—ফাইল চিত্র
কলেজ ক্যান্টিনে মুড়ি-ঘুগনির পাশে কি আগামী দিনে জায়গা করে নেবে রাজস্থানি ডাল-বাটি? রাজস্থানে কোনও নবীনবরণে কি বাজবে রবীন্দ্রসঙ্গীত? তেমন সম্ভাবনাই উস্কে দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বিবৃতি।
সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি আদান-প্রদানের লক্ষ্যে দেশের প্রত্যেক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘ক্লাব’ তৈরির নির্দেশিকা পাঠিয়েছে ইউজিসি। দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অধীনে থাকা প্রতিটি কলেজে ওই ক্লাব গড়তে হবে। প্রাথমিক ভাবে কোন রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে কোন প্রান্তের যোগসূত্র তৈরি করতে হবে, তারও প্রাথমিক তালিকা জানিয়ে দিয়েছে তারা। তাতে পশ্চিমঙ্গের সঙ্গে নাম রাজস্থানের। ঠিক যে ভাবে জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে তামিলনাড়ুকে। গুজরাতের সঙ্গী ছত্তীসগঢ়। দিল্লির সঙ্গে আদান-প্রদান হবে সিকিম ও অসমের। তবে তালিকা অনেক আগে থেকেই তৈরি হয়ে ছিল। তাই আলাদা করে নাম নেই নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের।
বৃহস্পতিবার নির্দেশিকা প্রকাশ করে ইউজিসি-র দাবি, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের যে চিরকালীন ধারা ভারতের ইতিহাসে রয়েছে, তাকে আরও মজবুত করতেই এই উদ্যোগ। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় একতা দিবস পালনের অনুষ্ঠানে এই পারস্পরিক লেনদেন বাড়ানোয় জোর দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর স্লোগান বার বারই তোলে মোদী সরকার। প্রস্তাবিত ক্লাবের নামও ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত ক্লাব’ই। যাদের মূল কাজ হবে ‘সঙ্গী’ রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভাষা, সাহিত্য, খাবার, উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সিনেমা, পর্যটন ইত্যাদি নিজেদের এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা। ক্লাবের কাজ যাতে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়, তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন-কে দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে। আর কলেজে সেই দায় অধ্যক্ষের কাঁধে।
অনেকে বলছেন, ভারত এমন এক দেশ, যেখানে গড়ে প্রতি ২০০-২৫০ কিলোমিটারে বদলে যায় ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক। এ হেন দেশে আদান-প্রদানের ভাবনা অবশ্যই স্বাগত। কিন্তু এর মাধ্যমে ঘুরপথে হিন্দি ভাষা তথা গোবলয়ের সংস্কৃতিকে সারা দেশে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে না তো? পারস্পরিক দেওয়া-নেওয়ার অছিলায় নির্দিষ্ট ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস ঘুরপথে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হবে কি না, সে বিষয়ে সংশয়ী তাঁরা।
অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, দু’মাস আগেই জার্মানিতে কেরলের খাদ্যোৎসব থেকে হিন্দুত্ববাদীদের আপত্তিতে বাদ দিতে হয়েছিল গোমাংসের পদ। এ দেশেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে আমিষ পদকে কেন্দ্র করে অনেক বারই বিতর্ক বাধিয়েছে গেরুয়া শিবির। ক’দিন আগে উত্তরপ্রদেশের স্কুলে ইকবালের কবিতা প্রার্থনায় কেন গাওয়ানো হচ্ছে বলে আপত্তি তুলেছিল বিশ্বহিন্দু পরিষদ। এ বার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আদানপ্রদানের বার্তায় সেই আবহ বদলাবে কি, উঠছে সে প্রশ্নই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy