রাজভবন ঘেরাও অভিযানের কর্মসূচি নিল শাসক ফ্রন্ট এলডিএফ। ফাইল চিত্র।
সংঘাত চলছিলই। রাজ্যপালের সঙ্গে এ বার বাম সরকার তথা শাসক দল সিপিএমের বিরোধ আরও চরমে উঠল কেরলে। এক দিকে, রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান ৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদ ছাড়ার নির্দেশ দিলেন। অন্য দিকে, রাজভবন ঘেরাও অভিযানের কর্মসূচি নিল শাসক ফ্রন্ট এলডিএফ!
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং কিছু ক্ষেত্রে অধ্যাপক নিয়োগ ঘিরে রাজ্যপালের সঙ্গে কেরলের রাজ্য সরকারের বিবাদ চলছে কয়েক মাস ধরে। আগের চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে রাজ্যপাল আরিফ এ বার ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরাসরি পদ ছাড়তে বলেছেন। রাজভবনে আজ, সোমবার সকালের মধ্যে তাঁদের পদত্যাগ-পত্র পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতর ওই উপাচার্যদের পাল্টা পরামর্শ দিয়েছে পদত্যাগ না করার। রাজ্যপাল তথা আচার্য বিষয়টাকে কত দূর নিয়ে যেতে পারেন, তা দেখতে চায় পিনারাই বিজয়নের সরকার। বাংলায় জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন যা ঘটছিল, তার সঙ্গে কেরলের ঘটনাপ্রবাহের মিল থাকলেও উপাচার্যদের পদত্যাগ করার জন্য আচার্য তথা রাজ্যপালের এমন নির্দেশ কার্যত নজিরবিহীন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুনর্নিয়োগের সিদ্ধান্ত সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে গিয়েছে। সেই রায়কে সামনে রেখে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোর দাবি তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীরা। কেরলে রাজ্যপাল আরিফ প্রায় একই যুক্তিকে হাতিয়ার করেছেন! এ পি জে আব্দুল কালাম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম এস রাজশ্রীর নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সার্চ কমিটি ঠিকমতো গঠন করা হয়নি, প্যানেলে একাধিক নামও দেওয়া হয়নি, এই সব অভিযোগেই মান্যতা দিয়ে ওই রায় দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। রাজ্যপাল আরিফের অভিযোগ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও একই বেনিয়ম হয়েছে। তিনি যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন, তার মধ্যে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই উপাচার্যও আছেন। তা ছাড়া, কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভি পি মাধবন পিল্লাইয়ের সোমবারই অবসর নেওয়ার কথা। সুতরাং, তার বাইরে পদত্যাগের জন্য থাকলেন ৭ জন উপাচার্য।
রাজ্যপালের কর্মকাণ্ডকে সম্প্রতি আক্রমণ করেছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী কে এন বালগোপাল এবং শিল্পমন্ত্রী পি রাজীব। ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল তখন বলেন, রাজ্যপালের ‘খুশি বা সন্তোষে’র কথা জানিয়েই মন্ত্রীদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। রাজ্যপাল চাইলে ‘খুশি’ প্রত্যাহার করে নিতে পারেন! এ সবের প্রেক্ষিতেই রবিবার এলডিএফ বৈঠকে বসে ঠিক করেছে, আগামী ১৫ নভেম্বর রাজভবন ঘিরে বড় জমায়েত করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন সেখানে যাবেন কি না, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তার আগে রাজ্যপালের আচরণের প্রতিবাদে জেলায় জেলায় কনভেনশন চলবে। তিরুঅনন্তপুরমে রাজ্য স্তরের কনভেনশন আগামী ২ নভেম্বর, যেখানে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। তোলা হচ্ছে আচার্য পদ বিলোপের দাবিও। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দনের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে আরএসএসের পরিকল্পনা কার্যকর করার লক্ষ্যে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন। এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে যত দূর সম্ভব বৃহত্তর ঐক্য এবং সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’’ সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক কানম রাজেন্দ্রনের দাবি, ‘‘রাজভবন ঘেরাওয়ের দিন রাজ্যপাল বুঝতে পারবেন, তাঁর মর্জি মানুষ মানেন না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy