Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Minister Slams Twitter Ex CEO Jack Dorsey

কৃষক আন্দোলনের সময় ‘টুইটার বন্ধ করার হুমকি’! প্রাক্তন কর্তার অভিযোগ ওড়াল ভারত সরকার

সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন টুইটার কর্তা জ্যাক ডরসি দাবি করেছেন, তাঁর জমানায় কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক বার টুইটারকে ভারতে বন্ধ করে দেওয়া, কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালানোর ‘হুমকি’ দিয়েছিল।

File image of PM Narendra Modi and Twitter

টুইটারের প্রাক্তন কর্তার সাক্ষাৎকারের পর কড়া প্রতিক্রিয়া মোদীর মন্ত্রীর। — ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ১৩:৪৩
Share: Save:

টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসির সাক্ষাৎকারের পর তোলপাড় পড়ে গিয়েছে দেশে। সোমবার একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন প্রাক্তন টুইটার কর্তা জ্যাক। সেখানে নির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাবে জ্যাক দাবি করেন, তিনি যখন টুইটারে ছিলেন, তখন ভারত সরকারের উপর থেকে নিয়মিত চাপ আসত। কৃষক আন্দোলনের সময় যে সমস্ত হ্যান্ডল থেকে ওই আন্দোলনের খবর প্রকাশিত হচ্ছিল, সেই অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করার জন্য চাপ আসত। এ ছাড়া সরকারের সমালোচনাকারী সাংবাদিকদেরও অ্যাকাউন্ট বন্ধের জন্য চাপ আসত। যদিও প্রাক্তন টুইটার কর্তার সমস্ত অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর।

‘ব্রেকিং পয়েন্ট’ নামে ওই ইউটিউব চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে জ্যাককে নির্দিষ্ট প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘কোনও বিদেশি সরকার কি তাঁর উপর কোনও ভাবে চাপ সৃষ্টি করত?’ জবাবে, গত বছরই টুইটারের পরিচালন পর্ষদ থেকে ইস্তফা দেওয়া জ্যাক বলেন, ‘‘উদাহরণ হিসাবে ভারতের কথা ধরুন। ভারত এমন একটি দেশ, যে দেশ থেকে অনেক অনুরোধ পেতাম, কৃষক আন্দোলন নিয়ে, সরকারের সমালোচক সাংবাদিকদের নিয়ে... এবং এর পরিণতি হিসাবে আমাদের হুমকি দেওয়া হত, ‘আমরা ভারতে টুইটার বন্ধ করে দেব’, ‘আমরা তোমাদের কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালাব’, ‘যদি নিয়ম না মানো, তাহলে আমরা বন্ধ করে দেব’... এটাই ভারত, একটি গণতান্ত্রিক দেশ!’’

ডরসির কোনও অভিযোগকেই মান্যতা দেয়নি ভারত সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর ডরসির অভিযোগের জবাব দিতে বেছে নিয়েছেন সেই টুইটারকেই! ডরসির মন্তব্যকে ‘আদ্যন্ত মিথ্যা’ বলে অভিহিত করে লম্বা টুইট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘‘জ্যাক ডরসি আদ্যন্ত মিথ্যা বলছেন। সম্ভবত টুইটারের ইতিহাসের গোলমেলে পর্বটিকে মুছে দেওয়ার প্রচেষ্টা।’’ এখানেই থামেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব। তাঁর দাবি, টুইটার বার বার ভারতীয় আইন ভেঙেছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ডরসি জমানার ভারতীয় আইনের সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে সমস্যা ছিল।’’

২০২১ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেন। এই তিন আইনের প্রত্যাহার চেয়ে দীর্ঘদিন দিল্লির রাজপথে ধর্না দিয়েছিলেন কৃষকরা। বস্তুত, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে এই একই দাবি নিয়ে দিল্লি সীমানায় পথ অবরুদ্ধ করে ধর্না আন্দোলনে বসেছিলেন কৃষকরা। আন্দোলন শুরুর এক বছরের মাথায় প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিতর্কিত আইন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করে কৃষকদের আন্দোলন শেষ করে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেয় মোদী সরকার। এ বার সেই আন্দোলন নিয়েই বিস্ফোরক দাবি করলেন প্রাক্তন টুইটার কর্তা ডরসি।

প্রত্যাশিত ভাবেই ডরসির সাক্ষাৎকার অস্ত্র তুলে দিয়েছে বিরোধীদের হাতে। কংগ্রেস থেকে শুরু করে তৃণমূল— সকলেই শাসক বিজেপিকে বিঁধতে শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে কৃষক আন্দোলন চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকার টুইটারকে প্রায় ১২০০ অ্যাকাউন্ট নামিয়ে দেওয়া বা বন্ধ করে দিতে বলেছিল। কেন্দ্রের দাবি ছিল, ওই হ্যান্ডলগুলির সঙ্গে খলিস্তান আন্দোলনের সম্পর্ক রয়েছে। তারও আগে কেন্দ্র টুইটারকে ২৫০-এর বেশি অ্যাকাউন্ট নামিয়ে দিতে বলেছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Twitter Jack Dorsey Central Govt Farmers Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE