শ্রমিক স্পেশাল নিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল ও রাহুল গাঁধীর তরজা। -ফাইল চিত্র
কখনও করোনাভাইরাস, কখনও চিন— প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও ইস্যুতে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে চলেছেন রাহুল গাঁধী। শনিবার সেই তালিকায় যোগ হয়েছিল রেল মন্ত্রক। রাহুল বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের দুর্দিনেও লাভ করছে রেল। সেই আক্রমণের পাল্টা হিসেবে কড়া জবাব দিলেন রেলমন্ত্রী। কংগ্রেস সাংসদকে উদ্দেশ্য করে পীযূষ গয়ালের পাল্টা তোপ, যাঁরা দেশকে লুঠ করেছেন, তাঁরাই ভর্তুকিকে লাভ হিসেবে দেখছেন।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শৄঙ্খল রুখতে ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন। কার্যকর হয়েছিল পরের দিন থেকে। তার জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছিলেন কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিক। তিন দফায় প্রায় দেড় মাস লকডাউন চলার পর এই সব পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু করেছিল রেল। সেই শ্রমিকদের ভাড়ার টাকা নিয়ে প্রথম দিকে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারগুলি পরিযায়ী শ্রমিকদের ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অতিমারির সময়েও কেন গরিব, নিম্নবিত্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছতে ভাড়া নিয়েছিল রেল, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী।
পরের দিনই তার জবাবে পাল্টা তোপ দাগলেন পীযূষ গয়াল। টুইটারে রেলমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা দেশকে লুঠ করেছেন, তাঁরাই ভর্তুকিকে লাভ বলে বর্ণনা করতে পারেন।’’ গয়াল যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘শ্রমিক স্পেশালের জন্য রাজ্য সরকারগুলির কাছ থেকে যে টাকা পাওয়া গিয়েছে, তার চেয়ে বেশি খরচ করেছে ভারতীয় রেল।’’
আরও পডু়ন: ‘বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তান', নাম করেই মন কি বাত-এ আক্রমণ মোদীর
যখন শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়, তখন প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল, শ্রমিকদেরই টিকিট কেটে ঘরে ফিরতে হবে। তবে এ নিয়ে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানায়। কেন কেন্দ্র হতদরিদ্র শ্রমিকদের ভাড়ার টাকা ভর্তুকি হিসেবে দেবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল। সেই সময়েই বিবৄতি দিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ঘোষণা করেছিলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ভাড়ার টাকা দেবে কংগ্রেস। যদিও পরে রাজ্য সরকারগুলি ভাড়ার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সনিয়ার ঘোষণা কার্যত তাৎপর্যহীন হয়ে যায়।
রাহুলের আক্রমণের জবাবে সনিয়ার সেই প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ টেনে এ দিন খোঁচা দিতেও ছাড়েননি গয়াল। তিনি বলেছেন, ‘‘মানুষ এখন প্রশ্ন করছেন, সনিয়া গাঁধী যে জনসাধারণের টিকিটের টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কী হল।’’
আরও পড়ুন: মৃত্যু ছাড়াল ৩২ হাজার, দেশে করোনা আক্রান্ত প্রায় ১৪ লক্ষ
একটি হিন্দি দৈনিকের একটি প্রতিবেদন ট্যাগ করে শনিবার রাহুল গাঁধী লিখেছিলেন, চারদিকে রোগের মেঘ, মানুষ বিপদে পড়েছেন। কিন্তু তার মধ্যেও এই জনবিরোধী সরকার লাভ করছে। বিপর্যয়কে মুনাফায় পরিণত করছে এবং আয় করেছ।’’ ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিক ট্রেন থেকেও রেল বিপুল আয় করেছে। রেলের আমদানি হয়েছে ৪২৮ কোটি টাকা।
बीमारी के ‘बादल’ छाए हैं, लोग मुसीबत में हैं, बेनिफ़िट ले सकते हैं - आपदा को मुनाफ़े में बदल कर कमा रही है ग़रीब विरोधी सरकार। pic.twitter.com/YSUsxIpSvC
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) July 25, 2020
যদিও সরকারের হিসেবে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালাতে খরচ হয়েছে ২১৪২ কোটি টাকা। আয় হয়েছে ৪২৯ কোটি টাকা। অজয় বসু নামে এক ব্যক্তি তথ্য জানার অধিকার আইনে রেলের থেকে জানতে চেয়েছিলেন লকডাউনের সময় রেলের কত আয় হয়েছে। সেই সূত্রেই জানা গিয়েছে ২৯ জুন পর্যন্ত রেল মোট ৪৬১৫টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালিয়েছে। তাতে আয় হয়েছে ৪২৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া ১৩টি স্পেশাল ট্রেন থেকে আরও এক কোটি টাকা পেয়েছে রেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy