উবর চালক শ্রীকান্তের আগের এবং (ডান দিকে) পরের ছবি।
জীবনে যাতে আরও সুখ এবং স্বাচ্ছন্দ্য আসে সেই বাসনা নিয়েই ঈশ্বরের দরবারে গিয়েছিলেন। কিন্তু তা যে জীবনে দুঃস্বপ্ন বয়ে নিয়ে আসবে ভাবতে পারেনি শ্রীকান্ত। হারিয়ে গিয়েছে সুখ, উবে গিয়েছে স্বাচ্ছন্দ্যও। শুধু তাই নয়, টানাটানি প়়ড়ে গিয়েছে তাঁর পরিচয় নিয়েও!
হায়দরাবাদের বাসিন্দা শ্রীকান্ত। পেশায় উবর চালক। ২০১৯ থেকে ট্যাক্সি চালাচ্ছেন। চালক হিসেবে তাঁর রেটিংও যথেষ্ট ভাল। উবরের ৪ তারকাযুক্ত চালক তিনি। ভাল উপার্জনও করছিলেন এই সুবাদে। কিন্তু তাতেও যেন তাঁর সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যে টান পড়ছিল। আরও পাওয়ার বাসনায় ছুটে গিয়েছিলেন তিরুপতি-র দেবস্থানে। ঈশ্বরের কাছে নিজের চুল নিবেদন করে এসেছিলেন। কিন্তু এই কাজটাই যে তাঁর জীবনে বিড়ম্বনা হয়ে ফিরে আসবে ভাবতে পারেননি।
শ্রীকান্ত এখন কাজ হারিয়ে বেকার। অভাব নেমে এসেছে সংসারে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। এ ভাবে কাজ হারিয়ে দিশাহারা শ্রীকান্ত গত এক মাস ধরে উবরের অফিসে ছুটে বেড়াচ্ছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই কৌতুহল জাগতে পারে যে, শুধুমাত্র মাথা মুড়িয়ে ফেলার জন্য চাকরি খোয়া যেতে পারে কারও! শ্রীকান্তের সুখ হারিয়ে যাওয়ার পিছনে কিন্তু এই কারণটাই দায়ী। কারণ তিনি যখন উবর-এর চালক হিসেবে নিজের নথিভুক্তি করিয়েছিলেন, সে সময় তাঁর মাথায় চুল ছিল। তাঁর সেই ছবিটাই উবর-এর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সার্ভার চিনে রেখেছে। মাথা মোড়ানোর পর স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর মুখের চেহারা বদলে গিয়েছে। ফলে উবর-এর সার্ভার তাঁকে চিনতে পারছে না। বিভিন্ন কোণ থেকে নিজস্বী তুলে তাঁর মুখ চিহ্নিতকরণের জন্যও পাঠান তিনি। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। বার বার ‘ভুল’ ছবি দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত উবর-এর সার্ভার শ্রীকান্তর অ্যাকাউন্টই বাতিল করে দিয়েছে।
বেগতিক দেখে তিনি ছুটে গিয়েছেন উবর-এর অফিসে। সেখানে গিয়ে নিজের আগের ছবি এবং বর্তমান ছবি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। অভিযোগ, উবর এ ব্যাপারে কোনও আগ্রহই দেখায়নি। ফলে আপাতত আর স্বাচ্ছন্দ্য নয়, কাজের খোঁজে দরবার করে বেড়াচ্ছেন শ্রীকান্ত।
এ প্রসঙ্গে উবর ইন্ডিয়া জানিয়েছে, লগ ইন করতে না পেরে শ্রীকান্ত উবর পার্টনার সেবা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। তবে যে হেতু তিনি সংস্থার গাইডলাইন লঙ্ঘন করেছেন, তাই উবর অ্যাপ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার কারণেই এ কাজ করা হয়েছে বলে দাবি উবর-এর। সংস্থা আরও জানিয়েছে, ফেসিয়াল রিকগনিশন-এ সাধারণত কোনও ব্যক্তির মুখের সামান্য পরিবর্তনে কোনও সমস্যা হয় না। যেমন লম্বা চুল থেকে ছোট চুল। কিন্তু একেবারে মাথা মুড়িয়ে ফেলায় মুখের পুরো চেহারা বদলে যায়। ফলে প্রযুক্তিগত সমস্যা তৈরি হয়। শ্রীকান্তের ক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy