ফতেহমান গোরস্থানে। ভারতীয় সেনা একুশ তোপধ্বনিতে বিদায় জানিয়েছিল বৃদ্ধ সানাইবাদককে। বিসমিল্লার সঙ্গেই মাটি দেওয়া হয়েছিল তাঁর প্রিয় একটি সানাইকেও।
এমন যাঁর এলেম, যাঁর ঝুলিতে এত সম্মান, তিনি থাকতেন এই বাড়িতে? যে বাড়িও নাকি গুঁড়িয়ে দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বারাণসী নগর নিগম। সত্যিই তা-ই?
মেটে গোলাপি রঙের বাড়িটা। সেই রঙেরই দরজা-জানালা। জানালায় আদ্যিকালের মোটা মোটা লোহার গরাদ। দরজার পাশে একটা লেটার বক্স ঝুলছে। উপরে লেখা ‘উস্তাদ নাইয়ার হুসেন খান বিসমিল্লা, সন অব ভারতরত্ন উস্তাদ বিসমিল্লা খান, সিকে ৪৬/৬২ সরাই হারাহা’।
বারাণসী শহরের গদৌলিয়া চওক (‘গোধূলিয়া চক’ নয়। ওটা অপভ্রংশে বাঙালি উচ্চারণ) থেকে নয়ি সড়ক ধরে খানিক এগিয়ে একটা সাদা রঙের মসজিদ। সেই রাস্তা ধরে এগিয়ে গিয়ে খানিকটা ঘুরে আবার সম্ভবত সেই মসজিদেরই পিছনে সরাই হারাহা এলাকা। বাইরের রাস্তায় রিকশ থামিয়ে প্রশ্ন করলাম, উস্তাদ বিসমিল্লা খানের বাড়ি? মোটর সাইকেলের উপরে বসে মোবাইল দেখতে ব্যস্ত দুই তরুণ হাত তুলে এবং স্ক্রিন থেকে মুখ না-তুলে বাঁদিকের একটা গলি দেখিয়ে দিলেন।
গলির ভিতরে তো বুঝলাম। কিন্তু কত ভিতরে? এক প্রবীণ বেরোচ্ছিলেন। বোধহয় অসহায়তা বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁকে অনুরোধ করায় তিনি নিয়ে চললেন ভিতরে। আরও ভিতরে। আরও আরও ভিতরে। এবং অবশেষে পৌঁছনো গেল বিসমিল্লা খানের বাড়ির সামনে। সামনে, ভিতরে নয়। কারণ, বাড়ির দরজায় তালা। চারদিকে কাউকে দেখা-টেখাও যাচ্ছে না।
কী করি-কী করি ভাবছি। আচমকাই পাশের অন্য একটা দরজা খুলে আবির্ভূত হলেন এক মধ্যবয়সী। যিনি নিজের নাম বললেন মহম্মদ সিবতায়েন। পরিচয় দিলেন বিসমিল্লার নাতি বলে। কালো ফুলস্লিভ টি-শার্ট এবং চেক-চেক পাজামা পরিহিত সিবতায়েন জানালেন, বারাণসী পুরনিগম আদৌ এই বাড়ি ভেঙে ফেলবে বলে জানায়নি। তিনি নিজেই এই বাড়ির সংস্কার করবেন বলে ঠিক করেছেন। সিবতায়েনের কথায়, “৮০ বছরের পুরোন বাড়ি। ভেঙে পড়ছে বিভিন্ন জায়গায়। কাউকে না কাউকে তো সারাতেই হবে। আমিই সারাব বলে ঠিক করেছি। বিসমিল্লা খানের ঘরটা উপরে। ওটা একই রকম থাকবে। ওখানে একটা মিউজিয়াম হবে। সেখানে ওঁর সমস্ত সানাই থাকবে। ছবি থাকবে। সেগুলো এখন প্যাক করে রাখা আছে।’’
সিবতায়েনের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই উদয় হলেন এক যুবক। তিনি বিসমিল্লার নাতির ছেলে। যাঁর হাতের চাবিতেই খুলে গেল লেটারবক্সের পাশের দরজা। দোহারা চেহারার যুবক ফাকির রেজা হাত বাড়িয়ে বললেন, ‘‘যান, ভিতরে যান। কেউ দেখা করতে এলে নানা এই ঘরে বসেই কথা বলতেন। ইন্টারভিউ দিতেন। এটা ছিল ওঁর মিটিং রুম।’’
অতিথিকে বসানোর মতো ঘরই বটে। দরজার পাশে একটা নড়বড়ে তক্তপোশ। উপরে একটা জ্যালজ্যালে চাদর পাতা। তক্তপোশের নীচে পাথরের উপর বসানো একটা মর্চে-ধরা লোহার ট্রাঙ্ক। তার উপরে একটা সাদা চাদরের লজ্জানিবারণী আবরণ। তক্তপোশের উপরের নীল রঙের দেওয়ালে নোনা ধরেছে। সেখান থেকে ঝুলছে বিসমিল্লার হলদেটে হয়ে যাওয়া ফ্রেমে বাঁধানো ছবি।ঘরের অন্যপ্রান্তে একটা মাঝারি মাপের ডেজার্ট কুলার দাঁড়িয়ে। তার পাশের দেওয়ালে তিনটে তাক। ফাঁকা। কুলারের অন্য পাশের দেওয়ালে বিসমিল্লাকে নিয়ে ছাপা পোস্টার। ফ্রেমে বাঁধানো আর একটা ছবি। তক্তপোশটার সমকোণে আরও একটা বসার জায়গা। খুব উদার হয়েও যাকে ‘সোফা’ বলতে পারলাম না। তক্তপোশ আর সেই প্রায়-সোফার মাঝামাঝি একটা বাঁশের ঠেকনো। যা দিয়ে ঘরের পড়ো-পড়ো ছাদটা ধরে রাখা হয়েছে। সাদা রঙের ছাদের দু’প্রান্তে দুটো সিলিং ফ্যান।
সেই ঘর থেকে বেরিয়ে সরু সিঁড়ি বেয়ে তিনতলার ছাদে। যে ছাদের একপাশে বিসমিল্লার চিলতে ঘর। শীতের দুপুরে যে ছাদে চারপাইয়ে শুয়েবসে রোদ পোহাতেন তিনি। গরমকালে বসতেন সূর্য ডোবার পরে। দিনে পাঁচ ওয়ক্ত নমাজ পড়তেন ওই ছাদেই। আর নিজের ঘরে সময়ে-অসময়ে রেওয়াজ করতেন। হঠাৎ হঠাৎ কোনও নিঝুম রাতে মহল্লা তোলপাড় করে বেজে উঠত পাগলা সানাইয়ের সুর। অসুস্থ হওয়া এবং কালক্রমে প্রয়াণের ছ’বছর আগেও দিনে দু’ঘণ্টা রেওয়াজ করেছেন। আর তার আগে? বিসমিল্লার নাতি বলছেন, ‘‘যৌবনে দিনে আট থেকে দশ ঘণ্টা রেওয়াজ করতেন রোজ। কঠিন পরিশ্রম করেছেন। উনি তো সাধক ছিলেন।’’
ঘর? এটা ঘর? ভারতরত্নের ঘর?
ভিতরের রং হাল্কা সবুজ। দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। দরজা-জানালার রং-ও সবুজ। তবে গাঢ় সবুজ। দুটো দরজা। একটা দরজার মুখোমুখি একটা দড়ির চারপাই রাখা। ওই চারপাইটাই ছিল বিসমিল্লার জগৎ। সেটায় বসে তিনি নাস্তাও করতেন। সানাইও বাজাতেন। চারপাইয়ের পাশে একটা কাঠের প্রাচীন চেয়ার। দেওয়াল জোড়া বিসমিল্লার বিভিন্ন ছবি। চারপাইয়ের উপর একটা ইলেকট্রিক তানপুরা রাখা। মানে চৌকোনা যে বাক্স থেকে যন্ত্রবাহিত তানপুরার আওয়াজ বেরোয়। রেওয়াজ করার সময় বা খালিগলায় গান গাওয়ার সময় সঙ্গত করার জন্য। জানা গেল, ওই ইলেকট্রিক তানপুরা ব্যবহার করেন নাসির আব্বাস বিসমিল্লা। ভারতরত্নের নাতি। যিনি বিসমিল্লার ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন। তাঁর নিজের একটি ক্লাসিক্যাল সানাইয়ের দল রয়েছে। নাসির বাড়িতে ছিলেন না। ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দিলেন আর এক নাতি। সঙ্গে দিলেন নাসিরের ভিজিটিং কার্ড। যাতে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে— ‘ক্যারিয়িং দ্য ট্র্যাডিশন অব ভারতরত্ন বিসমিল্লা খান’। ভারতরত্ন বিসমিল্লা খানের ঐতিহ্য বহনকারী।
রোজ সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে এই ঘরে রেওয়াজ করতে বসেন নাসির। ওই চারপাইয়ে বসেই রেওয়াজ করেন? অর্বাচীন প্রশ্ন শুনে বিস্মিত হন বিসমিল্লার আর এক নাতি। বলেন, ‘‘তওবা, তওবা! ওই চারপাইয়ে আর কেউ বসতে পারে! ওহ্ তো দাদাজি কা হ্যায়। ওটায় আর কারও বসার অধিকার নেই। ওটা উনি যেমন রেখে গিয়েছেন, তেমনই থাকবে।’’ শুনে মনে পড়ল, ঠিকই তো! এ তো সাধকের মন্দির। নইলে ঘরে ঢোকার আগে পরিবারের প্রত্যেকে চৌকাঠে হাত ছোঁয়ান? যেন ওই চারপাইয়ে এখনও বসে আছেন নবতিপর উস্তাদ। যেন পরিবারের প্রত্যেক সদস্য তাঁর হাঁটু ছুঁয়ে, ঝুঁকে পড়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
ঘরের মেঝে জুড়ে একটা আটপৌরে চাদর পাতা। সেখানেই বসে রোজ সকালে সানাইয়ের রেওয়াজ করেন বিসমিল্লার ঐতিহ্য বহনকারী পৌত্র নাসির। ঘরের বাইরে একটা বিশাল নীল তোরঙ্গ। বিসমিল্লার ছেড়ে-যাওয়া সবকিছু সেই তোরঙ্গেই তালাবন্ধ করে রাখা আছে। দরজার বাইরে একটা চিলতে জায়গা। তার ডানপাশে একটা বন্ধ দরজা। কালো রঙের। যা খুললে ছাদের অপরপ্রান্তে যাওয়া যায়। দরজাটা কাঠের। দরজার পাল্লাগুলো পিচবোর্ডের। চারদিক থেকে ঝুলে আছে অভাবনীয় মামুলিয়ানা।
কথা বলতে বলতে ক্রমশ জড়ো হচ্ছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যেরা। আর জড়ো হচ্ছিল টুকরো-টুকরো স্মৃতি। যেমন, ‘‘নানাজি কোনও অনুষ্ঠানের পর ফিরে এসে সকলকে টাকা ভাগ করে দিতেন।’’ যেমন, ‘‘ওঁকে অনেকবার এই বাড়ি ছেড়ে আরও ভাল জায়গায়, এমনকি অন্য রাজ্যেও গিয়ে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নানাজি যাননি। উনি বলতেন, এই বারাণসীই আমার বাড়ি। আমি বারাণসী ছেড়ে কোথাও যাব না। অন্য কোথাও গিয়ে শান্তি পাব না।’’ যেমন, ‘‘নিজের অনেক সানাই বিলিয়ে দিয়ে গিয়েছেন দাদাজি। যার বাজনা ভাল লাগত, তাকে সানাই দিয়ে দিতেন।’’
নাতিরাই বলছিলেন, বিসমিল্লার প্রয়াণের পর কয়েক বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার এই বাড়ি অধিগ্রহণ করে মেরামত করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু পরিবারের সদস্যেরা একমত হতে পারেননি এখনও। ফাকির রেজার কথায়, ‘‘অনেকে বলছে সরকারের হাতে তুলে দিতে। আবার অনেকে বলছে, আমরা নিজেই মেরামত করে নিই। সরকারকে কেন দিতে যাব? ফলে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এবার পরিবারের সকলে বসে কথা বলে একটা কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
ভারতরত্ন সুরসাধকের ব্যবহৃত একটা সানাই দেখতে পারি?
মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন বিসমিল্লার নাতিরা। তার পর নীচ থেকে নিয়ে আসেন একটা সানাই। বিসমিল্লার নাতি ঠোঁটে তুলে নেন সেটি। তার পর ফুঁ দেন। আঙুলের ধরা-ছাড়ায় শব্দ তৈরি হয়। সুর খেলতে থাকে নিঝুম দুপুরে। খানিকক্ষণ বাজিয়ে সানাই নামিয়ে রাখেন তিনি। বলেন, ‘‘আসলে আমার শরীরটা খারাপ। সানাই বাজাতে গেলে বুকে অনেক দম লাগে। আমার শ্বাসটা এখন কমজোরি আছে।’’
তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায় এক বালক। বিসমিল্লার নাতির পুত্রসন্তান। পাগলা সানাইয়ের চতুর্থ প্রজন্ম। চৌকির উপর বাবু হয়ে বসে বালক সানাই তুলে নেয় হাতে। মাথা নিচু করে ফুঁ দেয়। মিহি, চিকন আওয়াজ বেরিয়ে আসে। আচম্বিতে মনে পড়ে বিসমিল্লার নাতির কথা, ‘‘বালাজির মন্দির ওঁকে সিদ্ধি দিয়েছিল। ওখানে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেওয়াজ করেছেন। শেষ বয়সেও প্রতিদিন যেতেন।’’ মনে হয়, হিন্দু দেবতার মন্দিরে সিদ্ধিলাভ করেছেন এক মুসলিম সুরসাধক। যা মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই মুসলিমের পরিবার। মনে পড়ে, বিসমিল্লা মনে করতেন, তাঁর সানাই বাজানোর ওই দক্ষতা আসলে বাবা বিশ্বনাথের দান। কাশীর ঈশ্বরের প্রদত্ত ক্ষমতা। যে কারণে তিনি বিশেষ কাউকে শেখাননি তাঁর বিদ্যা। খুব বেশি ছাত্রও ছিল না তাঁর। কারণ, বিসমিল্লা জানতেন, ঈশ্বরের সঙ্গে নাড়ির আর সুরের যোগ না-থাকলে সাধনা হয় না।
সানাই-হাতে লাজুক বালককে আব্বা উৎসাহ দেন, ‘‘রুক কিঁউ গ্যয়ে? বাজাও।’’ তার পর পুত্রের সানাইয়ের সঙ্গে গলা মেলান সরগমের অনুরণনে। মুহূর্ত তৈরি হয়। পৃথিবীর প্রাচীনতম হিন্দু শহর বারাণসীর এক মুসলিম মহল্লা সরাই হারাহার বাতাসে কাঁপতে কাঁপতে ভেসে চলে সেই সুর। মনে হয়, ভোটের বারাণসীতে ঈশ্বরের সঙ্গে সুরের সুতোয় বাঁধা পড়ছে হিন্দু-মুসলিম।
বিসমিল্লা! আল্লাহর নামে। ঈশ্বরের নামে। (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy