চম্পই সোরেন। — ফাইল চিত্র।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিক্ষুব্ধ নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পই সোরেনকে সরাসরি এনডিএতে আমন্ত্রণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝির। শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে তিন সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন চম্পই। আর তার জেরে জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) প্রবীণ নেতা। তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে চলছে চর্চা। রবিবার চম্পই নিজেই তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের বিষয়ে তিনটি বিকল্পের কথা জানিয়েছেন। তার মধ্যে অবশ্য জেএমএমে থেকে যাওয়ার কোনও উল্লেখ নেই।
সমাজমাধ্যমে জিতনরাম একটি পোস্টে চম্পইকে ‘বাঘ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘‘চম্পই দাদা, আপনি বাঘ ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। এনডিএ পরিবারে আপনাকে স্বাগত।’’ উল্লেখ্য, সিংভূম তথা ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে ‘টাইগার’ নামে পরিচিত চম্পই। হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা বা হামের প্রধান জিতনরামের পোস্ট ঘিরে নতুন করে জল্পনা শুরু ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে।
জেএমএমে ‘অসম্মানিত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন খোদ চম্পই। রবিবার এক দীর্ঘ পোস্টে নিজের যন্ত্রণার কথা লিখেছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পোস্টের ছত্রে ছত্রে ছিল ‘অপমান এবং লাঞ্ছনা’র কথা। সেই পোস্টেই চম্পই নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ও জানান। তিনি তিনটি বিকল্পের কথা লিখেছিলেন। তার একটি হল, রাজনীতি থেকে অবসর। দ্বিতীয়, নিজে কোনও দল বা সংগঠন তৈরি করা। আর শেষটি হল, ‘নতুন পথে সঙ্গী’ পাওয়া গেলে, তাঁর সঙ্গেই বাকি পথটা হাঁটা। এই তৃতীয় বিকল্প নিয়েই যত আলোচনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, সরাসরি না বললেও চম্পই বিজেপির হাত ধরতে চান, সেই ইঙ্গিতই দিয়ে রাখলেন।
চম্পই যে হেমন্ত সোরেনের দলে আর থাকবেন না, রবিবার বিকেলের পর তা এক প্রকার স্পষ্ট। তার পরই জিতনরামের আহ্বান বিজেপি যোগের জল্পনা আরও বাড়িয়েছে। তবে চম্পই যদি নতুন দল বা সংগঠন তৈরি করেন, তবে ভবিষ্যতে সেই দল এনডিএ শিবিরে যোগ দিতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে জেএমএমের ছয় বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে যান চম্পই। জল্পনা ছড়ায়, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যই দিল্লি গিয়েছেন হেমন্ত সোরেনের দলের এই প্রবীণ নেতা। তবে চম্পই জানিয়েছিলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে’ই তাঁর এই দিল্লি সফর। তার পরই তাঁর ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘ পোস্ট।
গত ৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডে জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় হেমন্তকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতারির আগে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। হেমন্তের অনুপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হন চম্পই। পাঁচ মাস রাঁচীর বিরসা মুন্ডা জেলে বন্দি থাকার পরে গত ২৮ জুন ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান হেমন্ত। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবারও মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তিনি। পদ ছাড়তে হয় চম্পইকে। তবে তাঁকে রেখে দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায়। শোনা যাচ্ছিল, মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারানোর পর দলের মধ্যেও নাকি কোণঠাসা চম্পই। হেমন্তের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সিদ্ধান্তকে চম্পই ভাল ভাবে নেননি, এমন খবরও ছড়ায়। তার পরই দলবদলের জল্পনা শুরু হয় চম্পইকে নিয়ে। রবিবার বিকেলের পর তা অন্য খাতে বইতে শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy