Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Tripura Assembly Election 2023

‘ওরাও তো বিজেপির বিরোধী, সমঝোতা হতেই পারে’! গণনার আগেই তিপ্রাকে বার্তা কংগ্রেসের

তিপ্রা মথার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান প্রদ্যোতবিক্রম মাণিক্য দেববর্মন একদা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে চমকপ্রদ ফল করেছিল কংগ্রেস।

Tripura Assembly Election 2023: Congress may join hands with Tipra Motha

বীরজিৎ সিংহ, প্রদ্যোৎ বিক্রম দেববর্মন এবং সুদীপ রায় বর্মন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ২২:০৯
Share: Save:

রাত পোহালেই ভোটগণনা। তার আগে ত্রিপুরায় বাম-কংগ্রেস জোটের ‘প্রসারণের’ ইঙ্গিত দিলেন ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহ। বুধবার রাতে আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানালেন, ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হলে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে জনজাতি দল তিপ্রা মথার সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন তাঁরা।

বীরজিৎ বলেন, ‘‘আমি আশাবাদী, বাম-কংগ্রেস জোটই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। তবে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হলে অন্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির সঙ্গে আমরা সমঝোতা করতে প্রস্তুত।’’ সেই ‘অন্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি’ কি তিপ্রা? বীরজিতের জবাব, ‘‘ওরাও তো বিজেপির বিরোধী। প্রয়োজনে ভোট পরবর্তী সমঝোতা হতে পারে।’’ আর তৃণমূল? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য, ‘‘ত্রিপুরায় ওরা কোনও ফ্যাক্টর নয়।’’

বিদায়ী বিধানসভার একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ক তথা রাজধানী আগরতলার কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মণ অবশ্য বাম-কংগ্রেস জোটের ক্ষমতা দখলের বিষয়ে আরও আশাবাদী। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় এ বার পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। আর সেই প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট বাম-কংগ্রেস জোটকে ৩১-এ (৬০ সদস্যের বিধানসভায় গরিষ্ঠতার ‘জাদু সংখ্যা’) পৌঁছে দেবে।’’

এ বারের ভোটে সহযোগী আইপিএফটি-কে ৫টি আসন ছেড়ে ৫৫টিতে লড়ছে বিজেপি। অন্য দিকে, কংগ্রেসকে ১৩ এবং নির্দলকে ১টি আসন ছেড়ে বামেরা ৪৬টিতে প্রার্থী দিয়েছে। তৃণমূল ২৮ এবং তিপ্রা ৪২টি কেন্দ্রে আলাদা ভাবে লড়ছে। ত্রিপুরার ২০টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে স্বশাসিত জনজাতি পরিষদের (এডিসি) এলাকায়। সেখানে বিজেপি এবং তার সহযোগী জনজাতি দল আইপিএফটির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ত্রিপুরার রাজ পরিবারের বংশধর প্রদ্যোতবিক্রম মাণিক্য দেববর্মণের তিপ্রা ইন্ডিজেনাস প্রোগ্রেসিভ রিজিওনাল অ্যালায়েন্স বা তিপ্রা মথা। ২০২১ সালের গোড়ায় জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষার দাবিতে এই দল গড়েছিলেন প্রদ্যোৎ। তার আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে ছিলেন তিনি। রাহুল গান্ধীর একদা ঘনিষ্ঠ প্রদ্যোতের নেতৃত্বে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে চমকপ্রদ সাফল্য পেয়েছিল কংগ্রেস।

ওই লোকসভা ভোটে ত্রিপুরার দু’টি কেন্দ্রেই জিতেছিল বিজেপি। পেয়েছিল ৪৯ শতাংশ ভোট। ২৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে দু’টি আসনেই দ্বিতীয় হয়েছিল কংগ্রেস। ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল বামেরা। রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৫১টিতে প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি। ৯টিতে কংগ্রেস। অথচ, তার আগের বছর বিধানসভা ভোটে একটি আসনেও ‘হাত’ চিহ্নের প্রার্থীরা জিততে পারেননি। ২০১৮ পর্যন্ত ত্রিপুরায় ক্ষমতায় থাকা বামেরা ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের হিসাবে রাজ্যের একটি বিধানসভা আসনেও এগিয়ে ছিল না।

তিপ্রা গড়ার পরেও সাফল্যের ধারা বজায় রেখেছেন প্রদ্যোৎ। ২০২১ সালে ‘ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনমাস ডিসট্রিক্ট কাউন্সিল’ (এডিসি) নির্বাচনে তিপ্রা মথা ১৮টি আসনে জয়লাভ করে। বাকি ৯টি আসন মিলিত ভাবে পায় বিজেপি এবং তাদের জোট সঙ্গী জনজাতি আইপিএফটি। জনজাতিদের বুবাগ্রা (রাজা) প্রদ্যোৎ ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন, ‘‘এটাই আমার শেষ ভোট। আপনাদের কাছে আর ভোট চাইতে আসব না।’’ নিজে প্রার্থী না হলেও তাঁর এই ঘোষণা জনজাতি ভাবাবেগে প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এ বার ভোট প্রচারের সময় প্রদ্যোত একাধিক বার দাবি করেছেন, কোনও শিবিরই গরিষ্ঠতা পাবে না। তিপ্রা ‘কিং মেকার’ হতে পারে বলেও কয়েকটি বুথফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস। গণনার আগে কি সেই অঙ্কেই ভরসা রাখছে কংগ্রেস?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy