বেওন্সি লইশরাম
সিজা হাসপাতালে দিনের অনেকটা সময় পিপিই কিটের মধ্যেই কেটে যায় বেওন্সির। সেখানকার আবাসিক চিকিৎসক বলে কথা। রাজ্যে নিত্যদিন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তাই কোভিড যোদ্ধাদের সামনের সারিতে থাকা চিকিৎসকদের ফুরসত নেই। দম ফেলতে পারেন না বেওন্সি লইশরামও। কিন্তু ক্লান্তি নয়, দিন শেষে অর্জন বুক ভরা গৌরব। কারণ, বেওন্সি প্রমাণ করে দিতে পেরেছেন, মণিপুরে রূপান্তরকামী বা রূপান্তরিতদের স্থান শুধুই বিউটি পার্লার নয়। অথচ এক সময় ছেলের রূপান্তরকামী চরিত্রের কথা জানতে পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বাবা।
মণিপুর তো বটেই সম্ভবত উত্তর-পূর্বেরও প্রথম রূপান্তিরত চিকিৎসক বেওন্সি। অবশ্য আগে নাম ছিল বেওন্স। বেওন্স অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বুঝতে পারে বাইরে থেকে ছেলে হলেও তাঁর ভিতরের সব কিছু মেয়েদের মতোই। কিন্তু সমাজ ও পরিবারের ভয়ে সেই পরিচয় লুকিয়ে বড় হতে থাকে সে। দেহের বহিরঙ্গেও পরিবর্তন আসছিল। ঢোলা পোশাকে তা লুকিয়ে রাখত। গরিব ঘরের সন্তান হলেও মেধাবী বেওন্স সুযোগ পায় রিমসে ডাক্তারি পড়ার। এমবিবিএসের তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত নিজের রূপান্তরকামী পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিল।
২০১৩ সালে বেওন্স মিস ট্রান্স কুইন নর্থ ইস্ট প্রতিযোগিতার আগে নিজের নাম বদলে বেওন্সি করে নেন। বাড়িতেও খুলে বলেন সব কথা। শুনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বাসচালক বাবা। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন ছিল অনেক দিন।
আরও পড়ুন: এক না একাধিক, ভ্যাকসিনের ক’টি ডোজ রুখতে পারে কোভিড?
ডাক্তারি পাশ করে প্রথমে দিল্লির বাবু জগজীবনরাম হাসপাতালে কাজ নেন তিনি। পরে যোগ দেন শিলংয়ের নেঘ্রিমসে। এখন ইম্ফলের সিজা হাসপাতালের আরএমও বেওন্সি।
২০১৬ সালে পুদুচেরিতে অস্ত্রোপচারের পরে রূপান্তরিত মানবী হিসেবে নিজের পরিচয় ঘোষণা করা বেওন্সি জানান, এক সময় সকলের তাচ্ছিল্য-বিদ্রূপ তাঁর সঙ্গী ছিল। নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। রূপান্তরিত হওয়ার পরে সগর্বে কর্মক্ষেত্রে বিচরণ করছেন তিনি। হাসপাতালে সকলের সহযোগিতাই পেয়েছেন। অনেক দিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বাড়ির সঙ্গেও ফের জুড়েছে সম্পর্ক। আপাতত সংসার গড়ার চিন্তা মাথায় নেই। কোভিডের সঙ্গে যুদ্ধেই সময় কাটছে তাঁর। বিশেষ করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা রূপান্তরকামী করোনা রোগীদের সহমর্মিতায় ভরিয়ে রেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মোদীর রবীন্দ্রভক্তির পিছনে কোন অঙ্ক, জল্পনা
দেশের মধ্যে মণিপুরই প্রথম রাজ্য যারা রূপান্তরকামী ও রূপান্তরিতদের জন্যে আলাদা করে, ৪০ শয্যার কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy