Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
BJP

TMC strategy: জহাঙ্গিরপুরীর পর তৃণমূলের প্রতিনিধিদল যোগীর উত্তরপ্রদেশে, বিজেপির পাল্টা কৌশল?

চাপ বাড়াতে বাংলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো এবং তৃণমূলের পাল্টা কৌশল ক্রমেই উত্তেজক জায়গায় পৌঁছচ্ছে।

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২২ ০৯:৩৯
Share: Save:

জাতীয় স্তরে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে বগটুই এবং হাঁসখালিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল বিজেপি। এ বার কি তারই পাল্টা কৌশল নিচ্ছে তৃণমূল? এই প্রশ্ন উঠছে, কারণ দিল্লির সংঘর্ষ বিধ্বস্ত জহাঙ্গিরপুরীর পর, এ বার রাজ্যসভা সাংসদ দোলা সেনের নেতৃত্বে ‘সত্য অনুসন্ধানে’ উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বিজেপি যেমন তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াতে বাংলায় কোনও ঘটনা ঘটলে ‘সত্য অনুসন্ধানে’ বাইরের রাজ্যের নেতানেত্রীদের দল পাঠাচ্ছে, তারই পাল্টা হিসেবে বিজেপি শাসিত রাজ্যে অঘটন ঘটলে পৌঁছে যাচ্ছে তৃণমূলের দলও।

অনেকেই একে তৃণমূলের ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার নীতি’ হিসেবে অভিহিত করছেন। সম্প্রতি রাজধানী দিল্লির জহাঙ্গিরপুরীতে রামনবমীর মিছিল এবং তৎপরবর্তী হিংসার ঘটনা শিরোনামে উঠে এসেছে। সেই ঘটনায় উঠেছে দিল্লি পুলিশের ব্যর্থতার অভিযোগও। ঘটনাচক্রে দিল্লি পুলিশ সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে কাজ করে। এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম অমিত শাহ। সংঘর্ষের ঘটনার পরই দলের মহিলা সাংসদদের অকুস্থলে পৌঁছনোর নির্দেশ দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের নেতৃত্বে তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়, অপরূপা পোদ্দার, সাজদা আহমেদ, প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা ঘোষ ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’-এর সদস্য হিসেবে জহাঙ্গিরপুরী গিয়েছিলেন। গত শুক্রবার পাঁচ মহিলা নেত্রীর প্রতিনিধি দল এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত সি-ব্লকের মূল ঘটনাস্থলে না গিয়েই ফিরতে হয় কাকলিদের। তার ঠিক দু’দিনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে যাওয়ার কথা ঘোষণা করল তৃণমূল। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশেও বিজেপির শাসন। মুখ্যমন্ত্রীর নাম আদিত্যনাথ।

তৃণমূলের প্রতিনিধিদলে থাকছেন রাজ্যসভা তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন, বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, তৃণমূল নেতা সাকেত গোখলে, জ্যোৎস্না মাণ্ডি ও উত্তরপ্রদেশের তৃণমূল নেতা ললিতেশ ত্রিপাঠী। এখন প্রশ্ন হল, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজেও কি অকুস্থলে পৌঁছতে পারবেন তৃণমূল নেতানেত্রীরা?

ইতিমধ্যেই এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁরা বলছেন, বিজেপির প্রতিনিধি দল নির্বিঘ্নে, পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বাংলার ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পেরেছে। কিন্তু যখনই বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনও ঘটনা ঘটছে, নিপীড়িতদের সঙ্গে দেখা করতে সেই পুলিশই বাধা দিচ্ছে তৃণমূলকে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই প্রশ্ন তোলার মধ্যে দিয়ে তৃণমূল আসলে দু’টি বিষয়কে তুলে ধরতে চাইছে। প্রথমত, বাংলায় যে ঘটনাই ঘটে থাকুক না কেন, দল হিসেবে তৃণমূলের তার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। বাংলায় বিরোধীদের গণতান্ত্রিক পরিসর নিরাপদ। যার ফলশ্রুতি, বিনা বাধায় বিজেপির ভিন্ রাজ্যের প্রতিনিধি দলের ঘটনাস্থল পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া। দ্বিতীয় কারণটি আদ্যন্ত রাজনৈতিক। পরোক্ষে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া।

তৃণমূলের সাম্প্রতিক রাজনীতির গতিপ্রকৃতি বলছে, বিজেপির মোকাবিলায় তারা পাল্টা গেরুয়া শিবিরের অস্ত্রই প্রয়োগ করছে। এবং সাফল্যও পাচ্ছে। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ, একুশের নীলবা়ড়ির লড়াই। যেখানে বিজেপির চড়া দাগের হিন্দু জাতীয়তাবাদের রাজনীতিকে নির্বিষ করে দিতে পেরেছিল তৃণমূল, পাল্টা বাঙালি জাতীয়তাবাদ দিয়ে। ফলও মিলেছিল হাতেনাতে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এ বারও রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর অস্ত্রকে ভোঁতা করতে তৃণমূল বিজেপি শাসিত প্রদেশে নিজেদের প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে। সব মিলিয়ে চাপ বাড়াতে বাংলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো এবং তৃণমূলের পাল্টা কৌশল ক্রমেই উত্তেজক জায়গায় পৌঁছচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy