গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মঙ্গলবার দেবেন্দ্র ফডণবীসের ইস্তফার পরেই স্পষ্ট হয়ে যায়, মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ছে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট। সেই সরকারেই সাংবিধানিক সিলমোহর পড়ছে আগামিকাল বৃহস্পতিবার। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন উদ্ধব ঠাকরে।
২৪ অক্টোবর থেকে ২৮ নভেম্বর। ফল ঘোষণার পর থেকে গত এক মাস চার দিনে বহু নাটক, বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী মরাঠা ভূমি। বৃহস্পিতবার তার শেষ অঙ্ক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে শিবাজি পার্কে। এই ময়দানেই শপথ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে এবং অন্য মন্ত্রীরা। শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারী। এই মহা-শপথের মঞ্চে কারা থাকবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।
আগামিকাল সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিটে মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে উদ্ধবের ওই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও আমন্ত্রিত। তবে জোট সূত্রে খবর, আমন্ত্রণ পেয়েও থাকছেন না সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধী। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ও আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
ফিফটি-ফিফটি সংঘাতে যখন বিজেপি-শিবসেনার প্রায় তিন দশকের জোট ভেঙে যায়, তখনই বিরোধী জোটের সরকার গঠনের সম্ভাবনা জোরদার হয়। কিন্তু এই জোটের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল শিবসেনা-কংগ্রেসের সমঝোতা। আদর্শগত ভাবে প্রায় বিপরীত মেরুর দুই দলের এক ছাতার তলায় আসার প্রশ্নে কংগ্রেস সভানেত্রীর সবুজ সঙ্কেত ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই মঙ্গলবার জোটের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমেই সনিয়া গাঁধীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন উদ্ধব ঠাকরে।
আরও পড়ুন: আমি হতভম্ব! বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যাশিত আচরণ করলেন না: পর পর টুইটে বিস্ফোরক রাজ্যপাল
কিন্তু সেই সনিয়া গাঁধীই থাকছেন না শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। আবার রাহুল গাঁধী গোটা এই পর্বে নিজেকে মহারাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্নই রেখেছিলেন। সংসদে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ মন্তব্য করা ছাড়া আর কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির মুখে। কংগ্রেস নেতৃত্ব সূত্রে খবর, তিনিও থাকছেন না শপথে। যদিও কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল জানিয়েছেন, সনিয়া-রাহুল দু’জনেই আমন্ত্রণের চিঠি পেয়েছেন।
কিন্তু বিজেপিকে লজ্জার মুখে ফেলে এত বড় জয়ের পরেও কেন গরহাজির থাকছেন সনিয়া-রাহুল? দলের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি কেউ। রাজনৈতিক মহলের একাংশ অবশ্য জল্পনা উস্কে দিয়েছেন, শিবসেনার সঙ্গে সহাবস্থানের অস্বস্তি এড়াতেই কি শপথের মঞ্চে যাচ্ছেন না সনিয়া-রাহুল?
অন্য আমন্ত্রিতদের মধ্যে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা রয়েছেন। এ ছাড়া আমন্ত্রণপত্র কলকাতা ও দিল্লিতেও। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু, ডিএমকে নেতা এম কে স্টালিনকেও পাঠানো হয়েছে আমন্ত্রণপত্র। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অরবিন্দ কেজরীবাল বা চন্দ্রবাবু শপথে থাকছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: সরছে পায়ের তলার মাটি, কপালে ভাঁজ মোদী-শাহের
গত বছর কর্নাটকেও মহারাষ্ট্রের মতো প্রায় একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। শপথ নিয়েও সংখ্যা জোগাড় করতে না পেরে ইস্তফা দিতে হয়েছিল বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে। পরে কংগ্রেস-জেডিএস সরকার গঠন করে। মুখ্যমন্ত্রী হন এইচ ডি কুমারস্বামী। কুমারস্বামীর সেই শপথগ্রহণে বিরোধী জোটের প্রায় সব রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব হাজির ছিলেন। কিন্তু সেই সরকার বেশি দিন টেকেনি। ফের সে রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। সেই ঘটনার কথা মাথায় রেখেও অনেকে যাচ্ছেন না শপথে। রয়েছে এমন জল্পনাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy