তৃণমূলের লক্ষ্য গোয়া। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেস দশ বছর পরে ফের গোয়ার বিধানসভা ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলীয় সূত্রের খবর, শীর্ষ নেতৃত্ব সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও লোকসভার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে গোয়ায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁরা গোয়ায় গিয়েছেন। তাঁরা ফিরে দলকে রিপোর্ট দেওয়ার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০২২-এর গোড়াতেই উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, মণিপুরের সঙ্গে গোয়াতেও বিধানসভা নির্বাচন। অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ) গোয়ায় লড়বে বলে ঘোষণা করেছে। এ বার আপ-এর সঙ্গে তৃণমূলও ছোট্ট রাজ্যে প্রার্থী দিলে জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী জোটের অবস্থান কী দাঁড়াবে, এবং তাতে বিজেপিরই সুবিধা হয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের গণ্ডি ছেড়ে বেরিয়ে ত্রিপুরা, মেঘালয়-সহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যের পরে এ বার গোয়াতেও তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদেরই ভাঙিয়ে নেওয়ার কৌশল নিচ্ছে।
২০১২-তে তৃণমূল গোয়ার বিধানসভা ভোটে লড়েছিল। কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উইলফ্রেড ডি’সুজার নেতৃত্বে তৃণমূল সে বার ৪০ আসনের বিধানসভায় ২০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ফের তৃণমূলের গোয়ায় ভোটে লড়তে উদ্যোগী হওয়ার সংবাদ দলীয় মুখপত্রেও প্রকাশিত হয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, এ বার তৃণমূল নেতারা গোয়ায় গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের বিধায়ক লুইজ়িনহো ফেলেরিওর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। ফেলেরিও এ কথা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু তিনি বেশ কিছু দিন ধরেই বিক্ষুব্ধ বলে কংগ্রেস নেতারাও জানেন। তাঁকে প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান করা হলেও তিনি খুশি নন। কংগ্রেস নেতাদের দাবি, ডেরেক-প্রসূনের আগে তৃণমূলের হয়ে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার লোকেরাও গোয়ার পরিস্থিতি যাচাই করে এসেছেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, আপ ও তৃণমূল আখেরে বিজেপিরই সুবিধা করে দিতে চাইছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘আপ ও তৃণমূলের লক্ষ্য যেখানেই বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের সরাসরি লড়াই, সেখানে গিয়ে সব তালগোল পাকিয়ে ঘেঁটে দাও। বিরোধী ঐক্য যত মজবুত হবে ততই বিজেপির বিপদ বাড়বে। কিন্তু বিরোধী ঐক্য মজবুত করার বদলে আপ ও তৃণমূল বিজেপির সুপারি নিয়ে মাঠে নেমেছে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ হল, গোয়ায় বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাবন্ত তাঁর রাজ্যে আপ ও তৃণমূলের ভোটে লড়ার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, সবাই গোয়ায় স্বাগত। সকলেই গোয়ায় আসতে পারে। কাউকে বাধা দেওয়া যায় না। ২০১৭-র বিধাসভা ভোটে বিজেপি বনাম কংগ্রেসের লড়াইতে ৪০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেসই বেশি আসন পেয়েছিল। কিন্তু বিজেপি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ে। আপ-তৃণমূলকে রাজ্যে স্বাগত জানাচ্ছেন গোয়ায় বিজেপি সভাপতি সদানন্দ শেট তানাভাড়ে-ও ।
তৃণমূল পঞ্জাবে লড়বে কি না, তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে। আপ-এর লোকসভা সাংসদ ও পঞ্জাবে দলের সভাপতি ভগবন্ত মান জেদ ধরেছেন, তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হবে। দল ক্ষমতায় এলে তাঁকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করা হবে বলে কথা দিলেও তিনি রাজি নন। ভগবন্ত গত কয়েক সপ্তাহ দলের সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন। ভগবন্তের সঙ্গে তৃণমূলের অনেকেরই সম্পর্ক মধুর। প্রথম বার লোকসভায় এসে সংসদে ভিডিয়ো তোলার অভিযোগে তাঁর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তৃণমূল তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল। ভগবন্ত আপ ছাড়লে তিনি তৃণমূলের দিকে ঝুঁকতে পারেন বলে ধারণা অনেকের। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণের পরে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর উপরে ক্ষুব্ধ ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ কী করেন, সে দিকেও তৃণমূলের নজর রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy