বাংলাদেশি ও বিদেশিদের চিহ্নিত করার নির্দেশ যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন। —ফাইল চিত্র
এ বার কি উত্তরপ্রদেশেও এনআরসি? কোনও মৌখিক ঘোষণা নয়, বাংলাদেশি-সহ বিদেশিদের চিহ্নিত করার লিখিিত নির্দেশ দিল যোগী আদিত্যনাথ সরকারের প্রশাসন। রাজ্যের ডিজিপি ওই নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা’র জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিহ্নিতকরণের পর বিদেশিদের নিজের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও ওই নির্দেশে বলা হয়েছে।
গত মাসেই অসম নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষ। শেষ পর্যন্ত ফরেনার্স ট্রাইবুনাল এবং সুপ্রিম কোর্টে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারলে তাঁরা বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। এই নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হওয়ার পর তাকে সমর্থন করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রয়োজন হলে তাঁর রাজ্যেও যে এই ব্যবস্থা চালু করতে পারেন, সেটাও কার্যত স্পষ্টই বলেছিলেন যোগী। এ বার কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর সেই পথেই হাঁটল রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী নিজে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
ডিজির ওই নির্দেশে সব জেলার পুলিশ কর্তাদের সর্বত্র চিরুনি তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, বস্তি, অস্থায়ী আস্তানা, ভাড়াটে— সন্দেহ হলে যে কারও কাছেই পুলিশ নথি চাইতে পারে এবং সাধারণ মানুষ তা দেখাতে বাধ্য। নির্মাণ সংস্থা এবং ঠিকাদারদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, সব শ্রমিকের উপযুক্ত নাগরিকত্বের প্রমাণ হাতের কাছে রাখতে। সেখানে বাংলাদেশি বা অন্য কোনও দেশের নাগরিক হিসেবে প্রমাণ হলে তাঁদের আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে।
ভুয়ো নথি বা নাগরিকত্বের প্রমাণ খুঁজতে এবং প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে ডিজির নির্দেশে। কোনও সরকারি আধিকারিকের সহায়তায় নথি তৈরি হয়েছে, এমন প্রমাণ মিললে ওই আধিকারিককেও কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
আরও পড়ুন: রাজীবের কাছে ‘হার’ সব দিকেই, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিবিআই
আরও পডু়ন: ‘অব কি বার... ’ ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে, বললেন বিদেশমন্ত্রী।। মোদীকে কূটনীতি শেখান, কটাক্ষ রাহুলের
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, অসমে নাগরিকপঞ্জি তৈরি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এবং ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স-এর তত্ত্বাবধানে। সেখানে প্রতিটি নাগরিকের সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য নেওয়া হয়েছে। তার পর সেই সব নথি সরকারি নথির সঙ্গে মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চূড়ান্ত তালকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় চিহ্নিত করা হবে, তা স্পষ্ট নয়। সব নাগরিকের তথ্য যাচাই হবে কিনা, সে সব নিয়েও কোনও উচ্চবাচ্য নেই। শুধুমাত্র সন্দেহের বশেই কারও নথিপত্র চাওয়া এবং পরীক্ষা করে দেখা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
আবার চিহ্নিতদের ফেরত পাঠানোর কথাও বলেছে যোগীর প্রশাসন। ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সময় সাপেক্ষ এবং শীর্ষ আধিকারিকদের আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু একটি রাজ্য সরকারের প্রশাসন কী ভাবে দেশে ফেরত (পুশ ব্যাক) পাঠানোর কথা বলতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ বিদেশ মন্ত্রক ছাড়া এই প্রক্রিয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া এই প্রক্রিয়ার ফলে উগ্র প্রাদেশিকতাও উস্কে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy