৬,০০০ বছরের পুরনো ইতিহাস থেকে হালফিলের নরেন্দ্র মোদীর জমানা। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আগত বিদেশি রাষ্ট্রনেতা এবং অভ্যাগতদের সামনে ভারতীয় গণতন্ত্রের মাহাত্ম্য তুলে ধরার উদ্দেশ্যে দীর্ঘ ইতিহাস সম্বলিত দু’টি পুস্তিকা ছাপিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ‘ভারত, দ্য মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ এবং ‘ইলেকশনস ইন ইন্ডিয়া’ শিরোনামের এই পুস্তিকা দু’টিতে সিন্ধু সভ্যতা, রামায়ণ-মহাভারত, মৌর্য সম্রাট অশোক, ছত্রপতি শিবাজি এমনকি, মোগল সম্রাট আকবরও ঠাঁই পেয়েছেন।
দু’টি পুস্তিকারই মূল উপজীব্য একই— গণতান্ত্রিক রীতি কয়েক সহস্রাব্দ ধরে ভারতের জনগণের একটি অংশ। ২৬ পাতার প্রথম পুস্তিকায় ভারতকে ‘গণতন্ত্রের জননী’ বলে চিত্রিত করা হয়েছে। তার উপরে রয়েছে সিন্ধু সভ্যতার কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ানো সেই পরিচিত নারীমূর্তির ছবি। জি২০ শীর্ষবৈঠকের অভ্যর্থনাস্থল ইন্ডিয়া ট্রেড প্রমোশন অর্গানাইজ়েশন (আইটিপিও)-এর কমপ্লেক্সের ভিতরেও ঘুরন্ত একটি মঞ্চের উপরে বোঞ্জের ওই প্রাচীন নারীমূর্তির প্রতিরূপ স্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ওই পুস্তিকায় ঋগ্বেদের স্তোত্র রয়েছে। বেদ-সহ নানা পুরনো গ্রন্থে ব্যবহৃত সভা, সমিতি বা সংসদের মতো শব্দ কী ভাবে বর্তমানে ভারতীয় সংসদকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, তা মোট ১৬টি ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। আর তার পরেই রয়েছে ‘রামায়ণের গণতন্ত্রের’ কথা। লেখা হয়েছে, রাজা দশরথ তাঁর মন্ত্রীদের অনুমোদন নিয়েই রামকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছিলেন।
আরও পড়ুন:
মহাভারতে শরশয্যা থেকে ভীষ্ম যে যুধিষ্ঠিরকে সুশাসনের পরামর্শ দিয়েছিলেন, আমজনতার কল্যাণের কথা বলেছিলেল, তা- ও গণতন্ত্রের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে দাবি করা হয়েছে ওই পুস্তিকায়। পুস্তিকার পরের অংশে ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের আগমন। গৌতম বুদ্ধের উপদেশে গণতন্ত্রের দিশানির্দেশের কথা তুলে ধরে দাবি করা হয়েছে, প্রাচীন ভারতেও গণতন্ত্র সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল। স্বাধীন ভারতে বিভিন্ন নির্বাচনের বিপুল সংখ্যক নাগরিকের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে দ্বিতীয় পুস্তিকাটিতে।
আরও পড়ুন:
আগামী ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দান এলাকার ভারত মণ্ডপম কনভেনশন সেন্টারে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আসর বসবে। জি২০ সভাস্থলে সংস্কৃতি মন্ত্রক যে প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছে, তার থিম হল ‘ভারত: দ্য মাদার অব ডেমোক্রেসি’। সেখানেও রয়েছে ভারতের সুপ্রাচীন গণতন্ত্রের ঐতিহ্যের নানা নিদর্শন।