সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
মনঃক্ষুণ্ণ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করেছেন নেহাত দায়ে না পড়লে যোগ দেবেন না কেন্দ্রীয় খাদ্য, গণবণ্টন এবং ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। এক সময় এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি, আর এখন কমিটির এক জন সাধারণ সদস্যমাত্র। এই যোগ না-দেওয়া হবে তাঁর নীরব প্রতিবাদ।
সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল হয়েও তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানের পদ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়া ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও, সরাসরি সরকারের কাছে এ নিয়ে দরবার করেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এ বারের শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন মাত্র। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর কেন্দ্রীয় খাদ্য, গণবণ্টন এবং ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকার পর তাঁকে সরিয়ে দিয়ে ওই কমিটিরই এক জন সাধারণ সদস্য করে রাখাকে (তাঁর জায়গায় চেয়ারম্যান করা হয়েছে বাংলার বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়কে) মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না এই প্রবীণ নেতা।
সুদীপ আজ বলেন, “ওই কমিটি পরিচালনা করতাম অত্যন্ত গুরুত্ব গিয়ে, সকলকে সঙ্গে নিয়ে। স্টাডি-টুর-এ বাইরে যাওয়ার আগে সকলের মত নেওয়া হত। তাড়াহুড়ো করে রিপোর্ট তৈরি না করে, দলমত নির্বিশেষে সর্বসম্মতিতে পৌঁছনো হত। সর্বদা সক্রিয় থাকতাম এই কমিটির কাজে। এখন আমার পক্ষে সেখানে গিয়ে চুপ করে বসে থাকা সম্ভব নয়।” রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কমিটির চেয়ারম্যানের পদে তাঁর রাজ্যের বিরোধী দলের অভিজ্ঞতায় ও বয়সে অনেক ছোট এক সাংসকে মেনে নেওয়া সুদীপের পক্ষে কষ্টকর হচ্ছে।
কলকাতা (উত্তর)-এর সাংসদ সুদীপের বক্তব্য, “দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলকে এ ভাবে ব্রাত্য করে রাখা সাংবিধানিক গণতন্ত্রের পক্ষে খুবই খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকল। ভিক্ষা চাই না বলে এই নিয়ে সাড়াশব্দ করিনি। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী নিজে থেকে বিষয়টির উত্থাপন করে আমার নাম উল্লেখ করেছেন। তখন ঘটনার মৃদু প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ কথাও সেদিন বলেছি, সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী ফোন করে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে তৃণমূলের কাউকে সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানের পদ দেওয়া হবে না।”
ঘটনা হল, রাজ্যের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান ঐতিহ্যগত ভাবে বিরোধী দল থেকেই দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার কৌশলে এই পদে বসিয়েছে মুকুল রায়কে, যিনি খাতায়-কলমে বিজেপির বিধায়ক হলেও, রাজনৈতিক ভাবে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এর ফলে ক্ষুব্ধ বিজেপি। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ আরও ৯টি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ বিজেপি-কে দেওয়ার প্রস্তাব করা হলেও সবকটিই প্রত্যাখ্যান করে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল। বাংলার শাসকদলের দাবি, সেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই সংসদে কোনও কমিটির চেয়ারম্যানের পদও দেওয়া হয়নি তৃণমূলকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy