প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমিত হওয়া সত্ত্বেও অনেকের শরীরে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বলে সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ওই সমীক্ষাটি জানাচ্ছে, কোভিড-১৯ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির অনুপস্থিতি সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের অন্যতম কারণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ সাড়ে তিন লক্ষের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। যত লোকের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তাঁদের প্রতি চার জনের মধ্যে এক জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮০০-র বেশি করোনা আক্রান্ত প্রাণ হারিয়েছেন।
কোভিড সংক্রমণের পরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এমন ব্যক্তিদের নিয়ে মার্চে একটি সমীক্ষা করেছিল কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)। সমীক্ষার ফলাফল বলছে, ১০,৪২৭ জনের উপরে পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে (সেরো পজ়িটিভ) ১০.১৪ শতাংশের দেহে। ১৭টি রাজ্য ও ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সিএসআইআর-এর কর্মীদের উপরে পরীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এর ফলে রীতিমতো উদ্বেগে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের একাংশ। তাঁদের মতে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে না-উঠলে শুধু প্রতিষেধক ও ওষুধের সাহায্যে কোভিডের মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির ‘সক্রিয়তার মেয়াদ’ নিয়েও উদ্বেগে রয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলি ৫-৬ মাসের মধ্যেই দুর্বল হয়ে গিয়ে কার্যকরিতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ফের সংক্রমিত হচ্ছেন।
সিএসআইআরের গবেষক শান্তনু সিংহ জানিয়েছেন, গত অক্টোবর থেকে করোনা সংক্রমণ
কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু ‘কার্যকরী অ্যান্টিবডি’র অভাবে মার্চে সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করে। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে বিভিন্ন রাজ্য আংশিক কার্ফু অথবা স্বল্প সময়ের লকডাউনের পথে হাঁটছে। আজ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্নাটক সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, আগামিকাল রাত ৯টা থেকে পরবর্তী ১৪ দিন (১০ মে পর্যন্ত) এই বিধিনিষেধ বলবৎ হচ্ছে।কর্নাটকও বিনামূল্যে প্রতিষেধক দেওয়ার কথা আজ ঘোষণা করেছে। নৈশ কার্ফুর মেয়াদ বাড়ছে (সন্ধে ৬টা থেকে ভোর ৫টা) পঞ্জাবেও। মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ জানান, শুক্রবার সন্ধে ৬টা থেকে সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউন বলবৎ হবে।
দিল্লি হাই কোর্ট আজ হাসপতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, ভর্তির আগে কোনও উপসর্গ থাকলে রোগীকে করোনা পরীক্ষার জন্য জোর করা যাবে না। যা রয়েছে আপ সরকারের নির্দেশিকায়। ওই নির্দেশিকা হাসপাতালগুলিকে সতর্ক ভাবে মনে চলতে বলেছে আদালত। সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে অন্তত হাজারখানেক। টুইটারে এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা’। তাঁকে সাধুবাদ দেন বহু নেটনাগরিক।
গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের পালঘরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এ বার গুজরাতের সুরাতে। গত কাল সেখানকার আয়ুষ হাসপাতালে আগুন লেগে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দশা এমনিতেই বেহাল। তার উপর দেখা দিয়েছে চিকিৎসক-সঙ্কট। এর জেরে নির্দেশিকা জারি করে সকল চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। যাঁরা কাজে যোগ দেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে অতিমারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন রাজ্যে হাসপাতালগুলিতে শয্যা সঙ্কট তীব্র, অক্সিজেনের সঙ্কটও প্রবল। হরিয়ানায় অক্সিজেন সঙ্কটে আজ সকালে চার রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy