—প্রতীকী ছবি।
অষ্টাদশ লোকসভা শুরুর সময়েও বোঝা যাচ্ছিল না, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের কক্ষ সমন্বয় কতটা মসৃণ হবে। কারণ, নির্বাচনের ফলাফলের পরে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের মধ্যেই তৃণমূলের ‘জিঞ্জার গোষ্ঠী’ গড়ার অতিসক্রিয়তা নজরে এসেছে সবারই। রাহুল গান্ধীর প্রতি তৃণমূলের ‘অ্যালার্জি’ কতটা বহাল থাকবে, তা নিয়েও উদ্বেগ ছিল। তবে প্রথম অধিবেশন শেষে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ডেপুটি স্পিকার পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাব অনুযায়ী কংগ্রেস ফৈজাবাদের সাংসদ অবধেশ প্রসাদকে মেনে নেওয়ায় বিরোধী কক্ষ সমন্বয়ের জট কেটে যায়। গোটা অধিবেশনে প্রতিটি বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে মত বিনিময় করেছি আমরা।”
পাশাপাশি, ফোনে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে মমতার (ফোনটি করেছিলেন রাহুলই) ১৫ মিনিটের কথোপকথন ‘অ্যান্টি অ্যালার্জিক’ হিসেবে কাজ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও কংগ্রেস এবং তৃণমূলের ধারাবাহিক সমন্বয়ের সম্ভাবনা যে যথেষ্ট পলকা, এমনটাও মনে করে রাজনৈতিক মহল। যে কোনও সময়ে তাতে ফাটল ধরতে পারে। এই অংশের মতে, তৃণমূল নেতৃত্ব রাজনৈতিক ভাবে কখনওই চান না, রাহুল গান্ধী বিরোধী জোটের সর্বময় নেতা হয়ে উঠুন। এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “ইন্ডিয়া-র প্রত্যেকটি দলই কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও না কোনও রাজ্যে জোট গড়েছে। তৃণমূল একা লড়েছে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এবং ২৯টি আসন এনেছে। ফলে আমরা কংগ্রেসের বশংবদ হব না, এটাই স্বাভাবিক।”
তবে আপাতত কক্ষ সমন্বয়ে এই মনোভাবের আঁচ তেমন দৃশ্যমান হয়নি। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, লোকসভা অধিবেশনের প্রতিটি দিন কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে এবং এসপি-র মধ্যে সমন্বয় চাপে ফেলেছে মোদী বাহিনীকে। সুদীপ বলেন, “লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ভূমিকাকে তৃণমূলের প্রত্যেক সাংসদ প্রশংসা করেছেন। তাঁর পাশে থেকেছেন। তাঁকে যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বিজেপির মন্ত্রীরা বাধা দিয়েছেন, আমাদের সাংসদেরা রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে বিরোধিতায় সরব হয়েছেন।”
সুদীপ এ-ও জানান, অসুস্থ হাজি নুরুল ইসলামকে যখন শপথগ্রহণের জন্য হুইলচেয়ারে লোকসভা কক্ষে আনা হয়, রাহুল গিয়ে খোঁজখবর নেন। এর পরে হালকা সুরে বলেন, “তৃণমূলের এমন কোনও নতুন মহিলা সাংসদ বোধহয় নেই, যিনি রাহুলের সঙ্গে সেলফি তোলেননি!” প্রসঙ্গত, লোকসভায় তাঁর প্রথম বক্তৃতায় সুদীপ বলেছেন, “এত দিন পরে লোকসভার বিরোধী নেতা পাওয়া গিয়েছে, এটা অত্যন্ত আনন্দের।”
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার দিন সনিয়া গান্ধীর পাশেই বসেছিলেন সুদীপ। উভয়ে কুশল বিনিময় করেন। রাহুল এসে করমর্দন করেন। সুদীপের কথায়, “রাহুল বলল, আপনার ওয়েস্ট কোট খুবই সুন্দর। বললাম, তুমি তো সুদর্শন।” রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এগুলি কিছুটা সৌজন্য এবং দেখনদারি হলেও, কিছুটা উষ্ণতাও টের পাওয়া যাচ্ছে। দু’পক্ষের মধ্যে একসময়ে এই মৌখিক সৌজন্যটুকুও ছিল না। মমতা নিজেই ভোটের ফলের পরে ফোনে বার্তা পাঠিয়েছিলেন রাহুলকে, তিনি জবাব দেননি। কিন্তু বুধবার যখন সনিয়া গান্ধীকে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী, তৃণমূল-সহ সমস্ত বিরোধী দল কক্ষত্যাগ করেছে। আগে স্পিকার নির্বাচনেও কংগ্রেস প্রার্থী কে সুরেশকে নিঃশর্তে সমর্থন করেছিল তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy